আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

'ইরানে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র'

অনু পরিমাণ খবরকে নিয়ে আসব সবার গোচরে

ইরানে খুব শিগগিরই হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এ জল্পনা নতুন করে উস্কে দিয়েছে ব্রিটিশ পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন। স্কটল্যান্ডের 'সানডে হেরাল্ড' পত্রিকায় ১৪ মার্চে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানে সম্ভাব্য হামলার প্রস্তুতি হিসাবে ক্যালিফোর্নিয়া থেকে ভারত মহাসাগরের ব্রিটিশ দ্বীপ দিয়েগো গার্সিয়ায় শক্তিশালী বাঙ্কার-বাস্টার বোমা নিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। দিয়েগো গার্সিয়া ব্রিটিশ ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত হলেও ১৯৭১ সালের একটি চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র এ দ্বীপটিকে সামরিক ঘাঁটি হিসাবে ব্যবহার করে আসছে। যুক্তরাষ্ট্রে নৌবাহিনীর জাহাজের মালামালের তালিকা উদ্ধৃত করে এবং বিশেষজ্ঞদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে পত্রিকাটি জানিয়েছে, ইরানের বিতর্কিত পরমাণু স্থাপনায় হামলা করার জন্যই বোমাগুলো ওই অঞ্চলে নেওয়া হচ্ছে।

ইরানকে পরমাণু কর্মসূচি থেকে বিরত রাখতে কূটনীতি কিংবা নিষেধাজ্ঞায় কাজ না হলে দেশটিতে এ ধরনের হামলা চালানোর মার্কিন সামরিক বাহিনীর প্রস্তুতি নিয়ে সম্প্রতি কয়েকমাস ধরে জল্পনা-কল্পনা বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল বরাবরই বলে আসছে ইরানের সন্দেহজনক পরমাণু কর্মসূচি বন্ধে তারা সামরিক শক্তি ব্যবহারের সম্ভাবনা নাকচ করেনি। উপরন্তু সব পথই তারা খোলা রাখছে। সম্প্রতি ফক্স নিউজে এক সাক্ষাৎকারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, "আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের বিষয়গুলোর অন্যতম হচ্ছে ইরানের হাতে পরমাণু বোমা না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করা। আর একারণেই আমি ইরানকে একঘরে করতে সফল হওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়কে একাট্টা করতে কঠোর পরিশ্রম করছি।

" কিন্তু স¤প্রতি কয়েকসপ্তাহে ইরানবিরোধী কৌশল নেওয়ার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র বহু বাধার সম্মুখীন হয়েছে। কারণ, চীন, রাশিয়া ব্রাজিল ও অন্যান্য বিশ্বশক্তিগুলো তেহরানের বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে। কয়েকজন সামরিক বিশ্লেষক ইরানের পরমাণু স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হামলার সম্ভাবনা নাকচ করেছেন। কারণ, এ ধরনের হামলার বড় ধরনের পাল্টা পতিক্রিয়া হতে পারে। তবে অন্যান্যরা বলছেন, স¤প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ইরানে নিষেধাজ্ঞা আরোপে যে কঠোর অবস্থান নিচ্ছে তাতে করে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের 'সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ এন্ড ডিপ্লোমেসি'র পরিচালক ড্যান প্লেশ সানডে হেরাল্ড পত্রিকাকে বলেন, "তারা পুরোপুরি ইরানকে ধ্বংস করে দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। " প্লেশ বলেন, "মার্কিন বোমারুরা আজ কয়েক ঘন্টার মধ্যেই ইরানের ১০ হাজারটি লক্ষ্যস্থল ধ্বংস করে দিতে সক্ষম। " তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী এ প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নির্ভর করছে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ওপর। ইসরায়েলের চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রেরই ইরানে হামলা চালানো ভালো হবে বলে মনে করতে পারেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ইরানকে নিবৃত্ত করতে কি ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে তা প্রচার বা প্রকাশ করছে না যুক্তরাষ্ট্র। এতে সংঘর্ষ বাধার আরও বেশি সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে। নতুন একটি স্বতন্ত্র গবেষণা ও পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান 'ন্যাটো ওয়াচ' এর পরিচালক আয়ান ডেভিস সানডে হেরাল্ডকে বলেছেন, দিয়েগো গার্সিয়ায় জাহাজে করে বোমা নিয়ে যাওয়াটা বড় ধরনের উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। তিনি বলেন, আমরা এ সমস্ত অস্ত্র স্থানান্তরের উদ্দেশ্য পরিস্কার করে জানানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে আহ্বান জানাব। আর ইরানে হামলার জন্য দিয়েগো গার্সিয়াকে কাজে লাগানোর বিষয়টিও পরিস্কার করে জানানোর জন্য পররাষ্ট্রবিভাগকে অনুরোধ জানাব আমরা।

পশ্চিমাদের ধারণা, ইরান বেসামরিক পরমাণু কর্মসূচির আড়ালে পরমাণু বোমা তৈরির চেষ্টা করছে। তবে ইরান এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলে আসছে, তাদের পরমাণু কর্মসূচি বিদ্যুৎ উৎপাদনের মত শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যেই পরিচালিত হচ্ছে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.