আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শিক্ষার নামে প্রতারনা !!--- হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা।। প্রতিকার নেই কি ??

আমি কিছু বলতে চাই...........

খালেদুর রহমান শাকিল, ঢাকা ২৩ই ফেব্রুয়ারী ২০১০: শিক্ষার কথা শুনে আসছি ছোটবেলা থেকেই। মা- বাবার বকুনি খেয়ে পড়ালেখা শেষ করি দেশের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। শহর ও গ্রাম থেকে ছুটে আসা হাজারও শিক্ষার্থী আজ পথ হারিয়ে বে-পথে চলে যাচ্ছে অর্থ উপার্জনের তাগিদে। আর এই সুক্ষ বিষয়টির যথাযথ সুযোগ নিচ্ছে এক প্রকার স্বার্থান্নেসি মহল। এমনি একটি ঘটনার আবির্ভাবে শিক্ষার নামে খুলে বসে এক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান তাও শহরের ব্যস্ততম এলাকায় এক সপিং মলের কয়েকটি দোকান ভাড়া নিয়ে।

প্রতিষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলতে গেলে বিষয়টির যথাযথ ব্যখ্যা দিতে ব্যর্থ হন তাহারা। তাদের কারো কারো মতে এটি একটি মাল্টি লেভেল মার্কেটিং কোম্পানী। আবার কেউ কেউ বলছেন এটি একটি আইটি ট্রেইনিং ইনিস্টিটিউট কোম্পানী। তাদেরকে আমি একটি প্রশ্ন করলাম যে, আসলে আপনারা যে ব্যবসায়টা করছেন এতে আপনাদের কাছে সরকারের এমন কি কোন মন্ত্রনালয়ের অনুমোদন, ক্লিয়ারেন্স বা লাইসেন্স আছে কি না? উত্তরটা খুব সহজেই তাদের একজন বড় গলায় বললেন হ্যা আমাদের কোম্পানীর নাম Bravo IT LTD. (বসুন্ধরা সিটি সপিং মলের কয়েকটি দোকান ভাড়াকৃত) আমাদের ট্রেড লাইসেন্স ও আছে। যা হোক আরো কিছু আমার জানার দরকার ছিল কিন্তু কি আর করা তারা আর আমার সাথে কথা বলতে নারাজ।

কোম্পানী সম্পর্কে বেশি কিছু জানতে হলে আমাকে তাদের মেম্বর হতে হবে, তা না হলে জানার অধিকার টুকু আমার বোধ হয় এখানেই সীমাবদ্ধ। কিছুক্ষনের মধ্যেই আমাকে নিয়ে যাওয়া হলো অনাদের স্পেশাল কাউন্সিলিং রুমে, যথারিত আমি হাজির। অনাদের একজন নির্দিষ্ট মার্কেটিং লিডার আসলেন আমাকে আদের প্রোডাক্ট সম্পর্কে ব্রিফিং দেওয়ার জন্য। তাহার বৃহৎ বক্তব্যে আমি যা বুঝলাম, তাদের প্রোডাক্ট হলো আইটি (অফিস এক্সপি, গ্রাফিক্স, স্পোকেন ও ফ্রি ইন্টারনেট ব্রাউজিং) ট্রেইনিং ফর থ্রি মান্থ'স। আর এর জন্য তাহারা মেম্বর ফি নিচ্ছেন ৫০০০ টাকা মাত্র।

এবং এর সাথে রয়েছে স্টুডেন্ট বিজনেজ এর মানে একজন স্টুডেন্ট এনে মেম্বর করাতে পারলে নগদ ৫০০ টাকা আর যে একবার মেম্বর হবে সে পাবে লাইফ টাইম ইনকাম এ্যাচিভমেন্ট এর সুযোগ যেমন যে মেম্বর হয়েছেন তার নিচে ২জন মেম্বর করাতে এবং সেই ২ জনের নিচে আরো ৪জন মেম্বর করাতে পারলে টোটাল ১৪০০ টাকা ওয়ান টাইম সে পাবেন আর এভাবে প্রতি ৬ জন মেম্বর কালেক্ট করতে পারলে একই টাকা তাহাকে প্রদান করা হবে। এভাবে একের পর এক মেম্বর করানোর জন্য স্পেশাল ট্রেইনিং এর ব্যবস্থাও আছে তাদের সেই সপিং মলে ভাড়াকৃত দোকান ঘরটিতে। আর এভাবে সরকারের শিক্ষার কোন নিয়ম নীতি না মেনেই তারা গত ১ বছরে হাতিয়ে নেয় অবুঝ শিক্ষার্থীদের হাত থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা। জানা গেছে বর্তমানে তাদের এই মেম্বরদের সংখ্যা ৭০০০ ছাড়িয়ে গেছে ও দিন দিন আরো মেম্বর কালেক্ট এর প্রক্রিয়ায় সক্রিয় হয়ে তারা কাজ করছে। আর এ ব্যপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তেমন কোন মাথা ব্যথা নেই।

শিক্ষার নামে শিক্ষার্থীদের ব্যবসা সেখানো হচ্ছে। আর এসব শিক্ষার্থীদের সিংহভাগই ঢাকার বাইরে কোম্পানীর ব্রাঞ্চ হিসাবে এই ব্যবসায় শুরু করার জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা অগ্রিম প্রদান করছে উক্ত প্রতিষ্ঠানকেই সাথে ব্রাঞ্চটির যাবতীয় খরচের ব্যয় ভার বহন করতে হচ্ছে এই শিক্ষার্থীকেই। একটি পরিসংখানে দেখা যায় ঢাকার বাইরে ব্রাঞ্চ ওপেন করার প্রথম শর্ত হল উক্ত প্রতিষ্ঠান থেকে অগ্রিম বাবদ ৫০০০ টাকার ১০০টি মেম্বর কার্ড ক্রয় করতে হবে আর ব্রাঞ্চ অফিস যেন খুবই জাক জমক হয় আর তাতে আনুমানিক খরচ হতে পারে প্রায় ১৫ - ২০ লক্ষ টাকার। শুধু তাই নয় অফিস পরিচালনার সকল খরচ সহ এই পুরো ব্যয় ভার বহন করতে হবে সেই শিক্ষার্থীকেই যাকে ব্রঞ্চ ওপেন করার জন্য উদ্বুদ্ধ করা হচ্চে তাদেরই স্পেশাল ট্রেইনিংয়ের মাধ্যমে। আর এ বিপুল পরিমান অর্থের জোগাড়ে মরিয়া হয়ে ছুটে বেড়াচ্ছে এসব শিক্ষার্থীরা কেউ পরিবিরের জমানো তহবিল, কেই জমি-জমা বিক্রি করে আবার কেউবা চড়া চক্র বৃদ্ধি হারে সুদে লক্ষ লক্ষ টাকা এনে সরণাপন্য হচ্ছে উক্ত প্রতিষ্ঠানটির রাহুগ্রাসে।

এর কি কোন প্রতিকার নেই ????? জাতির বিবেকের কাছে বর্তমান প্রজম্নের আজ এই প্রশ্ন?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.