আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

...........প্রসব বেদনা......

বাংলার আলো-জলে ধূলো মেখে বেড়ে ওঠা মুক্তি

তীব্র ঘুম থেকে ওঠার পর যখন ঝলমলে রোদ আমার দৃষ্টিসীমাকে চকিত সম্মোহিত করে যায়, পুকুরের শান্ত জলের ঢেউ ছুঁয়ে উঠে আসা ফাগুনী হাওয়া বাগানের সৌরভে দোলা খেয়ে এসে আছড়ে পড়ে আমার খোলা দরজায় । বসন্ত হাওয়ার ঝাপটায় আমি বিমোহিত হয়ে থাকি ক্ষণিক সময়। তারপর খালি পায়ে রুম থেকে কয়েক পা এগিয়েই বারান্দার গ্রীল ধরে শীত শেষের মিষ্টি রোদ। আমার ক্ষণিক অংশে রৌদ্র খেলে যায়। আমার মুখে , আমার হাতে , আমার কমলা রঙের টি-শার্টে খেলে যায় কোমল রোদ।

আমি মুগ্ধ হয়ে দেখি বিশাল পুকুরের বুকে ছোট ছোট ঢেউ খেলে যায় সূর্যের সাথে মরিচীকা খেলা। ঢাকা শহরের তীব্র শব্দে আমি বহুদিন শুনিনি বাতাসের শো শো , পাতার সাথে পাতার স্পর্শ, , চারপাশে মাথা দুলিয়ে বৃক্ষরাজির ফিসফাস , নিবিড় আহ্লাদি । ইদানিং তা শুনতে শুরু করেছি । এখন শুনছি তীব্র দুপুরে । কয়েকদিন আগে প্রথম শুনেছি মধ্য রাতে।

কী স্নিগ্ধ শান্ত রাত। তখন হিমেল বাতাসের কোমল ঝাপটা আমার প্রাণ শক্তিকে বাড়িয়ে দেয় অনেক বেশী। শান্ত , সবুজ ও সুন্দরের যে ঝাপটাগুলো আমার মুখাবয়বকে ভিজিয়ে দিয়ে যায় আমি তাকে সঙ্গায়িত করতে পারি না। আমি তার কোন সুবাস পাই না। আমি স্পর্শ করতে পারি না।

আমি শুধু খাঁবি খাচ্ছি নিরিবিলি বায়ু সাগরে । মাঝে মাঝে কিছু উত্তাল ঢেউ আমার চুলগুলো এলোমেলো করে দিয়ে যায়। শিরশিরিয়ে যায় আমার কোমল ত্বক। আমার দৃষ্টি হার মেনেছে। আমি খুঁজে পাই না, আমি দেখি না সেই মোহনীয় বাতাসের অস্তিত্ব।

আমি পীড়াগ্রস্ত হই। হাহাকার করতে থাকে আমার ভিতর। আর্তনাদ সৃষ্টি হয় । তীব্র শূণ্যতায় খাঁ খাঁ করতে থাকে আমার ভিতরটা । অগ্নুতপাত শুরু হয়।

আমি জানি আমি অনুভূতিকে কখনো সঙ্গার কাঠামোতে রুপ দিতে পারব না, যা পারেনি কেউ আগে। আমি ছুঁয়ে দিতে পারিনি অদৃশ্য অনুভবগুলোকে যারা আমাকে ছুঁয়ে যায় প্রতিনিয়ত। তবে সৃষ্টির যে তীব প্রসব বেদনা শুরু হয়েছে ভিতরে তা উদগীরণ করতেই হবে। সৃষ্টি খেলায় মেতে উঠব শীঘ্রই। কারণ যে কোন সময় শেষ হয়ে যেতে পারে শেক্সপীয়ারের এই ম্যাটিনি শো.............. all the words a stage / and men and women are marely players. আমি বোঝাতে পারি না সৃষ্টির এই অপার্থিব রূপ।

আমি শুধু অনুভব করি রবীন্দ্রনাথের মতো - আঁখি দিয়ে অঁখির সুধা পিয়ে / হৃদয় দিয়ে হৃদি অনুভব / আঁধারে মিছে আর সব । কবিগুরুকে আমি অন্যদের মতো দেবতা মানিনা। তবে তার কিছু সৃষ্টি কেবল কচিত ছুঁয়ে যায় আমাকে। আমি অনুভব করি অস্তিত্ব বিশাল বাংলার সবুজে ঘাসফুল , শিশির কিংবা নিদারুন উদভ্রান্ত এলোমেলো হাওয়ায়। পুরনো গাছের শ্যাওলা পড়ে যাওয়া ময়লা রং আমাকে মুগ্ধ করে।

আমি শুঁকে দেখতে চাই সৃষ্টির গন্ধ। (চলবে)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।