আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নির্বাচনী ইশতেহার: আওয়ামীলীগের চরিত্র বদল আর সহযোগীদের নীরব সমর্থন



আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে অগ্রাধিকারের পাঁচটি বিষয়ের অন্যতম ছিলো সুশাসন প্রতিষ্ঠা। ইশতেহারের কথামালা আর ক্ষমতা আরোহনের পর চরিত্রবদলের বাস্তবতার একটি সাধারন পর্যালোচনা করছি। '৫. সুশাসন প্রতিষ্ঠা : ৫.১ সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ শক্ত হাতে দমন করা হবে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যবস্থা করা হবে। '(আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার থেকে হুবুহু তুলে দিলাম) সন্ত্রাস কতটা কঠোরভাবে দমন করা হয়েছে তা সরকারই বলতে পারবেন।

তবে ছাত্রলীগ আর যুবলীগ যে সন্ত্রাসের সোল এজেন্ট তা কারো কাছে অপরিষ্কার নয়। ছাত্রলীগের কার্যক্রমে অতিষ্ঠ হয়ে প্রধানমন্ত্রী সংগঠনটির অভিভাবকত্ব ছেড়ে দিয়েছেন। এখন এতিম ছাত্রলীগ আরো ভয়ানক হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নিজে যাদের সামলাতে পারেননা, তাদের সামলাবে এমন বুকের পাঠা কার আছে!! ক্ষমতা বদল হয়েছে। বদল হয়েছে এজেন্সীশীপ।

জোট আমলে ছিলো ছাত্রদল, ছাত্রশিবির আর যুবদল। এখন মহাজোট আমলে সকলেই ছাত্রলীগ আর যুবলীগ। এজেন্সীশীপ আরো শক্ত হয়েছে। বাণিজ্য এতই মধুর যে ছাত্রলীগ আর যুবলীগের অনেক গ্রুপ। সবাই প্রধানমন্ত্রীর সৈনিক।

খুব লজ্জিত হই যখন দেখি তারা নিজেদের বঙ্গবন্ধুর সৈনিক বলেও দাবী করে। জঙ্গীবাদের অনেক গালগপ্পো শোনা গিয়েছিলো। একজন অর্থনীতিবিদ প্রতি মাসে ১০ হাজার জঙ্গী জন্মানোর তথ্য দিয়ে চমৎকৃত করেছিলেন। নিজেও চমৎকৃত হয়েছেন একটি ব্যাংকের চেয়ারম্যানের পদ অলংকৃত করে। এখন আর তার জঙ্গীজন্ম তত্বটি নিয়ে আলোচনার সময় পাননা।

কিন্তু প্রতিদিন কিছু মাদ্রাসার বিপথগামী ছেলেদের ধরে ধরে মিডিয়ার সামনে জঙ্গী হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। দাড়ি থাকলেই যে কোন সন্ত্রাসীই জঙ্গী। জিহাদের কথা বললেই জঙ্গী। ভয়ংকর জঙ্গীদের মিডিয়ার সামনে বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খানের মত হড়বড় করে কথা বলতে দেখা যায়। জঙ্গীদের যেখানে তথ্য গোপন রাখার জন্য মৃত্যুকে গ্রহন করতে উৎসাহিত করা হয়, সেখানে ধরা পড়া ভয়ংকর ভয়ংকর জঙ্গীরা সব তথ্য অবলিলায় দিয়ে দেন!! কি আচানক কান্ড!! যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়টি ছিলো গত নির্বাচনের সবচাইতে হট ইস্যু।

মহাজোট তথা আওয়ামীলীগের নিরুঙ্কুশ বিজয় আর নতুন প্রজন্মের ভোট একচেটিয়া পাওয়ার কারন ছিলো যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার আশ্বাস। তখন বিভিন্ন সংগঠন এবং পত্রিকা বিশেষত প্রথম আলো এই বিষয়ে সোচ্চার ছিলো। ৭১-এর ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি ৯৬-২০০০ এর মেয়াদে হঠাৎ নীরব হয়ে গিয়েছিলো। অথচ এই মেয়াদে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করবার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিলো। গত নির্বাচনে লাইম লাইটে আসে সেক্টর কমান্ডর ফোরাম।

তার যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য জনমত গড়ে তুলতে তৎপর ছিলেন। নির্বাচনের পরে তাদের উৎসাহে ভাটা পড়েছে অথবা অন্য কোন কারনে নীরব হয়ে গেছেন। এই নীরবতা সর্বজন শ্রদ্ধেয় জাহানারা ইমামের হাতে গড়া ৭১-এর ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ১৯৯৬-২০০০ মেয়াদের স্মৃতি ফিরিয়ে আনে। ভাগ্য ভালো জাহানারা ইমামকে এই দু:সহ লেজুরবৃত্তি দেখতে হয়নি। আজ আওয়ামীলীগের চরিত্র বদল ঘটেছে।

তারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চায়না, তারা চায় যুদ্ধকালীন সময়ে মানবতা বিরোধী কাজের বিচার। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আর মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য বিচার দুটি সম্পূর্ণ পৃথক বিষয়। বিএনপি আর জামাত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চায় কিনা তা বিবেচ্য নয়। সারা দেশের মানুষ যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য সোচ্চার তখন পিছু হঠছে সরকার। পিছু হঠছে স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্ব দেয়া রাজনৈতিক দল আওয়ামীলীগ।

পিছু হঠছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের আদর্শকে লালন করার কথা বলার রাজনীতিকগন এবং তার আপন কণ্যা। ৭১-এর ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, সেক্টর কমান্ডার ফোরাম, মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর, সুশীল সমাজ আর এই দেশের মিডিয়া কিং প্রথম আলো যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের নামে যুদ্ধকালীণ সময়ে মানবতাবিরোধী কার্যক্রমের বিচার নামের প্রহসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার নয়। যুদ্ধাকালীণ সময়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার হলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পূর্ণ হয়না, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যবস্থা করলে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারও সম্পূর্ণ করা সম্ভব এবং বাস্তবসম্মত। যুদ্ধাপরাধীদেও বিচারের বিষয়ে দেশের সকল জনগন যখন সচেতন এবং সোচ্চার তখন আওয়ামী লীগের এই আচরন এট্ইা কি প্রমান করা না যে- যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়টি জনগনকে প্রদান করা নির্বাচনী মূলার বেশী কিছু নয়!! (সরাসরি ব্লগে লিখেছি। তাই বাক্য গঠনে ভুল থাকতে পারে।

ল্যাপটপের চার্জ আছে দশমিনিটের মত। তাই এডিট না করেই পোস্ট করলাম। যা বলার তা সরাসরি বলতে ভালোবাসি। )

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.