আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এবার বোরকার বিরুদ্ধে খড়গহস্ত হলো ফ্রান্স : কতদুর যেতে পারবে তারা?

http://www.sonarbangladesh.com/blog/mdhasan/

বোরকার উপর এবার খড়গস্ত হলো গণতান্ত্রিক ও মুক্ত সংস্কৃতির দেশ হিসেবে পরিচিত ফ্রান্স। গত কয়েক মাস পর অবশেষে ফরাসী সরকার এমন একটি বিল অনুমোদন করেছে যা’ আইনে পরিণত হলে মুসলিম নারীরা বোরকা পরিধান করতে পারবে না এবং আইন অমান্য করলে তাকে শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। নতুন এই বিলে মুসলিম মহিলারা যদি বোরকা পরে অথবা মুখের বেশীর ভাগ অংশ আবৃত রাখে তাহলে তাকে ১৫০ ইউরো জরিমানা করা হবে। এই বিলে আরো বলা হয়েছে, কেউ যদি কোন মহিলাকে বোরকা পরতে বাধ্য করে তাহলে তাকে এক বছরের কারাদণ্ড এবং দেড় হাজার ইউরো জরিমানা করা হবে। কিছু দিন আগে ফরাসী পার্লামেন্টের একটি কমিটি বোরকা ব্যবহারের ওপর সীমাবদ্ধতা আরোপের লক্ষ্যে একটি আইন প্রণয়নের জন্য সরকারকে পরামর্শ দিয়েছিল।

আগামী জুলাই মাসে এই বিলটি ফরাসী পার্লামেন্টে উত্থাপনের কথা রয়েছে। ফরাসী প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সার্কোজির উদ্ধৃতি দিয়ে তার দফতর থেকে বলা হয়েছে, বোরকা নারীর মর্যাদাকে খাটো করে বলেই সরকার এই বিলটিকে অনুমোদন করেছে। পাশ্চাত্য সভ্যতার লালনভূমি হিসাবে খ্যাত ফ্রান্স স্বাধীনতা, জীবন-যাপনের পদ্ধতি নির্বাচনের অধিকার দেয়ার ক্ষেত্রে নিজেকে অগ্রগণ্য বলে মনে করে। এগুলো মানবাধিকার হিসাবে গণ্য। কিন্তু সার্কোজি সরকার মানবাধিকার রক্ষার কথা বলে মানবাধিকার লঙ্ঘন করে চলেছে।

ফ্রান্সে বসবাসরত ৫০ লক্ষ মুসলমানের মধ্যে প্রায় অর্ধেকই হচ্ছে নারী। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, প্রায় ১ হাজার ৯০০ জন মহিলা হিজাব বা বোরকা ব্যবহার করে যা অধিকাংশ মুসলিম দেশে একটি সাধারণ বিষয় হিসাবে গণ্য। এ অবস্থায় বর্তমানে ইউরোপে যেভাবে হিজাবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে তাতে তাদের অন্য কোন লক্ষ্য রয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন। পশ্চিমা দেশগুলোতে বসবাসরত অনেক মুসলমান এবং মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো ফ্রান্স ও বেলজিয়ামে বোরকার ওপর সীমাবদ্ধা আরোপের ব্যাপারে শঙ্কিত। তাদের দৃষ্টিতে এই পদক্ষেপ পশ্চিমা দেশগুলোতে সংখ্যালঘু মুসলমানদের ওপর চাপ সৃষ্টি এবং তাদেরকে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকে পরিণত করার প্রক্রিয়া শুরু করতে পারে।

কেননা দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকরা অন্যদের মত সমান সামাজিক সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারে না। ধর্মীয় স্বাধীনতার অংশ হিসাবে সব ধর্মের অনুসারিরাই তাদের ইবাদত কেন্দ্র নির্মাণের ক্ষেত্রে স্বাধীন। কিন্তু সুইজারল্যান্ডের মুসলমানদেরকে তাদের মসজিদের একটা অংশ ভেঙ্গে ফেলতে বাধ্য করা হয়েছে। এমনকি বৃটেন, ফ্রান্সের মত ইউরোপীয় দেশগুলোর মসজিদের ইমামদেরকে সরকারী কর্মকর্তা কিংবা গীর্জার কর্মকর্তাদের দ্বারা প্রশিক্ষণ নিতে বাধ্য করা হয়েছে। অথচ পাশ্চাত্যের সেকুলার ব্যবস্থা অনুযায়ী ধর্মীয় ব্যবস্থাপনায় সরকারের হস্তক্ষেপ নিষিদ্ধ।

কিন্তু পশ্চিমা সরকারগুলো ধর্মীয় ব্যবস্থাপনায় হস্তক্ষেপ করে বিশেষ করে মুসলমানদেরকে চাপের মুখে রাখার চেষ্টা করছে। নাগরিক অধিকারের ব্যাপারে পশ্চিমাদের দ্বিমুখী আচরণ একদিকে যেমন কোন পক্ষের জন্যই মঙ্গলজনক হবে না এবং অন্যদিকে উগ্রতা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার পাশাপাশি ইউরোপীয় সমাজের ঐক্য ও নিরাপত্তাহীনতাও হুমকির মুখে পড়বে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.