আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইডেনের আওয়ামী ছাত্রীদের গোপন কথা ফাঁস

soroishwarja@yahoo.com

কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়া, নেতার বাসায় যেতে রাজি না হওয়া, ভর্তি বাণিজ্য ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজে ছাত্রলীগের ছাত্রীদের দুই পক্ষের মধ্যে শুক্রবার দফায় দফায় মহড়া ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। ঘটনায় উভয় গ্রুপের কর্মীরা কলেজের প্রায় ১২টি কক্ষ ভাংচুর করে। হাতাহাতিতে কমপক্ষে ৬ ছাত্রী আহত হয়েছে। কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি জেসমিন শামীমা নিঝুম ও সাধারণ সম্পাদক ফারজানা ইয়াসমিন তানিয়া এবং তাদের প্রতিপক্ষ হ্যাপী, শর্মী ও চম্পা গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। মূলত উভয় পক্ষ ঘটনার জন্য পরস্পরের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের নৈতিকতা বিরোধী কাজে প্ররোচনার অভিযোগ এনেছে।

কলেজ ও ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে, সকাল সাড়ে ১১টার দিকে দুই পক্ষের নেতা-কর্মীরা হকিস্টিক ও রড নিয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেয়। দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এতে অনু, তানিয়া, রূপা, কণা, লুচি, স্বর্ণা আহত হয়েছে। সমাজকর্ম বিভাগের ছাত্রী মাহফুজা খানম স্বর্ণা বলেন, ‘সভাপতি নিঝুম আমাকে সব ধরনের অফার করেছে। গত বৃহস্পতিবার রুমানার মাধ্যমে আমাকে সব ধরনের প্রস্তাব করা হয়।

নিঝুমের নির্দেশে রুমানা প্রতিটি মেয়েকে বাইরে নেতার বাসায় যেতে বলে। আমি তাদের কথা না শোনায় আমার রুম ভাংচুর করে তালা দিয়ে সবকিছু তারা নিয়ে গেছে। কলেজের ভর্তি বাণিজ্য ও ছাত্রীদের কুপ্রস্তাব দেয়ার তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ায় নিঝুম বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ’ সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রথমবর্ষের ছাত্রী তানিয়া খাতুন ইত্তেফাককে বলেন, ‘ছাত্রলীগ নেত্রী স্বর্ণা ও কানিজ রাজিয়া হলের ২১০ নম্বর কক্ষে এসে আমাকে ও অনুকে কুপ্রস্তাব দেয়। একইভাবে ২০১ নম্বর কক্ষের মেয়েদেরও তারা একই প্রস্তাব দেয়।

আমরা তাদের প্রস্তাবে রাজি না হওয়াতেই স্বর্ণা, কানিজ, হ্যাপী, শর্মী আমাদের মারধর করেছে। কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি নিঝুম বলেন, ‘সংগঠনবিরোধী কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে হ্যাপী ও শর্মীকে বহিষ্কার করা হয়। বহিষ্কৃত দুই নেত্রীর সঙ্গে স্বর্ণা ও কানিজ কলেজের মেয়েদেরকে প্রায়ই কুপ্রস্তাব দিত। অনিয়মের প্রতিবাদ করায় আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। আমাকে সরাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা সিদ্দিকী নাজমুল আলম ষড়যন্ত্র করছেন।

তিনি বলেন, কিছুদিন আগে সিদ্দিকী নাজমুল আলম ও ইডেনের সহ-সভাপতি চম্পা খাতুন বিয়ে করে মিরপুরে বাসা নিয়েছে। ওই বাসায় ছাত্রীদের দিয়ে দেহ ব্যবসা করানো হয় বলে তিনি অভিযোগ করেন। সকাল ১১টার দিকে তারা রাজিয়া হলের ২১০ নম্বর কক্ষে প্রবেশ করে তানিয়া ও অনুকে মারধর করে। কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি চম্পা খাতুন বলেন, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুগত কর্মীরা দুপুর ১২টার দিকে রাজিয়া খাতুন হলের ৩০৮ নম্বর রুম, জেবুন্নেসা হলের ২০৮ নম্বর রুম ও খোদেজা খাতুন হলের ২/ক নম্বর রুমে হামলা করে রুমের শিক্ষার্থীদের বের করে দেয়। ৩০৮ নম্বর রুম থেকে গার্হস্থ্য অর্থনীতির ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী কানিজ ফাতেমার একটি ল্যাপটপ নিয়ে যায় বলেও অভিযোগ করেন চম্পা।

ভর্তি বাণিজ্য প্রসঙ্গে চম্পা বলেন, এ বছর ছাত্রলীগ কোটায় কলেজে ৭০০ ছাত্রীকে ভর্তি করা হয়েছে। গত বছর এ সংখ্যাটি ছিল ৮০০’র মত। গতবার কলেজ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ১৬ জন পদধারী ছাত্রলীগ নেত্রী ছাড়াও সংগঠনে সক্রিয় মোট ৪০ জনকে ৪০টি আসনে নতুন ছাত্রী ভর্তির সুযোগ দেন। এবার তারা একাই এ সকল কাজ করেছেন। কাউকেই কোন সুযোগ দেননি।

’ তিনি আরো বলেন, তারা ছাত্রীদের দিয়ে দেহ ব্যবসা, ভর্তি বাণিজ্যসহ সব ধরনের অপকর্ম করছেন। প্রত্যেকটা ছাত্রীকে জিম্মি করে রেখেছেন। তাদের কবল থেকে বের হয়ে ছাত্রীরা অন্যায়ের প্রতিবাদ করে আমাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে। এছাড়া এই চক্রটি ভর্তি বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত। তিনি বিবাহিত নন বলে জানান।

ছাত্রলীগ নেতা সিদ্দিকী নাজমুল আলম জানান, আমি ইতিবাচক রাজনীতি করি বলে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হ”েছ। আমি কাউকে বিয়ে করেনি। ছাত্রলীগের একটি অংশ পরিকল্পিতভাবে এসব কাজ করছে। আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন।



এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.