আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শাড়িতে নারীর সোন্দর্য যতটা প্রকাশ পায়, অন্য পোশাকে তা সম্ভব নয়

পাঁচ ফুট শরীরে বার হাত শাড়ি অঙ্গ ঢাকিতে তবে পারে না মোর নারী এক প্যাচ দুই প্যাচ কোমরেতে মারে প্যাচ তিন প্যাচ চার প্যাচ কুচি দিয়ে আরো প্যাচ প্যাচাতে প্যাচাতে হল দশ হাত পুরো শেষ বাকী থাকে দুই হাত, দুই হাত বাকি থাকে দুই হাতে বল, কী করে অঙ্গ ঢাকে। বাংলাদেশের বেশীর ভাগ মেয়েই জীবনের একটা সময় শাড়ি পড়তে অভ্যস্হ হয়ে যান । শাড়ির উৎপত্তি ভারতের মগধের সম্রাট ২য় চন্দ্রগুপ্তের গ্রীক দেশীয় স্ত্রী ভারতীয় মেয়েদের মধ্যে শাড়ি পড়ার প্রচলন করেন । ধর্ম গ্রন্হে শাড়ি বলে কোন শব্দ নেই । বাংলাভাষার প্রাচীন গ্রন্হ চর্যাপদেও শাড়ি শব্দটি নেই ।

তবে আধনা বলে একটা শব্দ আছে । এটা অর্থ আঁচল বা ওড়না । অর্থাৎ স্মরণাতীত কাল থেকেই মেয়েরা শালীনভাবে চলাফেরা করার জন্য ওড়না বা আঁচল দিয়ে মাথা ও হতে শরীরের উল্লেখযোগ্য অংশ ঢাকতো । গ্রামবাংলার নারীরা এখনও শাড়ি পরেন। কিন্তু শহরে এ কালচার অনেক কমে গেছে।

১৭৪৭ সালের হিসাব অনুযায়ী দিল্লীর বাদশাহ, বাংলার নবাব ও জগৎ শেঠের জন্য প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ টাকার জামদানি কেনা হয়। অনেক মেয়ের ধারনা- শাড়ি পড়তে অনেক সময় লাগে । আর সাবলিলভাবে হাঁটা যায় না । দিন দিন বাংলাদেশের শহুরু মেয়েরা শাড়ির প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে । তবে বিভিন্ন উৎসবে অনেক মেয়ে বিউটি পার্লারে যেয়ে শাড়ি পড়ে আসে ।

চাকুরীজীবি ও বিভিন্ন পেশাজীবি মেয়েরা তাদের সুবিধা জন্য কর্মক্ষেত্রে শাড়ি কম পড়ছেন । আর বিউটি পার্লার এখন শহরের মেয়েদের জীবনের অংশ হয়ে গেছে বলে পাড়ায় পাড়ায় বিউটি পার্লার গড়ে ওঠেছে । অনেক মেয়ে উৎসবের সময় স্বামী বা বন্ধু-বান্ধবীদের অনুরোদে শাড়ি পড়তে বাধ্য হয় । এক-এক ধর্মের এক-এক দেশের মানুষের সংস্কৃতি এক-এক রকম। সংস্কৃতি অনেকটা ভাষার ওপর নির্ভর করে গড়ে উঠেছে।

বাংলা ভাষায় আমরা কথা বলি। তাই আমরা বাঙালি। আমাদের পোশাক-আশাক, শিল্প-সংস্কৃতি সেই বাঙালিত্বের পরিচয় বহন করে। বিশেষ করে বাঙালি নারীর প্রধান পোশাক হচ্ছে শাড়ি। ১৪ শতকে মরোক্কীয় পরিব্রাজক ইবনে বতুতা যখন বাংলাদেশ ভ্রমন করেছিলেন, তিনি তখন বাংলাদেশে তৈরি জামদানী শাড়ি দেখেছিলেন এবং এর প্রশংসা করেছিলেন।

