আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দুদককে ক্ষমা চাইতে হব-ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর

সুন্দর আগামীর প্রত্যাশায়......

সরকারি হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর তত্বাবধায়ক সরকারের দুই বছরের কর্মকান্ডের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) ক্ষমা চাইতে বলেছেন। তিনি বলেছেন, তত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দুর্নীতি দমন কমিশন যেভাবে কাজ করেছে সেভাবে কাজ করলে দুদকের প্রয়োজন নাই। ওই সময় দুদক রাষ্ট্রের সংবিধান লংঘন করে গোষ্ঠী স্বার্থে বিশেষ মহলের তল্পিববাহক হিসেবে কাজ করেছে। এ প্রেক্ষিতে দুদক আইনের সংশোধনকে ইতিবাচক আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, দুদককে নিরঙ্কুশ ক্ষমতা দিলে সেনা প্রধানও নিরঙ্কুশ ক্ষমতা চাইবেন। গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদ ভবনের মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, সাবেক তত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ফখরুদ্দিন আহমেদ, সাবেক সেনাপ্রধান মইন উ আহমেদ ও টিআইবি ট্রাস্টি বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ সবচেয়ে বড় দুর্নীতিবাজ। তারা গোষ্ঠী স্বার্থে রাষ্ট্রের সংবিধান লংঘনকে সমর্থন করেছিল। মহীউদ্দীন খান আলমগীর বলেন, ফখরুদ্দিন ও মইন উ আহমেদের আমলে দুদক বিনা দোষে রাজনীতিবিদদের হয়রানি করেছে। সেনাশাসিত তত্বাবধায়ক সরকার আমাকে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিবৃতি দিতে বলেছিল। আমি বিবৃতি দেইনি বলে গ্রেফতার করেছে।

সাজা দিয়েছে। কিন্তু কোন অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি। বিনা দোষে কাউকে কামড়ানোর ক্ষমতা আমরা কাউকে দিতে চাই না। দুদক না থাকলে কিভাবে দুর্নীতি দমন করা হবে? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, চূড়ান্ত পর্যায়ে দুর্নীতি দমিত হবে জনতার আদালতে। সরকারি হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে গতকাল সোমবার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ, সোনালী ব্যাংক এবং রূপালী ব্যাংকের দুর্নীতি নিয়ে আলোচনার পর দুর্নীতি দমনে সরকারের কৌশল সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রশাসনকে গতিশীল করার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনের আইন সংশোধন করা হচ্ছে।

সরকারি কর্মকর্তারা ১০টি কাজ করলে সেখানে ২/১টি ভুল হতে পারে। এজন্য তাকে সরাসরি দোষী সাব্যস্ত করার আগে তার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেয়ার বিধান করা হচ্ছে। কারণ, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া কোন কর্মকর্তাই এককভাবে সিদ্ধান্ত নেন না। দুদকের ক্ষমতা খর্ব করার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নিযুক্তিয় কর্তৃপক্ষ নির্বাচিত কর্তৃপক্ষের ওপরে স্থান পেতে পারে না। দুর্নীতি দমন কমিশন, নির্বাচন কমিশন, পাবলিক সার্ভিস কমিশনণ্ড এসবই নিযুক্তিয় কর্তৃপক্ষ।

এগুলোর স্থান কখনোই সংসদের উপরে নয়। এসব প্রতিষ্ঠানকে সংসদের উপরে স্থান দিলে সৈরতন্ত্রকে প্রশ্রয় দেয়া হবে। সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুদককে অবশ্যই আইন অনুযায়ী কাজ করতে হবে। কিন্তু বিগত তত্ত¡াবধায়ক সরকারের আমলে দুদক সংবিধানকে লংঘন করে গোষ্ঠী স্বার্থে ব্যবহৃত হয়েছে। নিজেদের ইচ্ছামতো কাজ করেছে।

এ বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের কোন সংস্থা সরাসরি কোন বিদেশি সাহায্য নিতে পারে না। কিন্তু তৎকালীন (বিগত তত্বাবধায়ক সরকারের আমলে) দুদক সরাসরি বিদেশি সাহায্য নিয়েছে। এমনকি ওই সময়ের দুদক চেয়ারম্যান হাসান মশহুদ চৌধুরী বিনা টেন্ডারে দুদকের আসবাবপত্র বিক্রি করেছেন। এর বিচার কে করবে? এমন প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, যারা কোটি কোটি টাকা বিদেশ পাচার করলো কেন তাদের কিছু হলো না? প্রথম আলো ট্রান্সকমের মালিক লতিফুর রহমানকে দুদক যে নোটিস দিয়েছিল, সেই নোটিস এখন কোথায়? আমরা সব কিছু জানি। তিনি বলেন, দুদকের কর্মকর্তারা দুর্নীতি করলে তাদের বিরুদ্ধে দুদক নিজেই ব্যবস্থা নেবে।

অথচ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা ছাড়াই দুদক সরাসরি ব্যবস্থা নিতে চায়। এটা হতে পারে না। দুদক আইনের সংশোধন সম্পর্কে অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমেদের বক্তব্যের প্রতিবাদ করে আলমগীর বলেন, আইনের ফাঁক-ফোঁকর গলিয়ে নয়, আইনের মাধ্যমেই আমরা মুক্ত হয়েছি। এরপর জনগণের রায়ে নির্বাচিত হয়ে সংসদে এসেছি। কিন্তু তিনি বিদেশি টাকার বিনিময়ে জনগণের সমর্থন ছাড়াই কথা বলছেন।

তার বক্তব্য আদালত এবং জনগণের সমর্থনকে অবমাননার সামিল। তিনি বলেন, যারা রাষ্ট্রের সংবিধানকে লংঘন করে গোষ্ঠী স্বার্থে প্রশাসনকে সৈরাচারি কায়দায় পরিচালনা করেছে সেই মইন উ আহমেদের বস্তাপচা বই-এর মোড়ক উন্মোচন করতে তিনি (অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমেদ) গলফ ক্লাবে গিয়েছিলেন কোন নীতি আদর্শ নিয়ে? ফখরুদ্দিন, মইন উ আহমেদ রাষ্ট্রের সংবিধান লংঘন করেছে। আর তাদের সমর্থন দিয়েছেন অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদের মতো ব্যক্তিরা। রাষ্ট্রের সংবিধান লংঘনকারীদের চেয়ে বড় দুর্নীতিবাজ নেই। এ সময় আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানের সরকারের সময় আমি রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তা ছিলাম।

আর অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ ছিলেন জিয়াউর রহমানের উপদেষ্টা। আর তিনি যখন ইনস্টিটিউট অব বিজনেস ম্যানেজমেন্টে চাকরি করতেন তখন ওই প্রতিষ্ঠানের টাকা কিভাবে তার (মোজাফফরের) ব্যক্তিগত একাউন্টে জমা হয়েছিল সেটা আজো জাতি জানে না।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।