আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মনের কথা - ভাবের কথা নয় - ০০১

পড়তে পড়তে পাঠক ই রয়ে গেলাম

কান্না শুনে যদি বোঝা যেত মনের কথাটা কি, তাহলে বোধহয় বাচ্চাদের কান্না শোনাটা অত্যন্ত জরুরী ছিল। কথা শেখার আগ পর্যন্ত বাচ্চাদের কান্না এবং অন্যান্য অভিব্যক্তিই ভাব প্রকাশের একমাত্র মাধ্যম। শিশু মনস্তত্ত্ব নিয়ে পড়াশোনা না থাকায়, এ নিয়ে লেখার মতো ধৃষ্টতা দেখাতে চাই না। তবে এ ও সত্যি যে, যা নিয়ে লিখতে চাচ্ছি, সেটা নিয়ে ও কোন রকম পড়াশোনা নেই। তবে পড়ে গিয়ে শুনতে হবে এমন কোন কথা ও নেই।

দেখা-শোনা দিয়ে কাজ চলে এমন কিছুই বললে বোধহয় ধৃষ্টতা হবে না। < ১ > অফিসে বসে থেকেই আফজাল এস এম এস পেলো - " তুমি কি আসলেই ভুলে যাচ্ছো, নাকি ভুলে যাবার ভান করছো?" এ নিয়ে আজ বোধহয় ছয়বার, বোধহয় কারন - আজকাল আফজাল আর উৎসাহ পায় না। কোন না কোনভাবে এ সব বিরক্তির ই নামান্তর। কতোবার আর হিমীকা কে এ কথা বলে বোঝানো যায়? আসলে ই কি যায় না? আমি কি আসলে ই বোঝানোর চেষ্টা করেছি - এ নিয়ে ও আজকাল আফজাল ভাবে। ভাবনার আসলে কোন শেষ নেই।

একটা সময় ছিলো যখন বোঝানো যেতো, শোনার ধৈর্য্য ও ছিলো হিমীকার। এখন বোধহয় সে সবের ছিটে ফোটা ও নেই, বোধহয় এ জন্য যে, আফজাল আজকাল এ সব জানতে ও চায় না। বেচে থাকা কষ্টের, পয়সা উপার্জন কষ্টের, ভালোবাসায় সুখ আছে বলে জানতো, এখন দেখে তাতে ও কষ্ট। আসলে কি ভালোবাসা এখন ও আছে কিনা তা ও আফজাল জানে না। আজকাল একটা পার্টটাইম কাজ করে ও।

অফিস থেকে ফিরে একরাশ ক্লান্তি নিয়ে সময় কাটানো ছাড়া কিছুই করার কথা ভাবে না। কে দায়ী তা নিয়ে মাঝে মাঝে চিন্তা আসে, কিন্তু সেটাকে দূরে ঠেলে দিতে পারলে ওর মতো খুশী আর কেউ হয় না। যাক, আফজাল তাহলে খুশী ও হয় আজকাল। যা কিছু কথা তা শুধু তাপসের সাথেই। আজকাল তাপস ও হাল ছেড়ে দিয়েছে, কাকে কি বলে বোঝানো যাবে তার হিসেব এখন তাপস ও খুজে পায় না।

< ২ > বাসায় ফেরার পথে অমিতার আজকে কয়েকবার চোখ পড়লো ড্যাব ড্যাব করে চেয়ে থাকা ছেলেটার দিকে। ছেলে বলা বোধহয় ঠিক হলো না। ভদ্রলোক - হু, সেটাই বোধ হয় এর জন্য প্রযোজ্য। যদিও তা কেবল আক্ষরিক অর্থেই। জুল জুল এরকম চোখে তাকিয়ে থাকা কাউকে কি ভদ্রলোক বলা যায়? যাক, অমিতা ভাবছে - এ নিয়ে আর কোন ভাবনা নয়।

ইন্টার্নশীপ করার শুরুতে অমিতা কখনো ভাবে নি কর্মক্ষেত্র এতোটা নির্মম হতে পারে। যেদিকে তাকায়, শুধু অসম প্রতিযোগিতা, বাকা পথের অন্বেষন আর লিঙ্গ বিভাজন। মাঝে মাঝে হাফ ধরে যায়। অযাচিত ভাবে সহকর্মীরা আপন হবার চেষ্টা ও করে। তাও তো, এই ভদ্রলোক - ছেলে টা অফিসের অনেকের চেয়ে ভদ্র।

ক্লান্তিতে চোখ বুজে আসার প্রবনতা টের পেতেই দমে যায় অমিতা। এই ছেলের সামনে বাসের মধ্যে তন্দ্রা এসে গেলে লজ্জার শেষ। আসলে ছেলেদের কি আর কোন কাজ নেই এরকম চোরা চোখে চাওয়া ছাড়া। আর কিছু ভাববে না এ নিয়ে - এই ভেবেই অমিতা যে কখন ঘুমিয়ে গেলো টের ও পেলো না। < ৩ > বাদল অফিসে এসেই দেখে পরী টেবিলে মাথা রেখে ঘুম।

লোডশেডিং এর চাদরে মোড়া এই অফিসে এখন উষ্ণ দাবদাহ। কিন্তু তাতে কি এভাবে ঘুমানো যায়ে্য হয়ে যায়? কে জানে? আজকাল এটাও একটা ফ্যাশন বোধহয়। এর পরে আরো ঘন্টাখানেক ধরে বাদলের পর্যবেক্ষনে পরীর টেবিলে মাথা রেখে ঘুম ছাড়া আর কিছুই দেখা গেলো না। ডাকতে যাবে, এ সময় পরীই মাথা তুললো। উষ্ণ হাসির সাথে - কি খবর বাদল দা? শুনে বাদলের আর কিছুই বলার রইলো না।

বাদলের চোখে বোধহয় কঠিন জিজ্ঞাসাই ছিলো। পরীর স্বগতোক্তি - "বাদল দা, হঠাৎ শরীরটা খারাপ লাগছে"। চোখের কত্থার সাথে মুখের কথার যেনো কোথায় অমিল আছে, এই ভেবে বাদল সরে গেলো। পরীর দিকে বাদলের দুর্বলতা আজকের না, অনেক গুলো মাস ধরে ওরা একই সাথে একই অফিসে কাজ করছে। মুখ ফুটে বাদল এখনো বলার সুযোগ পায় নি।

কখন বলবে, কিভাবে বলবে এই ভাবতে ভাবতে ই সময় চলে যায়, বলা আর হয়ে ওঠে না। আর কতদিন - এখন বাদল তাই ভাবছে। এরা সবাই আগামী দিনগুলোতে, নিজের অজান্তেই আরো অনেকের সাথেই সম্মিলিত ভাবে আমার দেখা-শোনার গন্ডীর মধ্য চলে আসবে সেটা না ওরা ভেবেছে, না আমি। টুকরো টুকরো ভাবে এদের দেখে কখনো ভাবিনি, এরাই সবাই একত্রে জীবনের জটিল এক নাটকের অঙ্কে এভাবে জড়িয়ে যাবে। জটিল ভাবলেই জটিল, আসলে বোধহয় আমাদের সবার জীবনের এরকম দৃশ্যগুলো আলাদা আলাদা একেক এপিসোডের অংশবিশেষ।

দেখি পরে আর কি হয় .....................

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.