আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার ভীনদেশী! এক পাগলি বান্ধবী যাকে খুব মিস করছি।

Only I know what is my goal, My heart is my temple.

দুই বছর হলো পাগলি বান্ধবিটার সঙ্গে আমার পরিচয় । পরিচয়টা ইন্টারনেটেই । ওর বাড়ি ফিলিপাইন। আইনে স্নতোকোত্তর। আমি ফিলিপাইনের একজন ব্যক্তির বৃত্তান্ত খুজঁছিলাম।

ওই ব্যক্তি অষ্ট্রেলিয়াতে একজন বাংলাদেশী মেয়ের সঙ্গে প্রেম করেছিল। ওই ঘরে একটি সন্তান ও রয়েছে। মেয়েটির সঙ্গে ঘটনাক্রমে আমার পরিচয় হয়েছিল। ওই মেয়েকে সাহায্য করতেই ফিলিপাইনে আমি বন্ধুত্বের বিশাল এক নেটওয়ার্ক তৈরী করেছিলাম। আমি ট্যাগডসহ বিভিন্ন চ্যাটিং সাইটে জানতে চাইতাম ফিলিপাইনে এমন কি কেউ আছেন যিনি পারসোনাল সিকিউরিটি সিস্টেমে চাকরি করেন? কাউকে পাইনি।

অবশেষে একটি মেয়ের সঙ্গে নেটে কথা হলো। প্রথমে কয়েকদিন ধরেই হাই হ্যালো। কে কি করি তা কয়েকদিন পর জানলাম। কয়েকদিন পর আমি তাকে বললাম আমি বাংলাদেশের সাংবাদিক। আমার পেশাটা শুনেই সে উদ্বিগ্ন হয়ে গেলো।

কারণ ওইদিনই ফিলিপাইনের একজন সাংবাদিককে মেরে ফেলা হয়েছিল। তার পেশা কি আমি জানতে চাইনি। ভাবলাম আইন পেশাই হবে। একদিন জানতে পারি সে ফিলিপাইনি নাগরিকদের বৃত্তান্ত নিয়ে যে ডাটাবেজ তাতে চাকুরি করে। সে একজন তদন্তকারী কর্মকর্তা।

না চাইতেই যেন হাতে চাঁদ পেলাম। ওই দেশের জাতীয় নাগরিকদের পরিচয়পত্রে কোন ভুল তথ্য দিয়েছে কিনা তা তদন্ত করাই তার কাজ। আমাদের দেশে একবছর হলো এধরনের একটি ডাটাবেজ তৈরী করা হয়েছে। তবে তা অসম্পূর্ণ। ওই ডাটাবেজে নাম বাবার নাম বা লোকেশন দিয়ে সার্চ দিলেই ওই ব্যক্তির পুরো ঠিকানা ভেসে ওঠে।

মনে মনে বললাম বাংলাদেশে যে কবে এ ধরনের সিস্টেম চালু হবে। ফিলিপিন চালু করতে পারলে আমরা পারবোনা কেন? ওহ আমার ফিলিপিনো বান্ধবীটার নামটাইতো বলা হয়নি। ওর নাম রোনিলা বোরয়া। আমি ডাকি নীলা। নীলা আমার বান্ধাবী বলেন বোন বলেন সবই।

আমার সবচাইতে প্রিয় বান্ধবী। তার সঙ্গে নেটে পরিচয় হলেও একসময় তা মোবাইল ফোন পর্যন্ত গড়ালো। নীলাই ফোন দেয়। প্রতিদিন না হলেও সপ্তাহে দু তিনবার। আমি ভাবি সারা বিশ্বের মেয়েরা মনে হয় একই রকমের।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়ও আমার বান্ধবিদের চোখে মুখে আমাকে নিয়ে উদ্বিগ্নতা দেখেছি। হলে বা ক্যাম্পাসে কোন গন্ডগোল হলেই আর রক্ষা নেই। কয়েকজনতো সূর্যসেন হলে পর্যন্ত চলে আসতো। ভাবতো আমি সাংবাদিকতা করি অনেক ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে লিখেছি। আমাকে ওরা গন্ডোগলের সুযোগে ধরাশায়ী করে দেবে।

আমি হাসতাম ওদের কথা শুনে। আমার হাসি দেখে ছাত্রনেতারা মারবে কি ওরাই ধুমধাম লাগিয়ে দিতো। নীলার কোন ভাই নেই। ওরা দুই বোন। নীলা বড়।

ছোট বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। তার একটা মেয়ে হয়েছে। আমরা ডাকি লিটল এ্যাঞ্জেল। সংক্ষেপে এলটি। কোন ভাই নেই।

