আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইডেনের ঘটনায় অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন



রাজধানীর ইডেন কলেজের ঘটনায় চরম আতঙ্ক, উদ্বেগ, শঙ্কা, হতাশা নিয়ে ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যাচ্ছেন শত শত ছাত্রী। এদের কেউ কেউ হল ছেড়ে দিচ্ছেন। আবার কেউ স্থায়ীভাবে অন্যত্র ট্রান্সফার হওয়ার জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমতিপত্র চেয়েছেন। প্রতিদিন উদ্বেগ ও উত্কণ্ঠা নিয়ে অসংখ্য অভিভাবক সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কলেজের সামনে ভিড় করছেন। এরকম গাজীপুর থেকে গতকাল মেয়েকে নিয়ে কলেজে এসেছিলেন এক অভিভাবক।

নাম প্রকাশ না করে তিনি বলেন, চলতি শিক্ষাবর্ষে ভূগোল ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি করেছিলাম মেয়েকে। কিন্তু লজ্জায় মরে যাচ্ছি, এ কলেজে পড়ালে মেয়েকে বিয়ে দিতে পারব কিনা। অন্য কলেজে ভর্তির জন্য অনুমতিপত্র নিতে এসেছি। অনুমতিপত্র না দিলে মেয়েকে পড়াব না। সমাজবিজ্ঞানের তৃতীয়বর্ষের এক ছাত্রীর সঙ্গে গতকাল সকালে কলেজ গেটে কথা হয় আমার দেশ প্রতিনিধির, যিনি আতঙ্কে গত পরশু হল ছেড়ে চলে গেছেন।

ওই ছাত্রী জানালেন, ?অত্যন্ত উদ্বেগ নিয়ে বাবা-মা ঠাকুরগাঁও থেকে ফোনে আমাকে বলেন, ?মা হলে থাকার দরকার নেই। মিরপুরে তোমার আপুর বাসায় থাক। আমি এরপর এখন আপুর বাসায় থাকছি। আজ ক্লাসে এসেছিলাম। কিন্তু এসে দেখছি আতঙ্কের চিত্র।

শত শত মেয়ে আমার মতো চলে যাচ্ছে। ? এদিকে নারী কেলেঙ্কারি আতঙ্কে রয়েছেন সরকারের একাধিক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীও। ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নেতা, শিল্পপতি, ব্যবসায়ী এবং কয়েকজন তরুণ মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধেও লোমহর্ষক অভিযোগ করছেন ভুক্তভোগীরা। এ ব্যাপারে ইডেনের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের এক ছাত্রী অভিযোগ করেন, সভাপতি নিঝুম কয়েকদিন আগে তাকে এক প্রতিমন্ত্রীর বাসায় যেতে বলেন। এর আগেও অনেক সুন্দরী মেয়েকে কয়েকজন তরুণ মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর গোপন বাসায় নেয়া হয়।

এক্ষেত্রে নিঝুমের আহ্বানে সাড়া না দেয়ায় মধ্যরাতে তিনি নির্মম নির্যাতনের শিকার হন। ওই ছাত্রী আরও জানান, এক্ষেত্রে চাহিদা বেশি প্রথমবর্ষের ছাত্রীদের। সুন্দরী ছাত্রীদের বলপ্রয়োগ করে বিভিন্ন নেতা ও ব্যবসায়ীর বাসায় পাঠানো হয়। অনেকে আবার লং ড্রাইভ এবং বিভিন্ন পর্যটন স্পটে অবসর যাপনে নিয়ে যান। বৃহস্পতিবার এলেই এই অত্যাচার বেশি বাড়ে।

ছাত্রীরা কলেজ ছাড়ছেন, অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন : দেহব্যবস্যা নিয়ে ছাত্রলীগের দু?গ্রুপে ১২ মার্চ সংঘর্ষ এবং লোমহর্ষক ঘটনা প্রকাশের পর চরম আতঙ্কে আছেন এখন হাজার হাজার ছাত্রী ও তাদের অভিভাবকরা। গতকাল সকালে ইডেন কলেজ গেটে গিয়ে দেখা গেছে হাজার হাজার ছাত্রী হল ছাড়ছেন। গেটে অভিভাবকদের ভিড়। কোনো কোনো অভিভাবক তার মেয়েকে হল থেকে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন। এক মহিলা অভিভাবক জানান, অনৈতিক কাজের যে অভিযোগ শোনা যাচ্ছে তাতে আমরা অভিভাবকরা শঙ্কিত ও উদ্বিগ্ন।

