আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রতারক আদম ব্যাপারীর কবলে পড়ে আসা কলম্বোতে দু'টি অসহায় লোক

বাংলায় কথা বলি,বাংলায় লিখন লিখি, বাংলায় চিন্তা করি, বাংলায় স্বপ্ন দেখি। আমার অস্তিত্ব জুড়ে বাংলা ভাষা, বাংলাদেশ।

দুটি হতভাগ্য লোকের বিবরন শুনুন: Mr. Sayed Mia Father: Late Anowar Sheikh Mother: Jaminur Begum Date of birth: 01 February 1975 Passport No. E 1068378 Date of Issue: 14th February 2010 Date of Expiry: 13th February 2015 Permanent address: Moharajpur Sheikh Para P.O. Moharajpur P.S & Dist. .: Chapai Nawab Gonj Mr. Kamrul Father: Mr. Robiul Mother: Adore Begum Date of birth: 30 November 1983 Passport No. B 1791184 Date of Issue: 17th April 2008 Date of Expiry: 16th April 2013 Permanent address: Vil: Ramkrinapur P.O. Kalinagar P.S & Dist.: Chapai Nawab Gonj “বাংলাদেশে আমরা রাজমিস্ত্রীর কাজ করতাম। আমাদেরকে বিদেশে আনার কথা বলে জনৈক সুমন (বাড়ি চাপাই নবাবগঞ্জের জামতলা। মোবাইল - ০১৭৩১৫৫৭৯২৯) আমাদের কাছ থেকে ২ লাখ করে টাকা নেয়।

সে আমাদেরকে জানায় আমাদেরকে শ্রীলংকায় রাজমিস্ত্রীর কাজ দেবে। বলেছে যে, আমাদেরকে মাসে ২০/২২ হাজার বাংলাদেশী টাকা বেতনের চাকরি দেবে। সেই মোতাবেক আমরা বাড়ি-ঘর বিক্রি করে টাকা দিয়েছি। বিগত ২৩ ফেব্রুয়ারি থাই এয়ার লাইন্সের একটি বিমান যোগে ঢাকা ত্যাগ করি এবং ২৪ ফেব্রুয়ারি কলম্বো আসি। কলম্বোতে আরেক সুমন আমাদেরকে এয়ারপোর্টে রিসিভ করে নিয়ে আসে।

কলম্বোতে এনে আমাদেরকে একটি বাড়িতে রাখা হয়। আমাদের সাথে প্রায় ১ মাস থাকার পর সুমন চলে যায়। কিন্তু কোথায় গেছে আমাদেরকে বলে যায়নি। আজ অবধি সুমন আর ফিরে আসেনি। ইতোমধ্যে, আমাদের ভিসার মেয়াদ ৩০শে মার্চ শেষ হয়ে গেছে।

২৪ শে মার্চ এখানে যে বাড়িতে আমরা থাকতাম সেই বাড়ির মালিক আমাদেরকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। সেই সময় আমাদের কাছে ৩০০ টাকা ছিল। সেই থেকে আমরা পথে পথে থাকছি। এর পর বাংলাদেশে ফোন করে জানতে পারি কলম্বোতে বাংলাদেশের হাইকমিশন আছে। এক জন অটোরিক্সাওয়ালা আমাদেরকে বাংলাদশে হাইকমিশনে নিয়ে আসে।

আমাদের সাথে ১৪০ টাকা ছিল। অটো ভাড়া দেবার পর এখন আমাদের কাছে মাত্র ১০ টাকা আছে। ইতোমধ্যে,আমাদের ভিসা শেষ হয়ে গেছে। হাতে কোন টাকা পয়সা নেই। পুলিশের ভয়ে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে থাকছি।

‍‍‍‍‍‍" পরের ঘটনা: কলম্বো বন্দর সম্প্রসারণের কাজ করছে কোরিয়ার হুন্দাই কোম্পানী। সেই কোম্পানীর বেশীর ভাগ কর্মরত লোক মূলত: বাংলাদেশের নাগরিক। তাদের মধ্যে মি: মো: নাসির (মোবাইল: +৯৪৭২৮৬৭৮৬৩৬)একজন দারুন চটপটে লোক। তিনি সব ঘটনা শুনে বিমান ভাড়ার টাকা যোগানোর উদ্যোগ নেন। ভিকটিমদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করার পর তিনি তার সহকর্মীদের কাছ থেকেও টাকা সংগ্রহ করেন।

আমার উপর দায়িত্ব বর্তায় টিকিট কেনার। আমি নিজে কলম্বোর বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সীতে যোগাযোগ করে দুটি থাই বিমানের টিকিট কম দামে কেনার চেষ্টা করি। কিন্তু গত কাল যে টিকিটটা মাত্র ৩১,৫০০ রুপীতে কিনতে পারতাম সেটা আজ কিনতে হল ৩৬,৬০০ রুপীতে। দুর্ভাগ্য,কাল আমরা রুপী যোগাড় করতে পারিনি। ফলে টিকিট কিনতে মোট খরচ হল ৭৩,২০০ রুপীতে।

বিরাট লস। লস মেনেই টিকিট কিনতে হল। আজ রাতে( ১:৪০ এ) তারা থাই বিমানে করে দেশে ফিরে যাবে। কাল ১২টা ১০ মিনিটে ঢাকায় নামবে। তাদের এ যাত্রা কোন সুখের যাত্রা নয়।

ঢাকায় নামার পর আবার তাদের সামনে সীমাহীন হতাশা। পরিবার, ছেলে-মেয়ের সবাই কাল বা পরশু সামনে আসবে। তাদেরকে কি জবাব দেবে? কোথায় যাবে তারা? ধার-দেনা করে, ঘর বিক্রি করে যে টাকা তারা যোগাড় করেছিল প্রতারকের পাল্লায় পড়ে তাদের সব শেষ। দেশের মানুষগুলো কেন এতো খারাপ হয়ে গেল? দেশে কি ভাল মানুষ এক জনও থাকবে না?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।