বাঙালি নারীদের কাছে ঢাকাই জামদানি শাড়িরও বেশ কদর রয়েছে। জামদানি শাড়ি শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে ডেমরা হাটে একসময় বিক্রি হতো। এখনও জামদানির আড়ং বসে। বাংলাদেশ থেকে নানা কিছু হারিয়ে গেলেও ডেমরার সেই ঐতিহাসিক আড়ংটি রয়ে গেছে। বাজারে নানা ধরেনের নানা ডিজাইনের শাড়ি পাওয়া যায়।

দেশীয় তৈরি শাড়ির পাশাপাশি বিদেশি তথা ভারতের বিভিন্ন এলাকার শাড়ি পাওয়া যায়। নেপালীয় নারীরা বিভিন্নভাবে শাড়ী পরেন। এর মধ্যে হাকু পাতাসি উল্লেখযোগ্য। এটি লাল পেড়ে কালো শাড়ী। বেনারশী শাড়ির জন্য ঢাকা তথা বাংলাদেশে বিখ্যাত স্থান মিরপুর বেনারশী পল্লী।

সাধারণত স্বজনের বিয়ের জন্য এখান থেকে সকলে শাড়ি কিনে থাকেন। মিরপুর বেনারশী পল্লীতে বেনারশী, মাসলাইস কাতান, মিলেনিয়াম কাতান, জুট কাতান, কোটা কাতান, ব্রোকেট বেনারশী, কার্পেট বেনারশী, হানিকোট বেনারশী, রাজকোট বেনারশী, কোরা বেনারশী, জামদানি, বালুচুড়ী বেনারশী, শাটিন বেনারশী, মসলিন সিল্ক, ঢাকাই মসলিন এবং জর্জেট শাড়ি পাওয়া যায়। এগুলোর মূল্য ৬,০০০ টাকা থেকে শুরু ২,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। ঢাকার বাইরে নরসিংদীর বাবুরহাটে সুতির শাড়ি, টাঙ্গাইলের বাজিতপুর, সিরাজগঞ্জের শাহাজাদপুর ও পাবনার আতাইকুলায় তাঁতের শাড়ি এবং নারায়নগঞ্জের ভূলতায় জামাদানি শাড়ির বাজার বসে। এইসব বাজারে ভোর ৫ টা থেকে সকাল ৮ টা পর্যন্ত শাড়ি বেচাকেনা হয়ে থাকে।

বিভিন্নভাবে ভাজ করে শাড়ি পরা হয়ে থাকে। সবচেয়ে সাধারণ ভাজ হচ্ছে কোমরে জড়িয়ে একপ্রান্ত কাঁধের উপর দিয়ে ঝুলিয়ে দেয়া, যাকে আঁচল বলা হয়। সেনাবাহিনীতে নারী সেনারা শাড়ী পড়লে কোমরে শার্ট বেধে রাখেন। আপনার প্রিয় শাড়িগুলোর নিয়মিত যত্ন নিন যাতে দীর্ঘদিন তা সুন্দর থাকে। এক নজরে শাড়ি- জামদানি,ঢাকাই বেনারসি,রাজশাহী রেশমী শাড়ী, টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ী,কাতান শাড়ী,পাবনার শাড়ী,ভারতীয় শাড়ি,তাঁত, শালু ইত্যাদি।

শাড়ি সুন্দর রাখার কিছু পরামর্শ:•কেনার পর প্রথমে শাড়িতে ফলস পাড় লাগিয়ে নিন। সুতি শাড়ি প্রথমবার ধোয়ার আগে কিছুক্ষণ লবণ পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। শাড়ি ধোয়ার সময় ব্রাশ দিয়ে বেশি ঘসাঘসি করবেন না। যে শাড়িগুলো বেশি পরা হয়না, সেগুলো মাঝে মধ্যে বের করে রোদে দিবেন। কিছুদিন পরপর শাড়ির ভাঁজ বদলে রাখবেন।

•পোকা থেকে বাঁচাতে সিল্কের শাড়ির কাছে ন্যাপথলিনের পরিবর্তে শুকনা মরিচ রাখতে পারেন। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ২৫ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।