আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রিয়দর্শিনী বন্ধু আমার।

তবু বিহঙ্গ, ওরে বিহঙ্গ মোর/ এখনি, অন্ধ, বন্ধ কোরো না পাখা। ।
ইন্দিরা ছিলেন অপরূপা। জন্মের পর তাই পিতামহ নাম রেখেছিলেন ইন্দিরা প্রিয়দর্শিনী। বিখ্যাত পরিবারের এই প্রিয়দর্শিনী যখন যুক্তরাজ্যে পড়াশনা করতে যান, প্রেমে পড়েন এক অখ্যাত যুবকের।

দেশে ফিরে এসে দুজনে সিদ্ধান্ত নেন বিয়ে করবেন। নাম পরিচয়হীন যুবকের সাথে বিয়ে- মেনে নিতে পারেননি পিতা নেহরু। কিন্তু মেয়েও অনড়। শেষে নেহেরু দারস্থ হলেন বাপুজি'র। বাপু'জি মহাত্মা, তিনি ফিরোজকে দত্তক নিলেন; ফিরোজের নামের শেষে যুক্ত হলো 'গান্ধী'।

ধূমধামে বিয়ে হলো ইন্দিরা-ফিরোজের। বিয়েতে উপহার পেয়েছিলেন একটি শাড়ী যা জেলে বসে হাতে বুনেছিলেন মহাত্মা গান্ধী ফিরোজ রাজনীতিতে ছিলেন আগে থেকেই, এবার এলেন সংসদে। ইন্দিরার কোল জুড়ে এলো রাজিব ও সঞ্জয় সাথে এলো সংসারে ভাঙ্গনের সুর। আলাদা হয়ে গেলেন ফিরোজ-ইন্দিরা। কে জানত এই অভামানী বিচ্ছেদই হবে চির বিচ্ছেদ।

? ফিরোজ হারিয়ে গেল প্রকৃতির কোলে। এবার ইন্দিরা এলেন সম্মুখে। বাবার মৃত্যুর পর হাল ধরলেন ভারতের। টানা তিনবার হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়টা এসেছিল একাত্তরে।

একাত্তরের দিনগুলোতে ঘুম হারাম হয়ে গিয়েছিল প্রিয়দর্শনীর। বিশ্বের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে ছুটে বেড়িয়েছেন মানবতার ডাক নিয়ে। নিক্সন তাকে কখনো ডাকতো ডাইনী, কখনো ধূর্ত শৃগাল। কিন্তু মহা প্রতাপশালী নিক্সন হোয়াইট হাউজেই ম্রীয়মান, কুপোকাত হয়ে পড়েছিল ইন্দিরার বিশাল ব্যক্তিত্বের সামনে। লিজেন্ডস টুগেদারঃ মুজিব-ইন্দিরা কি অসাধারণ প্রত্যুতপন্নমতিত্ব ছিল ইন্দিরার! মুজিব যখন ফিরলেন, ১০ জানুয়ারী ১৯৭২, দিল্লীতে বিমানের সিড়িতে ভাষন শুরু করলেন ইংরেজিতে।

পাশে দাড়িয়ে ইন্দিরা ফিস ফিস বললেন, 'বাঙ্গলা কহিয়ে'। জীবনে একবারই পরাজিত হয়েছিলেন। ১৯৭৭ সালের নির্বাচনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচনে পরাজয়ের একমাত্র রেকর্ডটি জুটেছিল তার। নির্বাচনের পরে দিল্লীতে ইন্দিরা নিজেকে আবিস্কার করলেন অসহায়! দিল্লীতে তার ঠাঁই নেই মাথা গোঁজার। রিক্ত প্রিয়দর্শনী ফিরে গেলেন পিতৃগৃহে।

তিন বছর পর আবার প্রধানমন্ত্রী; ছিলেন মৃত্যুর ক্ষণ পর্যন্ত। ১৯৮৪। বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু এই মানুষটির প্রতি অসীম শ্রদ্ধা।
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।