আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ধর্ষণের অভিযোগে চমেক ছাত্রলীগের চার নেতা-কর্মীর ছাত্রত্ব বাতিল।


অজ্ঞাত তরুনীকে ধর্ষণের অভিযোগে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ছাত্র লীগের চার নেতাকর্মীর ছাত্রত্ব সাময়িকভাবে বাতিল করা হয়েছে। তাদেরকে ছাত্রলীগ থেকেও বহিস্কার করা হয়েছে। গতকাল চমেক ডিসিপ্লিনারি কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাদের ছাত্রত্ব বাতিল করা হয়। গতকালও চমেকে দু’গ্রুপের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে দু’ছাত্র আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।

এদিকে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত চার ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে আজীবন বহিস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা গতকাল চমেক ক্যাম্পাসে মিছিল অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে। সকাল ১১টা থেকে শুরু হয়ে বিকাল ৩টা পর্য ন্ত ৪ ঘন্টা ব্যাপী এ প্রতিবাদ কর্মসূচিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ দেখা যায়। এ সময় চমেক ইতিহাসে প্রথমবারের মত অনুষ্ঠিত ডিসিপ্লিনারী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভাশেষে কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. ইমরান বিন ইউনুস আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে জানান, অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা নিজেদের নির্দোষ প্রমানের আগ পর্যন্ত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে তাদেরকে সাময়িক বহিস্কার করা হয়েছে। অজ্ঞাত তরুনীকে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত চার শিক্ষার্থী হলো চমেক ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ৫০ তম এমবিবিএস এর কাজী মো. ফয়সাল, আসিবুল আলম লিমন এবং ছাত্রলীগ কর্মী ৫১ তম এমবিবিএস এর এস.এম. সোহাগ ও ৫২ তম এমবিবিএস ১ম বর্ষের ছাত্র রাব্বি।

গতকাল সকাল ১১টায় মৌন মিছিলের মাধ্যমে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি পরবর্তীতে গিয়ে বিক্ষোভ মিছিলে রূপান্তরিত হয়। এতে ছাত্রীদের বিপুল অংশ গ্রহণ ছিল। বিক্ষোভ মিছিল শেষে এক সমাবেশে শিক্ষার্থীরা ধর্ষকদের বিচারের দাবিতে ক্ষোভে ফেটে পড়ে। দ্বিতীয় বর্ষের নাদিমের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা জানান, এক তরুনীকে গত বৃহস্পতিবার রাতে চমেক এর চার শিক্ষার্থী উপর্যুপরি ধর্ষণ করে। ধর্ষকদের স্বীকারোক্তির মাধ্যমে এর প্রমান পাওয়া গেছে।

তাদেরকে ক্যাম্পাস থেকে বহিস্কার এবং আজীবন ছাত্রত্ব বাতিলের দাবি জানান তারা। সমাবেশে চমেক ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক বি.এম. ফাহাদ নাছিফ জানান, ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্তরা ছাত্রলীগের নেতাকর্মী হলেও অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের কলেজ থেকে আজীবনের জন্য বহিস্কার করতে হবে। এদিকে সভাপতি তানভীর আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক বিএম ফাহাদ নাছিফ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে সহ-সম্পাদক কাজী মো. ফয়সাল ও আসিবুল আলম লিমনকে সংগঠনের শৃংখলা পরিপন্থী ও অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ছাত্রলীগ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বহিস্কার ও সদস্যপদ বাতিলের কথা জানানো হয়েছে। বেলা ১২টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সেলিম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর প্রতিবাদ সমাবেশে এসে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে জানান, আমরা মৌখিকভাবে জানি। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ইতিহাসে এটা একটা মারাত্মক ঘটনা।

যারাই অপরাধ করুক ধামাচাপা দেয়ার কোন অবস্থা নেই। চমেক ডিসিপ্লিনারি কমিটিতে এ নিয়ে বিস্তারিত তদন্ত হবে বলে তিনি জানান। পরে বেলা ১ টার দিকে চমেক ডিসিপ্লিনারি কমিটির মিটিং শুরু হলে চমেক ছাত্রলীগ সভাকক্ষ অবরোধ করে। এ সময় এতে কলেজের অন্যান্য শিক্ষার্থীরাও এসে যোগ দেয়। বেলা আড়াইটার দিকে চমেক একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য ও নেফ্রোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. ইমরান বিন ইউনুস জানান, ডিসিপ্লিনারি কাউন্সিলের প্রতিবেদনে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে, ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্তদের পক্ষে সাফাই গাইতে গিয়ে গতকাল বেলা ২টার দিকে চমেক ছাত্রলীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অরুপ কুমার দাশ ও সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ইকতিয়ার ইরফান শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়ে। এ সময় ছাত্রলীগের অন্য পক্ষের কর্মীরা তাদের মারধর করে।
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.