আমারও কোন বোন নেই। কোথায় বাংলাদেশ আর কোথায় ফিলিপাইন? দুই দেশের দুইজন মানুষ আমরা একই পরিবারের সদস্য হয়ে গেলাম। আমি তাকে বাংলা শেখাই। নিজেও ফিলিপিনো শিখি। তার বুড়ো ললা মানে দাদীকে বলি, কামুস্তা কা? মহাল না মহাল কিতা।

শুনে খিলখিলিয়ে আমাদের দেশের বুড়িদের মতোই হাসতে থাকেন তিনি। লজ্জায় লাল হয়ে মাতালিনো বলে রেখে দেন। কয়েকদিন আগে ফিলিপাইনে বন্যা হলো। রাজধানী ম্যানিলা ডুবে যায়। তার কোন সংবাদ পাচ্ছিলামনা।

আমার সে যে কি চিন্তা। কি করবো ভেবে ভেবে সারা। ও নিজেও জানতো আমি ওকে নিয়ে খুব টেনশনে। যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর ও আমাকেই আগে ফোন করেছে। নীলা একদিন জানায় ওর সঙ্গে একটি ছেলের পরিচয় হয়েছে।

ছেলেটা ভারতীয়। বিহারের জামশেদপুর বাড়ি। তাও ইন্টানেটে। আমাকে বলে ওর সঙ্গে কথা বলো। আমি কথা বললাম।

ছেলে ভালোই। উচ্চ শিক্ষিত। আমি বললাম কথা চালিয়ে যেতে পারো। গত বছর নীলা আমাকে জানায় ওই ছেলে তাকে বিয়ে করতে চায়। আমি বললাম ভালো কথা।

নীলা জানায়, ইন্টারনেটে পরিচয়। মিথ্যাওতো হতে পারে। আরো কয়কটি বিয়েওতো করে থাকেত পারে। আমি বললাম খবর নিচ্ছি। সঙ্গে সঙ্গে আমার ভারতীয় সাংবাদিক বন্ধুদের ঠিকানা দিয়ে সংবাদ জানাতে বললাম।

কলকাতার সংবাদ প্রতিদিনের একজন সাংবাদিক আমাকে সহায়তা করলেন। গ্রিন সিগনাল পাঠিয়ে দিলাম ফিলিপাইনে। কিন্তু বাধ সাধে নীলার পরিবার। তারা তার মেয়েকে খ্রীষ্টান থেকে হিন্দু হতে দেবেনা। ছেলেকেই খ্রীস্টান হতে হবে।

পরে আমিই কথা বললাম নীলার বাবা মায়ের সঙ্গে। খুব ভদ্র তারা। বললাম ভারতীয়রা একজন বউ নিয়েই সারা জীবন কাটায়। সুতরাং ভয়ের কোন কারণ নেই। একসময় আগুন কোমল হয়ে আসে।

গত ২৫ ডিসেম্বর শ্রী ফিলিপিনে যান। গিয়েই আমার সঙ্গে কথা বলেন। দুজন একসঙ্গে ক্যামেরার সামনে বসে আমাকে দাওয়াত দেন। ২৫ ডিসেম্বর বড় দিন তারা একসঙ্গে উদযাপন করে। শ্রী ভালো গান ।

নীলাকে আমি বলি বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মানুষ। আমেরিকার উপনিবেশ থাকার কারণে পুরো ফিলিপিনোরা আমেরিকার স্টাইলে চলে। আমরা যেমন বৃটেনের স্টাইলে। ক্রিকেট কি জানেনা। প্রথম বলে ঝিঝি পোকা।

আমি তো হেসে খুন। ও আমার হাসি দেখে বোকা বনে যায়। ইন্টারনেট ঘেটে একসময় বলে এটা একটা খেলা বটে তবে তা বেস বলের মতো। আমি আরো জোরে হাসি। ও রেগে যায়।

নীলা হোমিওপ্যাথি বুঝেনা। কারণ ওই দেশে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা কেউ করেনা। কবিতার বই কোন প্রকাশক ছাপেনা। যদিও দু একজন কবিতা লেখেন তারা নিজের পয়সায় দু একটি কবিতার বই ছাপান। লোকজন স্থানীয় ভাষা ট্যাগালগের চাইতে ইংরেজী বেশি জানে।

বাচ্চারাও মায়ের কাছ থেকে ইংরেজী শিখে। আমি তাকে বলিউডর কথা বলেছিলাম। শাহারুখ খান কষ্টই পেতে পারেন। কারণ ফিলিপাইনে কেউ তাদের চিনেনা। তবে স্লামডগ মিলোনিয়ার দেখে নীলার বলিউড সম্পর্কে ধারণা হয়েছে।