আমি মনে করি, সাধারণ শিক্ষার্থীরা কখনোই এ কাজ করতে পারে না। যারা রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় হলে উঠছে, ওইসব কাজে তাদেরই বাধ্য করানো হচ্ছে। প্রথমবর্ষের (পুরাতন) ব্যবস্থাপনা বিভাগের এক ছাত্রী বলেন, কয়েকদিন পরই ফাইনাল পরীক্ষা। এখন ক্যান্টনমেন্টে এক আত্মীয়ের বাসায় থাকছি। কয়েক মাস আগে হলে উঠতে চেয়েছিলাম।

শুনলাম নেত্রীদের ছাড়া হলে ওঠা যাবে না। নেত্রীদের কাছে গেলাম। তারা বললেন, হলে উঠতে হলে আমাদের সঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় যেতে হবে। তারপর ওই নেত্রীদের কাছ থেকে পালিয়ে পালিয়ে ক্লাস করছি। হলে উঠিনি।

এ কলেজে আর পড়ব না। অন্যত্র ট্রান্সফার হওয়ার চেষ্টা করছি। ওই ছাত্রীর অভিভাবক জানান, ওকে নিয়ে সবসময় চিন্তায় থাকি। কখন ওর ওপরও নির্যাতন-নিপীড়ন নেমে আসে। ছাত্রী ও অভিভাবকদের উদ্বেগের বিষয়ে কলেজ অধ্যক্ষ মাহফুজা চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

দেখা যাচ্ছে না বিশেষ গাড়িগুলো : গত কয়েকদিন ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইডেন ও বদরুন্নেসা কলেজে লাল রঙের বিশেষ গাড়িগুলো দেখা যাচ্ছে না। এসব গাড়িতে করে বিভিন্ন আদ্যক্ষরের মক্ষীরানীর নেতৃত্বে জুনিয়র ছাত্রলীগ কর্মী ও সুন্দরী মেয়েদের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নেতা, শিল্পপতি, ব্যবসায়ীর গোপন বাসায় নিয়ে যাওয়া হতো। কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় খবর প্রকাশের পর তারা এখন গা-ঢাকা দিয়েছেন। অভিযুক্ত নয়, অন্যায়ের প্রতিবাদকারীদের বহিষ্কার : অনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় একপক্ষীয়ভাবে কলেজ সভাপতি নিঝুম গ্রুপের বিপক্ষের চার ছাত্রলীগ নেত্রীকে নিয়মবহির্ভূতভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন বহিষ্কৃতরা। এ বিষয়ে বহিষ্কৃত সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শারমিন সুলতানা শর্মী জানান, সভাপতি নিঝুম ও সাধারণ সম্পাদক তানিয়ার নানা অনৈতিক কাজ ও অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছেন তারা।

সেজন্য আমাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। বহিষ্কার তো একপক্ষীয় হতে পারে না। এর ভেতর কোনো রহস্য আছে। আমরা এ বহিষ্কারাদেশ মানি না। বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়েছি।

দেখি আপা কি ব্যবস্থা নেন। এ বিষয়ে জানতে ছাত্রলীগ সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপনকে মোবাইলে চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি। ইডেন নেত্রীদের কুকর্ম দীর্ঘ হচ্ছে : পাঁচ বছর আগে ছাত্রত্ব শেষ হলেও এখনও জেসমিন শামিমা নিঝুম ও তানিয়া ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। এই কমিটির মেয়াদ তিন বছর আগেই শেষ হলেও দুর্দান্ত প্রতাপে রয়েছেন তারা। কমিটির অন্যদের অভিযোগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দেহব্যবসাসহ নানা অবৈধ কাজ করতে কেন্দ্রীয় নেতাদের মোটা অঙ্কের অর্থ দিয়ে স্বপদে বহাল রয়েছেন।

মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সভাপতি নিঝুম ও সাধারণ সম্পাদক তানিয়া কলেজ প্রশাসনের সঙ্গে আঁতাত করে কোটি কোটি টাকার ভর্তিবাণিজ্য করেছেন। আবার ভর্তির পর ছাত্রীদের হলে তুলতে ?সিটবাণিজ্য? করেছেন বলে গতকালও সংগঠনের একাধিক নেত্রী জানিয়েছেন। জানা গেছে, ইডেন ছাত্রলীগ সভাপতি জেসমিন শামিমা নিঝুম ইডেন কলেজে ১৯৯৭-৯৮ সেশনে ব্যবস্থাপনা বিভাগে ভর্তি হন। তার ছাত্রত্ব ২০০৫ সালেই শেষ হয়েছে। সাধারণ সম্পাদক তানিয়াও একই সেশনে কলেজে ভর্তি হন।

