আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার লেখা কলাম, মন্তব্য চাই

সম্পাদনা করি আমিরাত-বাংলা মাসিক মুকুল। ভালবাসি মা, মাটি ও মানুষকে..

নাহিদ ভাই তরুণদের গড়ে তোলার এইতো সময় লুৎফুর রহমান গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ। আমাদের নাহিদ ভাই। আমি যখন সাড়ে চার হাজার বর্গমাইল দূর থেকে সাড়ে আট লক্ষ বাঙালি প্রাণের কথা ভেবে আরব আমিরাতের দুবাই থেকে আপনার উদ্দেশ্যে এ নিবন্ধটি লিখছি তখন হয়তো আপনি বাংলাদেশের শিক্ষাক্ষেত্রে উন্নয়ন ঘটাতে ব্যস্ত। তারপরও আমার লেখাটি আপনার কাজের অংশ।

তাই আমার এই প্রয়াস। আমি যখন দুবাইতে আসার জন্য আমার শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র সত্যায়ন করার জন্য আপনার কার্যালয়ে গিয়েছিলাম তখনই ছিল আপনার সাথে আমার শেষ দেখা। আপনি বলেছিলেন, “বিদেশ যাবে যাও তবে মনে রাখো তুমি যে পাসপোর্টটি বহন করবে এটা হবে বাংলাদেশের সম্মান। তাই বাংলাদেশের সম্মান বজায় রাখবে। এবং তুমি ওখানে হবে বাঙালিদের জন্য দূত।

তাদের সুখ-দুঃখের কথা তোমার লেখনির মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলবে। ” নাহিদ ভাই, আপনার সেই মূল্যবান কথাগুলো আমার জীবনের পাথেয় ভেবে আজ সাদা কাগজের বুকে শব্দের চাষ করছি। আমি আপনাকে জানাতে চাচ্ছি আমাদের বীরের জাতিরা এই আমিরাতে যে কারণে কান্নার নোনাজলে বুক ভাসায় তার কয়েকটি কারণ। আমিরাতে যেসব বাঙালিরা কাজ করতে এসেছেন তাদের বেশিরভাগের পেশা কন্সট্রাকশন কোম্পানির হেল্পার। এরা দেশ থেকে আসার সময় নিজের শেষ সম্বল ভিটে-মাটি বিক্রি করে টাকার আশায় নীড় বাধে স্বপ্নশহর দুবাইতে।

মনে তাদের থাকে অনেক রঙিন স্বপ্ন। তাই সেই স্বপ্নের বাস্তবায়ন দেখাতে অনেকেই সাত-পাঁচ না ভেবেই দালাল বা ম্যানপাওয়ার এজেন্সির কাছে কমপক্ষে ২ থেকে আড়াই লক্ষ বাংলাদেশি টাকা দিয়ে দেশের ৬৪ হাজার বর্গমাইল অতিক্রম করে আসে এই আমিরাতে। কিন্তু এখানে আসার এক মাসের মাথায় তার স্বপ্নকে গলাটিপে হত্যা করতে হয়। স্বপ্নদেখা একজোড়া চোখ নোনাজলের পাথর হয়ে যায়। দেশে থাকতে লোকটি হিসেব কষে ছিল মাসে হাজার পনেরো টাকা পাবে।

কিন্তু এখানে এসে দেখে ব্যতিক্রম। পাল্টে যায় দৃশ্যপট। এখানে এসে সে পায় ৬শ’ থেকে ৮শ’ টাকা বেতন। থাকার খরচটি কোম্পানি বহন করলেও খেতে হয় নিজের টাকায়। তার উপর আছে ফোন খরচ।

সবমিলিয়ে একজন শ্রমিকের একমাসে আয় থাকে ৪শ’ টাকা। যা বাংলাদেশি ৭৪০০ টাকার সমমান। তাই তার ভিসার মূল্য পরিমাণ টাকা আদায় করতে চলে যায় ২ বছর ৩ মাস। নিজের ঋণের বুঝা চালাতে চালাতে চলে যায় তার জীবনের রঙিন ৩টি বসন্ত। তার একমাত্র কারণই হচ্ছে আমাদের প্রযুক্তিগত শিক্ষার অভাব এবং মধ্যভূগি দালালদের অসাধুতা।

তাই এ শ্রেণীর শ্রমিকেরা শেষ পর্যন্ত অনেক কুকাজে জড়িয়ে পড়ে বলেই বিদেশের মাটিতে আমাদের সেই বীরত্ব মাখা গৌরবটি নিচু বলে আখ্যায়িত করে। বড়ই লজ্জা লাগে নাহিদ ভাই। পাশাপাশি আত্মঅভিমানে কিছু করার সাধও জাগে। কিন্তু সাধ্য যে আমার নাই্ তাই কাগজের বুকে কলম চালানো ছাড়া কোন উপায় থাকেনা। নাহিদ ভাই।

এ দৃশ্যটি শুধু আমিরাতের নয়্ আপনি পরখ করলে দেখবেন বিশের সবদেশে এ যন্ত্রণায় ভুগছে বাঙালিরা। তাই আপনার এই সরকারের আমলে আপনার ঘোষিত টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ কমপক্ষে দেশের প্রবাসি অধ্যূষিত উপজেলাতে স্থাপন করার এখনই সময়। আপনার শিক্ষামুলক আমূল পরিবর্তন এ দেশের মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। দলমত নির্বিশেষে সবাই আপনার জয়গান গাইছে। তাই আপনি এ কাজটি করে প্রবাসিদের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করুন।

আর যেন কাউকে অদক্ষ হিসেবে বিদেশে আসতে না হয়। আর দক্ষ নাগরিকতরা প্রবাসে আসলে দেশের ভাবমূর্তিও উজ্জ্বল হবে বিদেশের মাটিতে। অপরদিকে দেশ বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সফল হবে। স¤প্রতি দেশের যে বাজেট এসেছে তার সিংহভাগ টাকা বৈদেশিক রেমিটেন্স থেকে এসেছে যা প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে অর্থমšী¿ পর্যন্ত সবাই বলেছেন। সেই হিসেবে আমিরাতে নিযুক্ত কনস্যাল জেনারেল আবু জাফরের দেওয়া তথ্যমতে পনো ২ লাখ ডলার পাঠিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে মধ্যপ্রাচ্যের প্রবাসিরা।

তাই এই রেমিটেন্সটা দক্ষ শ্রমিক হলে ১০ লাখ ডলার ছাড়িয়ে যেতো বলে আমার বিশ্বাস। আপনার সেই পরিকল্পনাকে বাস্তবের মুখ দেখাতে প্রবাসিদের যা যা করণীয় তা সবাই করতে প্রস্তুত। আপনি এ কাজটি সফল করে আমাদের জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন এ প্রত্যাশা আমার মতো প্রত্যেক প্রবাসি বাঙালির। আপনার জয় হোক। আপনার হাতে সেই স্বপ্নীল দিনটি দেখার অপেক্ষায়... লেখক: সম্পাদক,মাসিক মুকুল, দুবাই, সংযুক্ত আরব আমিরাত।

লিংকটি দেখেন-http://www.notundesh.com/motmotantor_news3.html

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.