আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কী গভীর দুঃখে সমস্ত আকাশ



এক একটি বিকেল একেবারে অন্য রকম হয়। বাসা থেকে বেরিয়ে পড়ি একা। বন্ধুদের কাছে যাই না একা একা হাঁটতে থাকি। কোথায় যাচ্ছি জানি না। 'হিমি'র সাথেও দেখা করতে ইচ্ছা করে না।

আমি জানি এই সময় 'হিমি' একা একা ঘরে বসে পড়তে বসে। 'হিমি'বাসায় শাড়ি পড়ে না। জানালার কাছেই 'হিমি'র পড়ার টেবিল। আমি ইচ্ছা করলেই জানালার কাছে গিয়ে 'হিমি' দু'হাত ছুঁয়ে দিতে পারি। কিন্তু আমি যাই না।

বিকেলে সে নাঁচের ক্লাসে যায়,নাঁচের ক্লাস কখন শেষ হয় আমি জানি। নাঁচের স্কুলের সামনে অপেক্ষা করলেই 'হিমি'র সাথে দেখা হয়। এক সাথে কিছু পথ হাঁটতে পারি। কিন্তু আমি যাই না। এক একটা বিকেলে আমার এই রকম হয়।

'হিমি'র চোখে মুখে এমন একটা সারল্য আছে,যা আমাকে পাগল করে দেয়। 'হিমি'র জগতে আমি নেই-আছে,সাহিত্য,গান,নাচ এবং সে খুব রোমান্টিক। 'হিমি'র কাছে গেলেই আমার খুব ইচ্ছা করে ওর কোলে মাথা রেখে ঘুমাই। আদর নিই। কোনো কিছুর বিনিময়েই আমি এই মেয়েটিকে হারাতে চাই না।

ঠান্ডা বাতাস নেওয়ার জন্য আমি ব্যালকনিতে দাঁড়াই। আকাশ দেখি। আমি সময় পেলেই আকাশ দেখি। আমার বন্ধু মতি বলেছিল মন খারাপ হলেই আকাশ দেখবি। তার পরেই আমাকে একটা কবিতা শুনিয়ে দিলো-"আধখানা দ্বার বন্ধ ছিল/আধখানা দ্বার খোলা/আধখানা এই হৃদয় ছিল/তোমার জন্য তোলা।

আমার এই বন্ধুর মতো 'হিমি'ও আমাকে একদিন বিকেলে একটা কবিতা শুনিয়ে ফোন বন্ধ করে রাখলো। কবিতা টা ছিল এই রকম-"জীবন গিয়েছে চলে আমাদের-/কুঁড়ি কুঁড়ি বছরের পার/তখন যদি দেখা হয়-/তোমার- আমার"। 'হিমি'আমার জীবনের প্রথম কবিতা তোমাকে নিয়ে লেখা। কবিতা টি হারিয়ে ফেলেছি। দু'টা লাইন আজও মনে আছে-''সবাই কে ছাড়িয়ে তুমি,যখন খুব ভালোবাসার অভাব বোধ করি ,তখন সারা পৃথিবীতে শুধু তোমার কথাই মনে পড়ে।

'' 'হিমি' তুমি কেমন আছো?তোমার সাথে দেখা হওয়ার পর আমি সব তোমাকে বুঝিয়ে বলবো। আচ্ছা, বিজ্ঞান কি পারবে আমার মনের সব দুঃখ কষ্ট ভুলিয়ে দিতে?(আমি খুব বুঝতে পারছি আমার লেখাটা এলোমেলো হয়ে গেছে। লেখার দোষে ভুল বুঝবেন না প্লীজ। আমার এমনই কপাল সুন্দর করে গুছিয়ে একটা লেখাও লিখতে পারি না। )আমি আর এই দুনিয়া'র যোগ ফলটা কিছুতেই মিলাতে পারছি না।

আমার নিজের মধ্য দুঃখ কষ্ট ছাড়া আর কিছু খুঁজে পাই না। আমি অপদার্থ হলেও মিথ্যাবাদী নই। 'হিমি' তোমার জন্য আমার সবকিছু থেমে আছে। সত্যিকার অর্থে বলতে কি-তোমার সঙ্গ আমার ভালো লাগে,তোমাকে আমার অনেক প্রয়োজন বলে মনে হয়। কি করে এই ভালো লাগা আর প্রয়োজনটাকে অস্বীকার করি,বলো?আচ্ছা,'হিমি' কি আমার প্রেমিকা?'হিমি'র চোখের দিকে তাকালে আমার দুনিয়া এলোমেলো হয়ে যায়।

ইচ্ছা করলে আমি 'হিমি'কে চুমু দিতে পারি আবার থাপ্পড় ও দিতে পারি। আচ্ছা আমি কি 'হিমি'র প্রতি আসক্ত?নাকি একটা মোহ কাজ করছে? মানুষ তো সব সময়ই তার দুর্বলতা, লোভ লালসা,বৃওি-প্রবৃওি সবকিছু কেই একটা যুক্তি'র ভিতর দাঁড়া করাতে চায়। আমি কি আমার দুর্বলতা কে বেশী আশকারা দিচ্ছি?ভালোবাসা এক অনুশীলন সাপেক্ষ ব্যাপার। ভাবের ভালোবাসা বেশীক্ষন থাকে না,থাকতে পারে না। আমার ভেতর এখন আমি একা না,দু'জন।

তবুও হাত বাড়ালে কাউকে কাছে পাই না। হাত বাড়ালেই হাতের ভেতর মুঠো মুঠো শূন্যতা জমা হয়। গভীর নিঃসঙ্গতার মধ্যে আমি হারিয়ে যাই। গভীর বেদনা মনের অনুভুতিতে আচ্ছন্ন হয়। যখন আমার সহানুভুতি,সমবেদনার প্রয়োজন হয়-তখনই আমি 'হিমি'কে খুঁজে বেড়াই।

মনে হয় শুধু 'হিমি'ই আমার একমাএ সম্বল। 'হিমি' এসে আমার হাত ধরলে সব ঠিক হয়ে যাবে। এতে আমার মন খানিকটা হালকা হয়,মনে হয় আশ্চর্য এক অস্তিত্ব,এই কাল্পনিক উপস্থির মধ্যেও। 'হিমি'র কথা ভাবলে আনন্দ হয় যতটুকু তার বহুগুন বেদনা আমাকে অনুভব করতে হয়। তবু এ বেদনা অন্যরকম।

'হিমি'কে একটা গান প্রায়ই গুনগুন করতে শুনি-"আমার প্রানের মানুষ আছে প্রানে, আহা তোমার সঙ্গে,আমি কোথায় প্রেমে হবো সবার"। তুমি এখন কি করছো বোকা মেয়ে?ঘর ঠান্ডা করে নীল জামা পড়ে রাজকন্যার মতো শুয়ে আছো, ডান হাতের পাতার উপরে ডান গাল রেখে ডান পাশ ফিরে?তুমি ঘুমাও। তুমি কখনও বুড়ি হয়ো না,আমার কষ্ট হবে। তুমি ছাড়া আমার জীবনে আজকে আনন্দ বলতে কিছু নেই। কর্তব্য আছে,দায়-দায়িত্ব আছে।

আনন্দ একমাএ লেখা-পড়া এবং তুমি।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।