আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জোছনা ও জননীর গল্প: যে উপন্যাস পড়তেই হবে

নৌকা আর ধানের শীষে ভোট দিয়ে সোনার বাংলার খোয়াব দেখা আর মান্দার গাছ লাগিয়ে জলপাইর আশা করা একই! বিস্ময়ের ব্যাপার হল দিনের পর দিন আমরা তাই করছি!!

শীর্ষ লেখক হুমায়ন আহমেদ নানান কু-কর্ম করে ইতোমধ্যে কুখ্যাত হয়েছেন, যেমন ৩০বৎসরের দাম্পত্যর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে কন্যার বান্ধবী শাওনকে বিবাহ। হিমু, মিসির আলি ও অপরাপর ফুচকা, চিপস্‌ লিখে হয়েছেন জনপ্রিয়তম ও ব্যবসায়িক ভাবে সফলতম। কুখ্যাতি ও সুখ্যাতির এ কড়চার উর্ধে উঠে যদি প্রশ্ন হয়- একটি ভাল কাজের নাম বলুন যা হুমায়নকে চিরস্মরনীয় করে রাখবে? -জোছনা ও জননীর গল্প। ৫০৫ পৃষ্ঠার মোটাসোটা এ উপন্যাসটি প্রথমেই আলাদা চিকনা চাকনা টিপিক্যাল হুমায়নীয় উপন্যাস থেকে। গত এপ্রিলে কিনে পড়েছি গত ৩ দিনে- মোটা বইয়ের প্রতি ভীতিই এর কারন।

কি আছে এ বইতে? যথারীতি- তেমন কিছুই নেই! হুমায়ন আহমেদের বইতে খুঁজতে গেলে কিছুই পাওয়া যাবেনা। খুব জোগাড়যন্ত্র করে বললে যা হবে তা এরকম- মুক্তিযুদ্ধের প্রাক ও সময়কালীন কয়েকটি পরিবারের গল্প। ১৯৭০ এর শেষ থেকে ১৯৭১ এর ১৬ ডিসেম্বরে গল্পগুলো শেষ হয়ে যায়। ফাঁকে ফাঁকে কিছু তথ্য। খ্যাত অখ্যাত নানা মানুষের লেখা।

নীলগন্জ (ময়মনসিংহ) হাইস্কুলের শিক্ষক মাওলানা ইরতাজউদ্দিন কাসেমপুরী; তার ভাই শাহেদ, ঢাকায় কর্মরত; পিরোজপুরের পুলিশ অফিসার ফয়জুর রহমান ও তার পরিবার (লেখক পরিবার); ধান্ধাবাজ কবি কলিম, ভালো ছাত্র নাইমুল ও তাদের যোগসু্ত্র ধরে আরো অনেক মানুষের যুদ্ধকালীন গল্প। বিচ্ছিন্ন বা সম্পর্কিত এ মানুষগুলোর জীবনে তোলপাড় করা সময়টা কিভাবে বয়ে যায় তারই খেরোখাতা এ উপন্যাস। পড়তে পড়তে জানা হয়ে যায় পাক বাহিনীর নৃশংসতা, বকধার্মিকতা, ভেংগে পড়া, বাংগালীর সংশয়, ভীরুতা, সাহস। রাজাকার বৃত্তান্ত। দল বা মত বিশেষের প্রতি ঘৃনা বা পদলেহনের উর্ধে উঠে, সরকারী বেসরকারী ফায়দা হাসিল বা কাউকে কাবু করার হীন ব্যক্তি স্বার্থ হাসিলের প্রয়াস সম্পন্ন গৎবাধা ইতিহাস বইয়ের বাইরে জীবন্ত ১৯৭১ কে কেউ উপলব্ধি করতে চাইলে এ বই অবশ্য পাঠ্য।

শক্তিমান লেখক হুমায়নের তুলিতে তা বরারবের মত হালকা অথচ উপভোগ্যই থেকেছে। তবু কারো কারো চোখের জল ঝরতে পারে। মাঝে মাঝেই হাসতে পারেন অশ্রুরত ব্যক্তি। গ্রেট হুমায়ন, গ্রেট জোছনা ও জননীর গল্প।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।