আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

খুদেদের জন্য গণিত কর্মশালা-৪

অলসদের দিয়ে কী আর হয়। আলসেমি ছাড়া!

খুদেদের আরো দুইটি ক্লাশ হয়ে গেল্। ৭ তারিখে সুব্রত পড়িয়েছে মৌলিক উতপাদক। ফলে মৌলিক সংখ্যার ব্যাপারটাও এসেছে। মৌলিক সংখ্যার আলোচনায় একটি বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ, ১ কী? ১ কী মৌলিক সংখ্যা না যৌগিক সংখ্যা? উত্তর হচ্ছে ১ মৌলিকও নয়, যৌগিকও নয়।

১ হচ্ছে ১। প্রশ্ন হলো ১ কেন মৌলিক নয়। কয়েকটা বিষয় দেখা যায়-- ১. সংজ্ঞানুসারে : মৌলিক সংখ্যা হলো ১ থেকে বড় সেই সংখ্যা যে সংখ্যাকে ১ ও ঐ সংখ্যা ছাড়া আর কোন সংখ্যা ছাড়া নি:শেষে ভাগ করা যায় না। কাজেই মৌলিক সংখ্যা মাত্রই ১ থেকে বড় হবে। এখানে থামলে ভাল হয়।

যারা আরো বেশি জানতে চায় তাদের জন্য মৌলিক সংখ্যার একটু গভীরে যেতে হবে। তখন হয়তো ২ নং কারণটা বোঝা যাবে। ২. মৌলিক সংখ্যার উদ্দেশ্য পূরণের জন্য : দি এলিমেন্টস গ্রন্থে প্রথম ইউক্লিড মৌলিক সংখ্যার ধারণা বলেন যখন তিনি পারফেক্ট সংখ্যা খুঁজছিলেন। পারফেক্ট সংখ্যা হলো সে সংখ্যা যা কীনা নিজেকে ছাড়া এর ধনাত্মক উতপাদক গুলোর যোগফলের সমান। যেমন ৬ (১,২,৩), ২৮ (১,২,৪,৭,১৪) ইত্যাদি।

ইউক্লিড আগ্রহী ছিলেন সে সংখ্যা নিয়ে যে সংখ্যাগুলোকে এভাবে উতপাদকে ভাগ করা যায় না। ১ নং এ প্রদত্ত সংজ্ঞা দিয়ে তখন তিনি মৌলিক সংখ্যাগুলোকে সংজ্ঞায়িত করেন। পাটিগণিতের একটি মৌলিক বিষয় হলো যে কোন ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যাকে কেবল একভাবে (ইউনিক) তার উতপাদকের গুণফল হিসাবে প্রকাশ করা যাবে যেখানে উতপাদকগুলো বড় থেকে ছোট ক্রমে সাজানো। তারমানে হলো সংখ্যাকে ভাঙ্লে তার একক পাওয়া যাবে। এখন ১ কে কিন্তু ইচ্ছেমত ১.১ বা ১.১.১ বা ১.১.১.১ এভাবে লেখা যায় যাতে ফলাফল পরিবর্তন হয় না।

অর্থাত ১ এর এই পুন: পুন: ভাঙ্গা আমাদের কোন কাজে আসে না। প্রাইমারি ক্যাটাগরির জন্য আপাতত ১ নং কারণে জোর দেওয়াটাই ভাল। গণিতের আরো কিছু ধারণা বিকশিত হলে তখন আরো জটিল বিষয়ে যাওয়া যেতে পারে। মৌলিক সংখ্যা বের করার একটি ছক আছে। শিক্ষার্থীরা সেটাও দেখেছে।

শনিবারের ক্লাশটা নিয়েছে সুবিন। বিষয় ছিল ঋণাত্মক সংখ্যা এবং গুণ করে ভাগ করা। এজন্য শিক্ষার্থীদের সংখ্যা রেখা সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়েছে। ক্লাশে আমিও ছিলাম। আশ্চর্য হলো, শিক্ষার্থীরা সহজে সংখ্যারেখার ব্যাপারটা ধরতে পেরেছে।

নেগেটিভ সংখ্যাকে কীভাবে যোগ বিয়োগ করতে হয়, তারা সেটি সহজে ধরতে পেরেছে। এবং আরো মজার হলো তারা কিন্তু সহজে পজিটিভ/নেগেটিভের গুন আর ভাগও ধরে ফেলেছে। নেগেটিভ সংখ্যা আমরা টেনে এনেছি যাতে শিক্ষার্থীদের ভাগের ব্যাপারটা ক্লিয়ার হয়। আগামী শনিবারে সুবিন এই আলোচনার সমাপ্তি টানবে মাইনাসে-মাইনাসে গুন করার ব্যাপারটা দিয়ে যা কীনা তাদেরকে হেল্প করবে নেগেটিভ সংখ্যা দিয়ে ভাগ করার ব্যাপারে। শুক্রবারের ক্লাশটা নেবে মামুন।

তার বিষয় প্রাক্কলন বা estimation । এটি আমাদের শিক্ষার্থীদের একটি বিশেষ দুর্বলতা। কারণ আমরা যান্ত্রিকভাবে অনেককিছু পারি কিন্ত অনুমান করতে পারি না। মামুনের ক্লাশে এটা নিয়ে আলাপ হবে। এখন পর্যন্ত ক্লাশগুলো নিয়ে আমি খুশি, যদিও ক্লাশটা হয়তো তার কাঙ্খিত গতি পাচ্ছে না।

তবে, আমার ধারণা আস্তে আস্তে হলেও আমাদের খুদেরা গণিতে মজা পাচ্ছে আর আমরাও তাদের সমস্যাগুলো ধরতে পারছি। সবার সেকেন্ড ডিয়ারেন্সিয়াল নেগেটিভ হোক।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।