আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কুরআন শরীফ এবং হাদীছ শরীফ-এর অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা ফরয-ওয়াজিব ।



কুরআন শরীফ-এর বহু আয়াত এবং হাদীছ শরীফ-এর বহু বর্ণনা মতে, ’৭১-এর রাজাকার, আল বাদর তথা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা ফরয-ওয়াজিব বলে অকাট্যভাবে সাব্যস্ত হয়। যেমন- মহান আল্লাহ পাক তিনি সূরা বাক্বারার ১৭৮ ও ১৭৯ নম্বর আয়াত শরীফ-এ ইরশাদ করেন, “হে ঈমানদারগণ! তোমাদের প্রতি নিহতদের ব্যাপারে কিসাস গ্রহণ করা বিধিবদ্ধ করা হয়েছে। দাস দাসের বদলায়, স্বাধীন ব্যক্তি স্বাধীন ব্যক্তির বদলায়, নারী নারীর বদলায়। অতঃপর কাউকে যদি তার ভাইয়ের তরফ থেকে কিছুটা মাফ করে দেয়া হয় তবে প্রচলিত নিয়মের অনুসরণ করবে এবং ভালভাবে তাকে তা প্রদান করতে হবে। এটি তোমাদের রবের পক্ষ থেকে সহজ এবং বিশেষ অনুগ্রহ।

তারপরও যে ব্যক্তি বাড়াবাড়ি করে, তার জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক আযাব। হে বুদ্ধিমান! কিসাসের মধ্যে তোমাদের জন্য জীবন রয়েছে, যাতে তোমরা সাবধান হতে পারো। ” মহান আল্লাহ পাক তিনি অন্যত্র ইরশাদ করেন, “আমি এ কিতাবে তাদের প্রতি লিখে দিয়েছি যে, প্রাণের বিনিময়ে প্রাণ, চোখের বিনিময়ে চোখ, নাকের বিনিময়ে নাক, কানের বিনিময়ে কান, দাঁতের বিনিময়ে দাঁত এবং জখমসমূহের বিনিময়ে সমান জখম। অতঃপর যে ক্ষতিগ্রস্তদের বিনিময় প্রদান করে, সে গুনাহ থেকে পবিত্র হয়ে যায়। আল্লাহ পাক যা নাযিল করেছেন, সেই অনুযায়ী যারা ফায়সালা করে না, তারাই জালিম।

” (সূরা মায়িদা: আয়াত শরীফ ৪৫) হাদীছ শরীফ-এ বিদায় হজ্জের খুতবায় আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, “অতএব, এরপর থেকে যে কেউ কোন ব্যক্তিকে হত্যা করবে, তখন নিহত ব্যক্তির অভিভাবকদের দুটির মধ্যে যে কোন একটির ইখতিয়ার থাকবে। যদি তারা হত্যাকারী হতে কিসাস নিতে চায় তাহলে কিসাসস্বরূপ তাকে হত্যা করা হবে। আর যদি দিয়াত গ্রহণ করতে চায় তবে তাও করতে পারবে। ” (তিরমিযী শরীফ) সউদী ওহাবী সরকার যদি সত্যিকার মুসলমান সরকারই হতো তাহলে সে কখনই যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষমা করার জন্য বাংলাদেশকে বলতো না বরং বিচার করার জন্য তাগিদ দিতো। এর দ্বারা সউদী সরকারের আসল পরিচয়ই প্রস্ফুটিত হয়েছে।

অতএব, প্রমাণিত হল যে, সউদী সরকার মুসলমানদের নয় বরং ইহুদী-নাছারাদের অনুসারী। ১৯৮১ সালে জাতিসংঘের মানবাধিকার ঘোষণায় বলা হয়েছে, ‘মানব ইতিহাসে স্বল্পতম সময়ে সবচেয়ে বেশি মানুষ নিহত হয়েছে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের গণহত্যায়। দৈনিক গড়ে ৬০০০ থেকে ১২০০০ মানুষকে তখন হত্যা করা হয়। প্রতিদিন যদি ৬০০০ মানুষকে হত্যা করা হয় তাহলে নিহতদের সংখ্যা হয় ১৫,৮৪,০০০ জন। আর ১২০০০ মানুষ হত্যা করলে হয় ৩১,৬৮,০০০ জন।

এই গণহত্যা পাক বাহিনীর পক্ষে সম্ভব হয়েছে শুধু রাজাকারদের সহযোগিতার দ্বারাই। আর এই গণহত্যা, লুণ্ঠন দ্বারা রাজাকার, আল-বাদররা চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। হক্কুল ইবাদ নষ্ট করেছে। যার হক্ব নষ্ট করা হয়েছে সেই বান্দা যতক্ষণ পর্যন্ত ক্ষমা না করে আল্লাহ পাক ততক্ষণ পর্যন্ত ক্ষমা করেন না। বাংলাদেশ সরকারের সাধ্য নেই রাজাকারদের ক্ষমা করার।

কারণ ’৭১-এ নিহতদের স্বজনরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে সর্বদাই সোচ্চার। তারা কখনোই এদের ক্ষমা করেনি। হাদীছ শরীফ-এ হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, “কিয়ামতের দিন মানুষের মধ্যে সর্বপ্রথম যে মুকাদ্দমার ফায়সালা হবে তা হবে রক্তপাত (হত্যা) সম্পর্কিত। ” হক্কুল ইবাদ যে কত গুরুত্বপূর্ণ উপরোক্ত হাদীছ শরীফই তার প্রমাণ। অতএব, বাংলাদেশ সরকারের জন্য ফরয-ওয়াজিব হচ্ছে- দেশী-বিদেশী অপশক্তি এবং বিশেষ করে সউদী সরকারের চাপের নিকট নতিস্বীকার না করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা এবং জনগণকে দেয়া ওয়াদা পালন করা।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।