তারও পাঁচ বছর আগে ছাত্রত্ব শেষ হয়েছে। ইডেনে ছাত্রলীগের এক বছরমেয়াদি কমিটি গঠন করা হয়েছে ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে। অর্থাত্ ছাত্রত্ব শেষ হওয়ার পরও দু?জনকে ছাত্রলীগের এই ইউনিটের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। কমিটির মেয়াদ ২০০৭ সালের ডিসেম্বরে শেষ হয়েছে। এই অছাত্র হওয়ার পরও এ দু?জন তিন বছরের বেশি সময় ধরে এই শাখার নেতৃত্বে আছেন।

ওই কমিটি গঠনের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তেমন ব্যবসা-বাণিজ্য না থাকলেও নির্বাচনের পর রাতারাতি অবৈধ টাকার মালিক হন তারা। দু?জনই অবৈধভাবে টাকা কামাতে গত বছর থেকে ভর্তিবাণিজ্য শুরু করেন। ইডেন ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি, যুগ্ম সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক পদের কয়েকজন নেত্রী অভিযোগ করে বলেন, গত বছর ছাত্রলীগ ভর্তির জন্য কলেজ প্রশাসনকে পক্ষে নিয়ে ৮০০ সিটে ভর্তি বাণিজ্য করে। তখন সবাইকে মোটামুটি ভাগ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু এ বছর এই দু?জন নেত্রী ৯০০ ছাত্রীকে এককভাবে ভর্তি করিয়েছেন।

তারা আমাদের বলেছেন, মাত্র ৪০টি সিটে ভর্তি বাণিজ্য করতে পেরেছেন। কিন্তু কয়েকজন শিক্ষকের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ ভর্তিবাণিজ্যের কথা জানতে পেরে তারা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু করেন। নেত্রীরা জানান, প্রতিটি আসনে ভর্তি করানোর জন্য গড়ে ২৫ হাজার টাকা নেয়া হয়েছে। এভাবে প্রায় ২ কোটি টাকা ভর্তিবাণিজ্য করেছেন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। অভিযোগকারীরা কলেজের প্রিন্সিপালকে স্বর্ণের চেন উপহার দেয়ারও অভিযোগ করেন।

ইডেন শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক কানিজ বলেন, ইডেনে পাঁচটি হল রয়েছে। প্রতিটি হলেই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নিয়ন্ত্রণে ১০টি করে রুম রয়েছে। এসব রুমের মধ্যে খাদিজা হলের ৩০৫, ৩০৩, ৩১৪; হাসিনা বেগম হলের ২০৩, ২১৪, ৩০৪, ৩১৪, ২১৫; আয়েশা সিদ্দিকা হলের ২০৬, ২১০, ৩১৩, ৪০৪, ৪১৯; জেবুন্নেসা হলের ২০৮, ২০২ এবং রাজিয়া সুলতানা হলের ১১০, ২১০, ২০৯, ৩০৮নং রুম রয়েছে। এসব রুমে গত বছর থেকেই সিটবাণিজ্য করা হচ্ছে। প্রতিটি সিটে একজন ছাত্রী তোলার বিনিময়ে ১০ হাজার টাকা নেয়া হয়।

এবার প্রায় ৫০০ ছাত্রীকে সিটে তোলা হয়েছে। এখানে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ৫০ লাখ টাকার সিটবাণিজ্য করেছেন। এ বছর ইংরেজিতে ভর্তি হওয়া কলেজের এক ছাত্রীর ভাই (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানান, ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে হলের সিটে তোলা হয়েছিল। মিছিল-মিটিং না করায় তাকে আবার হল থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। সূত্রে জানা গেছে, ছাত্রলীগের এক সাংগঠনিক সম্পাদকের বোনকে হলের সিটে তোলার বিনিময়ে ৭ হাজার টাকা নিয়েছেন কলেজ শাখার সভাপতি।

শুধু তাই নয়, সিটে তোলার ক্ষেত্রে টাকা ছাড়া ছাত্রলীগ কলেজ কমিটির কোনো নেত্রীর সুপারিশও মানা হয় না। এ বিষয়ে জেসমিন শামিমা নিঝুমের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। বদরুন্নেসায় যা ঘটছে : ছেলের বয়স পাঁচ বছর। মুক্তা খাতুন। ছয় বছর আগে মাস্টার্স শেষ করেছেন।

তিনি সরকারি বদরুন্নেসা কলেজের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। মুক্তা খাতুন ১৯৯৪-৯৫ শিক্ষাবর্ষে কলেজে ভর্তি হন। তবে মাঝেমধ্যে এসে হলের খবরদারি করেন। সাধারণ সম্পাদক নিয়মিত হলে না থাকায় কলেজের দুটি হলে রামরাজত্ব প্রতিষ্ঠা করেছেন কলেজের সভাপতি নাসরিন সুলতানা ঝরা। তিনি ১৯৯৪-৯৫ শিক্ষাবর্ষে সমাজবিজ্ঞান বিভাগে অনার্সে ভর্তি হন।

