আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভারতবর্ষের উৎপত্তি ও প্রাণের অভু্দয়ের কাল

© এই ব্লগের সকল পোষ্ট,ছবি,থিম প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে কোথাও বিনা অনুমতিতে প্রকাশ করা নিষেধ ।

পৃথিবীর আজকের এই গঠন অনেক প্রাচীন,প্রায় ৪৬০০০ লক্ষ বছর আগেকার। পৃথিবীর উপরিতলে সবচেয়ে প্রাচীন শিলার বয়স হলো ৩৯০০০ লক্ষ বছর,এ তথ্য আমাদের জানিয়েছে তেজষ্ক্রিয়তা। কাজেই,একেবারে প্রথমযুগের সমুদ্র-শৈবাল আর ব্যাকটেরিয়ার অবয়বে যখন সবেমাত্র প্রাণের ঘুম ভেঙেছিল,সেই ‘ভূতাত্বিক কাল’-এ আর্কিয়ান বা আদি যুগের(৪০০০০ থেকে ২৫০০০ লক্ষ বছর আগেকার) বাসিন্দা ছিল ওরা। একটি তত্ত্বানুসন্ধান,এ পৃথিবী সেকালে এমনভাবে আকারে বেড়ে গিয়েছিল যে তার আজকের ব্যাস,আদিতে যা ছিলো তার তুলনায় প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ দীর্ঘ হয়ে যায়।

এর অর্থ,৪০০০০ লক্ষ বছর ধরে পৃথিবীর উপরিভাগের ক্ষেত্রফল এমনি প্রশস্ত থেকে প্রশস্ত তর হয়েছে যে এ গ্রহে এসেছে প্রাণ। আজ আমরা পৃথিবীর মানচিত্রের দিকে তাকালে দেখি মহাদেশ গুলো একে অন্য থেকে অনেক দূরে,কিন্তু তাদের উপকূলীয় সীমানা থেকে অনুমান করে নিই যে এরা পরস্পর এক সাথে ছিল। তবে আমাদের এ অনুমান ভুল নয়,কারন,বিজ্ঞানীরা দেখেছেন এই সব মহাদেশের প্রত্যেকটি শিলায় প্রত্ন-চৌম্বকত্বের বিন্যাসে যে সাদৃশ্য দেখা যায়,তা কেবল সম্ভব তাদের এক সাথে থাকার ফলে। ‘মহাদেশীয় সঞ্চরণ’ তত্বানুযায়ী, আজকের ভারতবর্ষ দক্ষিণ গোলার্ধের ‘গন্ডোয়ানা ভূমি’(Gondwana Land) নামে এক বড় মহাদেশের অন্তর্ভুক্ত ছিল। ভারত,অস্ট্রেলিয়া,কুমেরু,অফ্রিকা এবং দক্ষিণ আমেরিকাকে নিয়ে গড়া গন্ডোয়ানাভূম(মধ্য ভারতবর্ষের গন্ডোয়ানা শিলার নামে এই নাম)।

জুরাসিক যুগের(১৪৪০ লক্ষ বছর আগে) শেষে এই মহাদেশ বিচ্ছিন্ন হওয়া শুরু করলো। ইয়োসিন(Eocine)কালের(৫৮০ থেকে ৩৭০ লক্ষ বছর) কোন এক সময় যে খণ্ডটি ভারতবর্ষের আকার ধারণ করেছে,সেটি চলে যেত শুরু করলো দক্ষিণে এবং মিলিত হলো ইউরেশিয় মহাদেশে(বর্তমান ইউরোপ ও এশিয়ার সিংহভাগ নিয়ে গঠিত)। গন্ডোয়ানা নিয়ে একটি ভিডিও: আমরা গন্ডোয়ানা শিলায় প্রাণের অস্তিত্ব দেখতে পাই ৩২০০ থেকে ২৪৬০ লক্ষ বছর পূর্বে কার্বোনিফেরাস(Carboniferous)কালে। এখানে নিম্ন ক্রেটাসিয়াস(Cretaceous) কাল শেষ হবার আগেই ডাইনোসর ও অতিকায় সরীসৃপদের বিচরণ শুরু হয়। হিমালয় পর্বতমালায় এবং লবণাক্ত অঞ্চলে,সামদ্রিক প্রাণের জীবাশ্মবাহী শিলাখন্ড ক্যামব্রিয়ান(Cambrian)কালের(৫৭০০ লক্ষ বছর পূর্বের সময়কাল)সাক্ষর বহন করে।

এতে বোঝা যায় সামুদ্রিক পলি থেকেই শিলাগুলোর বিকাশ এবং আজ যেখানে হিমালয় পর্বতমালা কোন এককালে সেখানে ছিল উত্তাল সমুদ্র। Mesozoic যুগের (৬৫০ লক্ষ বছর পূর্বে) সামুদ্রিক জীবাশ্মের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তাছাড়া ও ২১৩০-১৪৪০ সময় অবধি জুরাসিক যুগের সামুদ্রিক জীবাশ্ম পাওয়া যায় রাজস্হানে। বিশেষত ইয়োসিন কালে মাথা তুলে দাঁড়াতে শুরু করলো হিমালয় এবং তার এই ক্রম বর্ধমান বিকাশ বজায় থাকে মায়োসিন কাল পর্যন্ত। ঐ একই সময় কালে শিবালিকের নীচে নিরবচ্ছিন্নভাবে এত পলির স্তূপ জমছিল যে,প্লেস্টোসিন কালের মধ্যে বিশাল টেথিস সাগর,সেটি ভরাট হয়ে গেল আর গড়ে উঠল সিন্ধু-গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্রের সুবিশাল পলি-অববাহিকা।


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.