আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রিয়দর্শিনী অষ্টাদশিগণ কি হেতু বারান্দা ধৌত করে?

যদি কখনও সুযোগ পাই, সাত বাজারের চুড়ি এনে দেব, যত্ন করো!

বিগত কিছুকাল যাবৎ বাসার পাচিকার মারাত্মক ব্যামো হেতু ঘর-কন্নার কর্ম সম্পাদন এবং আহার্য নিয়া মোদের সমস্যার অন্ত ছিল না। বাহিরে খাইয়া কেহ কেহ ঘন ঘন বিশ্রামাগারে যাওয়া আসা শুরু করিয়া দিয়াছিল। অবস্থার উপায়ান্তর না দেখিয়া এবার নিজেই আঁট-ঘাঁট বাঁধিয়া নামিয়া পড়িলাম, যা হয় কপালে, একটা কিছু করিয়াই ছাড়িব, এই পণ করিয়া ডেকচি-হান্ডি-পাতিল লইয়া ঘষা-মজা শুরু করিলাম। একটু আধটু রাঁধিতে যে পারিতাম না তা নয়, তবে পুরোদোস্তর রান্না-বান্না করিবার জন্য যে সমস্ত যোগ্যতার সন্নিবেশ প্রয়োজন তাহার কিছুই আমার মধ্যে সেদিনের আগ পর্যন্ত আবিষ্কার করিতে পারি নাই! যাহাই হোক, ঘরে ডামাডোল বাজাইয়া রাঁধিতে বসিলাম! আস্ত একটা খামারে প্রতিপালিত মোরগ (কিংবা মুরগি) রাঁধিয়া ফেলিলাম এবং খাইবার পূর্বে চাখিয়া আমি নিজেই তাজ্জব বনে গেলাম। ইহা কি? এ কোন স্বর্গ হইতে আগত অমৃত সুধা পান করিতেছি! অন্য সকলেরও একই অভিব্যাক্তি! যাহাই হোক! সকলে চেটেপুটে পেট পুরে খাইয়া অবশিষ্টাংশ পরের দিন মধ্যান্হভোজনের জন্য রাখিয়া দিল।

পর দিন আমার আপিস বৈকালে। দুপুরে খানা খাদ্য গরম করিতেছি। পাকের ঘরের জানালা দিয়া আশপাশের দালানের বারান্দাগুলা সুস্পষ্টভাবে দৃশ্যমান হয়। হঠাৎ একটি দৃশ্যে আমার চোখ আটকাইয়া গেল। পাশের দালানের দ্বিতীয় তলার ঝুলবারান্দায় এক অষ্টাদশি প্রিয়দর্শিনী পরম মমতায়, চরম আদরে বারান্দা পরিষ্কার করিতেছে! আমি কিছুটা বিষম খাইয়া তাকাইয়অ রইলাম, আজকালকার অষ্টাদশিগণ নাটক নভেল না দেখিয়া, এফএমে কান না পচাইয়া, মুঠোফোনে না বকবকাইয়া এইভাবে বারান্দা পরিষ্কার করিতে পারে তাহা আমার কল্পনাতীত! তাও আবার কয়েক ফেইজ ঐ তরুনী এই দুঃসাধ্য কর্ম সাধন করিতেছে।

প্রথমে ঝাড়ু দিয়া, তাহার পর গুড়ো সাবান দিয়া ঘষিয়া ঘষিয়া, এরপর ডলিয়া ডলিয়া, নরম তালুর কোমল পরশে পরিষ্কার করিতে লাগিল! আমি দীর্ঘকাল যাবৎ মাংস গরম করিয়া, চাউল চুলায় দিয়া রাঁধিতে থাকিলাম আর উহার শৈল্পিক কর্ম পরম বিস্ময়ে স্বনেত্রে দেখিতে থাকিলাম! অতঃপর ঘন্টা দেড়েক অতিক্রান্ত হইবার পর বালিকা কর্মে ক্ষান্ত দিল। বারান্দা একেবারে ঝকঝকে তকতকে করিতেছে! নারী হৃদয়ের আকুল কথা আমি বরাবরই বুঝিতে অক্ষম ছিলাম। তাহার উপর অষ্টাদশি হইলে ত কথায় নাই! অতএব ব্লগারগণ, ইহার কোন যুৎসই ব্যাখ্যা দাঁড় করাইবেন কি? নারী ব্লগারগণের কমেন্টস বিবেচনার সহিত গৃহিত হইবে! [উল্লেখ্য তখনও এই নতুন আইন পাস হয় নাই! আমার বিরুদ্ধে কোন দুর্জন আদালতের দ্বারস্থ হইয়া অভিযোগ করিতে পারিবেন না! ] সাধু ভাষায় আমি আনাড়ি, তাহার পরও প্রচেষ্টা করিলাম!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।