আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

***কতগুলো অবৈধ কাজের বৈধ ভার্সন ***

"সকল বস্তু তার বিপরীত বস্তুর মাধ্যমে স্পষ্ট হয়ে উঠে"

বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম সকল প্রশংসা আল্লাহ তাআলার জন্যে। আল্লাহ তাআলা শান্তি ও রহমত রাসূল ﷺ এর উপর, তার পরিবার ও সাহাবীদের উপর এবং কিয়ামত পর্যন্ত তাদেরকে যারা অনুসরণ করবে তাদের উপর অর্পিত হোক। আমীন। ধূমপান করা ইসলাম মোটেই সমর্থন করে না, কারণ ধূমপান যে করে সে নিজেও ক্ষতিগ্রস্থ হয় আর তার আশেপাশে যারা থাকে তাদেরও ক্ষতিগ্রস্থ করে, কষ্ট দেয়। বিড়ি, সিগার এগুলো সবই তামাক পাতা দিয়ে তৈরী।

এখন কেউ যদি মসজিদে এসে ধূমপান করতে চায় তার কমপক্ষে ধমক-ধামক আর বেশীপক্ষে গণপিটুনি খাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু এই তামাক পাতা যখন একজন ব্যক্তি চিবিয়ে চিবিয়ে খাবে অর্থাৎ পানের সাথে খাবে তখন কিছুই মনে করা হয় না। অর্থাৎ অবৈধ জিনিসটি বৈধ হয়ে গেল! গ্রামের মহাজন যখন গরীব চাষীকে টাকা ধার দিয়ে সুদ খায় তখন সেই মহাজনকে খুব নীচু চোখে দেখা হয়। পত্রিকায় এরকম খবর পড়ে অনেকেই হয়তো মনে মনে বলে, ব্যাটা রক্তচোষা! কিন্তু সেই খবরটির ঠিক নীচে একটি বিজ্ঞাপন থাকে, যেমন আপনার স্বপ্ন এবার বাস্তবে পরিণত হবে, জুলুম ব্যাংক থেকে। জুলুম ব্যাংক আপনাদের সেবায় নিয়োজিত।

সর্বনিম্ন অমুক পার্সেন্ট থেকে তমুক পার্সেন্ট ইন্টারেস্ট(সুদ) পর্যন্ত! আহা, কি সুন্দর অফার। কালকেই যোগাযোগ করতে হবে! অর্থাৎ অবৈধ কাজের বৈধ ভার্সন। কারণ, সুদ এমন একটি অপরাধ যার বিরুদ্ধে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ﷺ এর চরম সতর্কবাণী রয়েছে। পত্রিকায় প্রায়ই খবর পাওয়া যায়, অমুক প্রেমিকের জন্য তমুকের আত্মহত্যা, পরকীয়া প্রেম এরপর চলতে ফিরতে প্রায়ই চোখে পরে ফ্রি যুগের হাওয়া তোলা যুবক-যুবতীদের বিবাহপূর্ব স্বামী-স্ত্রীর মতো চলাফেরা করতে। অনেকেই এসব খবর পড়ে, দেখে আফসোস করেন নাহ! সমাজটা গোল্লায় গেল, আমাদের সময় এত বেল্লালপনা ছিল না! কিন্তু যখন বাসায় এসে টিভির রিমোট চেপে বিভিন্ন সিরিয়াল দেখবেন যেখানে ফ্রি স্টাইল বিবাহপূর্ব চলাফেরা, পরকীয়া সবই দেখানো হয় এই তারাই সিরিয়ালগুলোর সাথে মজে যাবেন! বাহ! কি চমৎকার কাহিনী, পরিচালক বুদ্ধিমান অমুক, তমুক এইটা সেইটা।

কি চমৎকারভাবেই না অবৈধ কাজটি বৈধ হয়ে যাচ্ছে। কেউ যদি কাউকে জিজ্ঞেস করে, ভাই আপনি কি জুয়া খেলেন? তখন সেই ব্যক্তি আঁতকে উঠে বলবেন, না, নাহ! এগুলো আমাদের বংশে নেই! জুয়া খেলা ছিঃ জঘন্য। কিন্তু এই জুয়া খেলাটাই যখন বৈধ রুপে মাইকিং করে রাস্তায় বিক্রি করা(দশ টাকায় ত্রিশ লক্ষ টাকা) হয় তখন সেই ব্যক্তিই অনেকগুলো টিকিট কিনে নিবেন। অর্থাৎ জুয়া খেলার বৈধ ভার্সন!! রাস্তার গোলি-ঘুপচিতে কেউ যদি মদ্য পান করে তখন তাকে ধাওয়া করা হবে সেটা একরকম নিশ্চিতভাবে বলা যায়! লোকেমুখে বলাবলি হবে, চিন্তা করেছ, মদ খায়, কত জঘন্য, পাপীষ্ঠ। অথচ এই মদই যখন এসি রুমে বসে, লাইসেন্স সহকারে পান করা হবে তখন কেউ কিছুই বলবে না।

বরং মদ্য পান করা ব্যক্তিকে সম্মান করবে, আরে উনি অমুক তমুক, উনার এত এত আছে ইত্যাদি ইত্যাদি। অর্থাৎ অবৈধ মদ্যপানের বৈধ ভার্সন। আল্লাহ ব্যতীত অন্যের নিকট আল্লাহর মতো করে সাহায্য কামনা করা শিরকে আকবর বা বড় শিরক। এই কথাটি মোটামুটি সকলেই জানেন। আল্লাহ ব্যতীত অন্যের নিকট উন্নতির জন্যে সাহায্য চাওয়া, বা কোন কাজে সফলতা পাওয়ার জন্যে যেভাবে আল্লাহর নিকট চাইতে হয় সেভাবে না চেয়ে মাজারে চাওয়া এটাও শিরকে আকবর।

আর এটাও অনেকেই জানেন। কিন্তু পত্রিকায় যখন খবর পড়েন অমুক দলীয় নেতা তমুক মাজার জিয়ারত করে তার নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন। খবরের কাগজগুলোতে হাসি হাসি কতগুলো মুখের ছবি দেওয়া হয় যারা মাজার জিয়ারত করে বের হচ্ছেন। তখন এই অবৈধ জঘন্য শিরকে আকবরটিও বৈধ হয়ে যায়!! এরপর কেউ যদি বলে, হে অমুক খাজা বাবা সাহায্য কর!(নিঃসন্দেহে শিরকে আকবর)। অনেকেই সেটা বুঝতে পারবেন যে এটা শিরক করছে।

কিন্তু এইতো প্রায় এক দেড় বছর আগে একটা হিন্দি গান খুব শোনা যেত রাস্তাঘাটে, হোটেল রেস্তোরায়। ইয়া আলী! মদদ আলী!!.... হে আলী! সাহায্য কর!! অর্থাৎ জঘন্য শিরকটিও বৈধ হয়ে হয়ে গেল। এখনো মাঝে মাঝে এই গানটি শুনতে পাওয়া যায়। আল্লাহ তাআলা আমাদের হিফাজত করুন ও সহীহ ইলম দান করুন এবং সেই ইলম যেন আমরা কর্মে পরিণত করতে পারি। আমীন।



এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।