আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রামদা মানে যদি ছাত্রলীগ হয়, পাইপগান মানে যদি দল হয়, ক্ষুর মানে যদি শিবির হয় তাইলে কী কলম মানে বুদ্ধিজীবি।

কতো কী করার আছে বাকি..................

অস্ত্র দিয়া দল চেনানোর মিডিয়ার উদ্যোগটা বেশ ইন্টারেস্টিং লাগছে। অস্ত্র দিয়ে নাকি দল চেনা যায়। এইখানে দল মানে অবশ্যই রাজনৈতিক দল। যদিও কেউ এটা বলে নাই যে দল করে না এমন লোক অস্ত্র ব্যবহার করে না। কিন্তু অস্ত্র দিয়ে দল চিনতে গিয়া কোন বোকা লোক যদি ভুল কইরা বসে তাইলে দোষ কার।

দোষের প্রশ্নও অবশ্য আহাম্মকরাই তোলে। আমরা যখন স্কুলে থাকতাম তখন মাষ্টারদের কাছে নালিশ করতাম। একবার ঢিল মারামারি করতে গিয়া এক মাষ্টরের কপালে লাগলো। ঢিল শব্দটারে খেয়াল কইরেন। ঢিল কাদের অস্ত্র- জানতে ইচ্ছা করে।

তো যেই মাষ্টরের কপালে ঢিল লাগলো তিনি নালিশ জানাবেন কার কাছে। নিজেই নিজের বিচার করলেন। বিডিআর বিদ্রোহের বিচারের মত। যাগো নালিশ তাগোই সালিশ। এখন এই লীগ দলের সালিশ করতে বসছে কিছু লোক।

তাদের রায়ে অস্ত্র দিয়াই এখন এই দুই দলরে চিনতে হইবে। এই লীগ দল শিবিরের পোলাপানরা সন্ত্রাসী, এরা চাপাতি-পিস্তল-ক্ষুরের নিচে জিম্মি কইরা রাখছে দেশ জাতিরে। কিন্তু এখানে তাইলে রাজনীতিটা কোথায়। এরা তো আর রাজনীতি বিচ্ছিন্ন জাত না। সন্ত্রসীদের দল নাই এইটা ফেক কথা।

কিন্তু অস্ত্রের দল নাই, অস্ত্র নিয়া দলবাজীর এই বুদ্ধিবৃত্তিক আলোচনায় তাইলে রাজনীতি বুঝুম ক্যামনে। অস্ত্র নিয়া রাজনীতি করে যারা তাদের নিয়াই আবার রাজনীতি করে যারা তাদের নিয়া রাজনীতি করে কে। বুঝি না। অস্ত্র দিয়া দল চিনানির কারণটাই বুঝলাম না। ছবিতো আর কথা কয় না, ছবি রাজনীতিও করে না।

অথচ ছবি নিয়া কতোজন কতো রাজনীতির ক্ষেত ফসল ফলায়। ছাত্রলীগের হাতে পিস্তল আর দলের হাতে রামদা থাকলে কি এমন অদল বদল ঘটতো। শিবিরের কতো পোলা হাতে কোরআন শরিফ নিয়া ঘুরে। তাতে কি হইছে। দেশ জাতির কোন উন্নতিটা সাধিত হইতো যদি এদের কোন দলই অস্ত্র দিয়া না, খালি হাতে মানুষ মারতো।

ধর্ষণের যে অস্ত্র তা সব পুরুষেরই থাকে। না কি ভুল বললাম। পোলাপানের হাতে অস্ত্র উইঠা আসবার কারণটা কি। বাজার-পণ্য ইত্যকার বিষয়াদিকে দায়ী করিয়া যে যাই ফালাক, লাভের গরু গোয়াল ছাড়া। রাজনীতি যতো বিমূর্ত আর প্রতীকি হয় ততোই সুবিধা।

নইলে বুদ্ধিজীবিদের ভাতের থালায় ঝোল ঘন হয় না। এই পাশের দেশ ইন্ডিয়া, নেপাল সেখানে অস্ত্র বিষয়ে এতো কুন্ঠার প্রকাশ নাই। তার মানে এই না যে অস্ত্র এভেলেইবল হোক। তার মানে এই যে অস্ত্র না অস্ত্র হাতের লোকটাও না, অস্ত্রের যোগান দাতারাই আড়ালে থাইকা যায় বারবার। এবং সত্য এটাই যে এই সব যোগান দাতাদের দল নাই।

তারাতো আর ডিজুস সংস্কৃতির মানুষ না। তাদের রাজনীতি আর ব্যবসাই ডিজুস সংস্কৃতি বানায়। এরা হইতেছে আসল ধোঁকাবাজ। এরা ওইসব পোলাপানরে ধোঁকা দিয়া হাতে অস্ত্র ধরায়া দেয় আর এদের প্রতিপক্ষ হিসেবে বুদ্ধিজীবিতারে দাঁড় করায়। এই চক্রে গণেশ উল্টে যায়, উল্টানো গণেশরে নিয়া ভক্তি সমালোচনা যাই হোক তা কেবলই এক হয়রানি।

ফলে এই আলাপের গূঢ় কথা আমার অবোধ্য ঠেকছে। অস্ত্র দিয়া দল চিনিবার চেষ্টার প্রতি আমার গভীর মনোযোগ অর্পণ করিলাম। এখন তাইলে আর আলাপ সালাপে না, হাতে হাতে চোখ ঘুরাইতে হইবে। ক্ষুর মানেই শিবির, পিন্তল মানেই ছাত্রদল। এতো সহজ একটা সমীকরণ এতোদিন পর উদ্ধার হইলো।

কী বিস্ময়। খুন্তি মানে নারী, টাকা মানে পুরুষ, ফুল মানে প্রেমিক বা প্রেমিকা, কলম মানে বুদ্ধিজীবি। কী দারুণ। বিকলাঙ্গের সামনে নিজেকে পূর্ণাঙ্গ প্রমাণ করিবার কী অপূর্ব প্রয়াস।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.