সাত বছর আগে মাস্টার্স শেষ করেছেন। তার বিরুদ্ধে ওই কমিটির অন্যদের অভিযোগের শেষ নেই। কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মেরিনা জাহান কলেজ চালান সভাপতির নির্দেশমতই। কলেজের গাড়িও ব্যবহার করেন ঝরা ও তার সমর্থকরা। ছাত্রলীগের কোনো কর্মসূচি হলেই কলেজের দুটি গাড়ি ভর্তি ছাত্রী নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আসেন ঝরা।

সর্বশেষ ২০ ফেবু্রয়ারি তিনি দুটি গাড়ি নিয়ে আসেন ক্যাম্পাসে। ছাত্রীদের ধরে ধরে মিছিলে নিয়ে আসা এবং বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের বাসায় পাঠানো ঝরার নিয়মিত কাজ। কলেজের অধ্যাপকের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কলেজের অধ্যক্ষ চাকরি বাঁচানোর জন্যই ঝরার কথামত ওঠাবসা করেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ বছর কঠোর নিয়ম করায় ছাত্রলীগের কোটায় ছাত্র ভর্তি করতে পারেননি ঝরা।

কিন্তু এ বছর সাবজেক্ট পরিবর্তনের মাধ্যমে এখন পুরোদমে ব্যবসা চলছে। প্রায় ৩০০ ছাত্রীকে ভর্তি করিয়েছেন সাবজেক্ট পরিবর্তনের মাধ্যমে। কলেজ সূত্রে জানা গেছে, ঝরার দেয়া তালিকা ছাড়া একজন ছাত্রীও এ বছর বদরুন্নেসায় সাবজেক্ট পরিবর্তন করতে পারেনি। প্রতিটি ছাত্রীর কাছ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা নিয়েছেন। এছাড়া প্রতিটি ছাত্রী ওঠানোর ক্ষেত্রে কমপক্ষে নেন ১০ হাজার টাকা।

ওইসব ছাত্রীকে আবার নিয়ে যান বিভিন্ন নেতার বাসায়। এক্ষেত্রেও তিনি মাসোহারা পান। কোনো ছাত্রী তার কথামত কাজ না করলে চলে নির্যাতনের খড়গ। এসব ঘটনার প্রতিবাদ করায় ২৫ ফেব্রুয়ারি কলেজের সাংগঠনিক সম্পাদক রেহেনা বেগম আশা গ্রুপের ওপর হামলা করে সভাপতি গ্রুপের কর্মীরা। ওই কমিটির অন্যদের আরও অভিযোগ, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবাহিত ছাত্রী ইলুয়াকে ঝরা যুগ্ম সম্পাদকের পদ দিয়েছেন।

ইলুয়া বহিরাগত হলেও থাকেন হলে। ঝরার ক্যাডার হিসেবে কাজ করেন। আরও দুটি শীর্ষপদ সৃষ্টি করেছেন ঝরা। অর্থনীতির ছাত্রী শিমুলকে দিয়েছেন এক নম্বর সহ-সভাপতির পদ। একই বিভাগের ফাইনাল ইয়ারের ছাত্রী মুর্শিকে দিয়েছেন যুগ্ম সম্পাদকের পদ।

এসব নেত্রী মূলত ঝরার ক্যাডার হিসেবে কাজ করেন। ঝরার আরেকজন পরীক্ষিত ক্যাডার ইসরাত জাহান। এসব পদ সৃষ্টির মাধ্যমে তিনি লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। বদরুন্নেসার কমিটির সদস্য সংখ্যা কত তা কেউ জানে না। ঝরার নির্যাতনের শিকার হয়ে হল ছাড়ে রাজবাড়ীর মেয়ে তামান্না।

সে পুরনো হোস্টেলের ৩১২ নম্বর কক্ষে থাকত। তামান্না সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। ২২ ফেব্রুয়ারি সে অভিভাবক নিয়ে আসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে। অভিযোগ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ সোহেল রানা টিপুর কাছে। টিপুর বাড়িও রাজবাড়ীতে।

সে সুবাদে নালিশ করে টিপুর কাছে। তামান্না বলে, আমি কোনো দলের রাজনীতি করি না। তারপরও আমাকে হল থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। কলেজের অন্য ছাত্রীরা জানিয়েছে, ঝরার মতানুসারে কাজ না করায় তাকে হল থেকে বের করে দেয়া হয়। তামান্নাও একই ধরনের অভিযোগ করে।

অামার দেশ

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.