আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এভাটার : এককালে হলিউড মুভি বানাইতো, আর এখন স্পেশাল এফেক্ট বানাইয়া মুভি নামে চালাইতে চায়

একটি ভীষণ না থাকাকে সঙ্গে নিয়ে প্রতি রাতে ঘুমাতে যাই

পুরা মুভিটাই এরকম, একটা রুমে বসে ১২ জন লোক কথা বলে। সাদাকালো। কতটা বোরিং মুভি হইতে পারে এটা? কিন্তু ৫৩ বছর আগে বানানো এই মুভিটা এখনও মানুষ দেখে, ব্লগে এটার রিভিউ পোস্ট হয়। শুধু মাত্র কথা দিয়ে যে কিভাবে মানুষকে টেনে রাখা যায় তার একটা উদাহরন 12 Angry Men। সিরিয়াসলি, এখন এসব মুভি হয় না কেন? এখনকার বন্ডগুলা বেশি একশন দেখাতে গিয়ে নিজেদের অভিনয় দেখানোর সুযোগ পায় না।

যা বলতেছিলাম, এভাটার। ৯টা অস্কার নমিনেশন পাওয়া ২৮০,০০০,০০০ ডলারের এই মুভিটা ৩ রাত ধরে ডাউনলোডের পর ২ গিগা ডিভিডি(১) নামিয়ে দেখলাম। মুভির প্রত্যেকটা ভিজুয়াল এফেক্ট বিস্ময়কর। বিশেষ করে শুধুমাত্র মুভির জন্য একটা সম্পূর্ন আলাদা দুনিয়া প্যান্ডোরা বানানো হইছে, যেখানের ভাষা আলাদা, প্রকৃতি আলাদা। বাইরে থেকে ২টা ভাষাবিদ ভাড়া এনে এমনভাবে প্যান্ডোরার ভাষা বানানো হইছে যেনো অভিনেতারা সহজেই শব্দগুলা উচ্চারন করতে পারে আবার এই ভাষা যেনো পৃথিবীর অন্য কোনো ভাষার সাথে মিলে না যায়।

প্যান্ডোরা ভাষায় ১০০০ এর মত শব্দ আছে। মুভি রিলিজের আগে নেট থেকে এভাটার মেকিং(২) নামিয়ে দেখছিলাম। এটার মেকিং নিয়া কথা বলতে গেলে পুরা আরেকটা পোস্ট লিখা লাগবে। টেকনোলজির এই এচিভমেন্ট আর ইনোভেশন দেখে আমি অবাক হইছি আর ভালো লাগতেছিলো নিজেকে এই যুগের একজন ভেবে। না দেখে থাকলে বুঝবেন না, কিন্তু ড্যান্সেস উইথ দি উল্ভস মুভির সাথে এই মুভির অনেক মিল আছে, পার্থ্ক্য হলো, ড্যান্সেস উইথ দি উল্ভস দেখতে থ্রিডি গ্লাস লাগে না।

মুভির কাহিনী, স্ক্রিপ্ট, ডায়ালগ খুবই নিম্ন মানের। বুঝতেছিনা এই লোকটাই কি টারমিনেটর ২ বানাইছিলো নাকি? আর সবজায়গাতেই যদি সিজিআই এফেক্ট ব্যাবহার করা হয়, তাইলে আর রক্ত মাংসের অভিনেতা কি দরকার? এর চেয়ে "আপ" মুভির ছোট বাচ্চাটা ভালো অভিনয় করছে। ২০ বছর পর আরো "ওয়াও!" টাইপের নতুন টেকনোলজি আসবে, তখন এরচেয়ে বেশি ভালো মুভি হবে। তখন কেউ এভাটারের নাম বলবে না। কিন্তু ১৯৩৯ সালের গন উইথ দা উইন্ডের কথা এখনও মানুষের (যেমন আমার বাবা) মুখে শোনা যায়।

২১৫৪ সালে বিজ্ঞান হয়তো আপনার এভাটার ক্লোন বানাতে পারবে যেখানে আপনার ব্রেইন সিগনাল পাস করা যাবে, কিন্তু আপনি লুলা হলে আপনাকে সেই আদিকালের হুইল চেয়ারেই বসে থাকা লাগবে। বিজ্ঞান এখানে অসহায়। শিট/বিচ শব্দগুলা থাকা সত্ত্বেও এই মুভি PG-13 রেটিং কিভাবে পায়? আসেন, ব্যাপারটাকে একটু অন্যভাবে দেখি। পাইরেটবে, স্টেজভু বা ওয়ানক্লিকমুভির মত সাইট থাকতে আজকাল কেউ আর হলে গিয়া মুভি দেখে না। মুভি ইন্ডাস্ট্রি তাই চিন্তা ভাবনা করে এমন এক মুভি বানাইলো যেটায় কাহিনী-স্ক্রিপ্ট কিছু না থাকলেও উচ্চমানের সিজিআই, থ্রিডি, আইম্যাক্স, আল্ট্রা মেগা রিয়েলস্টিক সিন আছে।

ব্যাস, পাবলিক তো ঘরে বসে এগুলার মজা নিতে পারবে না। এইখানে কিং অফ দ্যা ওয়ার্ল্ড(৩) জেমস ক্যামেরুন একবারেই সফল। আর সাথে টাকা কামাই তো আছেই। কিন্তু ওদের বিজনেস পলিসি তো আমি ভেজে খাই না। আমার দরকার মুভি, মুভির মত মুভি।

এভাটার একটা পর্নো মুভি। পার্থক্য - এইখানে আমরা চোখের মেহন করি। যতক্ষন দেখি, ততক্ষন আরাম লাগে। হল থেকে বের হয়ে আসলে সব শেষ। মনে রাখার মত কিছুই নাই।

সিন্ডলার্স লিস্ট, ক্রাশ, মিলিয়ন ডলার বেবি, ব্রিজ অন দা রিভার কেওয়াই বা গডফাদারের মত মুভিও অস্কার পাইছিলো। আশা করি এবারও একাডেমি আমাদের নিরাশ করবে না। ~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~ নির্ঘন্ট : (১) ডিভিডি স্ক্রিনার হলেও কোয়ালিটি একেবারেই ডিভিডির মত। কোনো ওয়াটারমার্ক নাই। নাফিস ইফতেখারকে ধন্যবাদ এটার টরেন্ট লিংক দেয়ার জন্য।

আপনিও নামাতে পারেন। নামানোর আগে সন্দেহ হলে স্ক্রিনশট ইমেজ বা ১৭ মেগার স্যাম্পল ভিডিও নামিয়ে দেখতে পারেন। লিংক: Click This Link (২) ডাউনলোড করুন ১০০ মেগার দ্যা মেকিং অফ এভাটার। মিডিয়াফায়ার লিংক। http://www.mediafire.com/?wazny2kommn (৩) ১৯৯৭ সালে জেমস ক্যামেরুন অস্কার স্টেজে বলছিলো, "I'm king of the world!"


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।