আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হত্যা গুম বন্ধে রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব: অ্যামনেস্টি

বিশ্বের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বুধবার লন্ডনে প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদনের বাংলাদেশ অংশে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত জানুয়ারিতে বলেছিলেন দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
“তবে গত ডিসেম্বর থেকেই দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে এবং সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। বিরোধী দলের হরতালের মধ্যে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। ”
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের বাংলাদেশ বিষয়ব গবেষক আব্বাস ফয়েজ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাংলদেশে মানবাধিকার লঙঘনের ঘটনা নিয়ে কোনো জবাবদিহিতা হয়নি। বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম ইত্যাদি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বছরের পা বছর কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরার পরও এসব সমস্যার রাজনৈতিক সমাধানের কোনো সদিচ্ছা দেখা যাচ্ছে না।


৩০০ পৃষ্ঠার এই প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১২ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে বাংলাদেশে র‌্যাব ও পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে বিচাবহির্ভূত হত্যার ৩০টি ঘটনা ঘটেছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে হেফাজতে নির্যাতনের অব্যাহত রয়েছে এবং অন্তত ১০জন ‘গুম’ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে, যাদের মধ্যে বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীও রয়েছেন।   
“নারীর ওপর এখানো বিভিন্নভাবে নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। পাহাড়ে বসতিস্থাপনকারীদের হামলা থেকে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীগুলোকে সুরক্ষা দিতে পারেনি সরকার। ”
গত নভেম্বরে আশুলিয়ায়  পোশাক কারখানা তাজরীন ফ্যাশনসে অগ্নিকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই ঘটনায় অন্তত ১১১ শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

আগুন লাগার পরও কারখানা কর্তৃপক্ষ বহু শ্রমিককে বেরোতে দেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।  
রামুর বৌদ্ধ মন্দির ও বসতিতে হামলার ঘটনাও অ্যামনেস্টির এ প্রতিবেদনে এসেছে।   গত বছর বাংলাদেশে একজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করায় এবং আদালত ৪৫ জনকে ফাঁসির আদেশ দেয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ‘মৃত্যুদণ্ডের’ বিরোধিতা করে আসা এ সংস্থাটি।   
পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে টানাপড়েনের প্রসঙ্গ টেনে অ্যামনেস্টি বলেছে, দুর্নীতির ওই অভিযোগ নিয়ে সরকারের সাড়া যথেষ্ট ছিল না।  
বিশ্ব মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে অ্যামনেস্টির এবারের প্রতিবেদনে বিভিন্ন দেশে অভিবাসী ও শরণার্থীদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।


মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধ দেশে দেশে সরকারি পর্যায়ে ব্যবস্থা না নেয়ায় বিশ্বব্যাপী অভিবাসী ও শরণার্থীদের বসবাস ক্রমশ বিপদজনক হয়ে পড়ছে বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক এই মানবাধিকার সংস্থাটি।
লন্ডনে অ্যামনেস্টি কার্যালয়ে এ প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সংস্থার মহাসচিব সলিল সেট্টি বলেন,
সংঘাত ও সহিংসতা বন্ধে সরকারগুলো সঠিকভাবে সাড়া দিতে না পারায় বিশ্বজুড়ে উদ্বাস্তু হওয়া বা দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হওয়া মানুষের একটি শ্রেণী তৈরি হচ্ছে। অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের নামে বহু দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন করে চলেছে। নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো সীমান্ত সুরক্ষার নামে যা করছে তা অনেক ক্ষেত্রেই অন্যায্য।
অ্যামনেস্টির অভিবাসী ও শরণার্থী অধিকার বিষয়ক বিশেষজ্ঞ শেরিফ আল সৈয়দ আলী সম্প্রতি গ্রিসে বাংলাদেশি শ্রমিকদের ওপর গুলি চালানোর ঘটনা তুলে ধরে বলেন, গ্রিস ইতালির মতো দেশগুলোতে বিদেশি শ্রমিকরা মাসের পর মাস বেতন পাচ্ছেন না।

ফলে তাদের দুর্বিসহ জীবন কাটাতে হচ্ছে।   
শরণার্থীদের কারণে দরিদ্র দেশগুলোতে যে অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি হয় তা লাঘবে সহযোগিতা করার জন্য ধনী দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান অ্যামনেস্টি মহাসচিব।

সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.