জয় হো গানটাও গাইতে পারে। আগামী এপ্রিলে আমার প্রিয় বান্ধবী নীলার বিয়ে হবে। তবে ওরা এখনও ঝগড়া করে। কোথায় সেটেল হবে তা নিয়ে। শ্রী বলে ফিলিপাইন একটা দেশ হলো? ইন্ডিয়ার সঙ্গে তুলনা হয়না।

ভারতের সঙ্গে সারা পৃথিবীর যোগাযোগ। আমি বলেছি এ নিয়ে ঝগড়া করার কিছু নেই। বিয়ের পর সিদ্ধান্ত হোক। তবে নীলার সরকারী চাকরি রয়েছে। ফিলিপাইনে সরকারী চাকরিজীবীরা অনেক বেতন পায়।

এটা ছেড়ে দেয়া ঠিক হবেনা। নীলা আমার জন্য অনেক উপহার পাঠিয়েছে। বলেছে, আমার জন্য ড্রাই ম্যাংগো রেখে দিয়েছে। আমি বুঝলাম ওই জিনিসটা আমের আচার হবে। আমি বলছি আমাদের দেশে আমের অভাব নেই।

আমার আম্মুতো আচার বানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে পর্যন্ত পাঠাতেন। আমি আজ পর্যন্ত ওর জন্য আমার হাতে একটি আঁকা ছবিই পাঠিয়েছি। ও সেটার কপি করে অফিসের ডেস্কে পর্যন্ত একটা রেখে দিয়েছে। আগামী এপ্রিল মাসে আমার নীলার বিয়ে হবে। আমি ভাবছি ওর বিয়ে হবে বাঙালি নারীদের মতো লাল টুকটুক শাড়ি পড়ে।

আমাকে বলছে বিয়েতে থাকতেই হবে। কিন্তু আমার যে চাকরি। একদিনের জন্য বরিশাল যাবো তারও কোন উপায় নেই। বছরে ঈদেও তিনদিন ছুটি দিতে চায়না মালিকপক্ষ। এর মধ্যে কয়েকজন আতেল বলতে শুরু করেছেন, সাংবাদিকরা ছুটিতে থাকলে নাকি তথ্যের অবাধ প্রবাহ ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

সংবাদপত্র ছাপা না হলে দেশে অপরাধ বেড়ে যায়। মাঝে মাঝে ভাবি আমরা আসলে মানুষ না কি সাংবাদিক! নীলার পাগলামি নিয়ে আর কি বলবো। সে আমার নামে ওয়েব সাইট তৈরী করেছে। আমাকে নিয়ে শক্ত ইংরেজীতে কবিতা লিখেছে। আমি বলি আমি একজন সাধারণ মানুষ।

দেশের কেউ আামকে চিনেওনা। ও বলে তুমি একজন আর্টিস্ট। পাচঁটি ভাষা জানো। আমার বিশ্বাস মানুষ তোমাকে একদিন চিনবে। তখন আমাকে ভুলে যেওনা।

আমি বলি তোমাকে ভুলে যাওয়াটাই দরকার। অনেকদিন ধরে ভাবছি আমার প্রিয় এ মানুষটিকে নিয়ে আমি লিখবো। কিন্তু ব্যস্ততার কারণে লেখা হয়নি। এত দুরে বসেও যার টান অনুভব করি, যার ভালোবাসায় ধন্য হলো একজন বঙ্গসন্তান। সেতো ভিনদেশী হতে পারেনা।

আমি ওকে এদেশের অনেক কিছু শিখিয়েছি। নীলা এখন এ দেশের সবকিছুই জানে। এমনকি “হালার পুত হালা” গালিও জানে। প্রথম দিন শুনে বলেছিল, হোয়াট ডাজ ইট মিন? আমি বললাম ইট মিনস- ইউ আর মাই ব্রাদার ইন ল এন্ড ইয়োর ফাদার ওয়াজ অলসো মাই ব্রাদার ইন ল। নীলা, এমন সম্পর্কের কথা শুনে অবাক হয়ে গিয়েছিলো।

জিজ্ঞাসা করেছিলো, হাউ ইজ ইট পসিবল? আমি আর কি বলবো ? বললাম, এভরিথিং ইজ পসিবল ইন আওয়ার কান্ট্রি। নীলা ও শ্রী। শ্রী ফিলিপিনে যাওয়ার পর এ যুগল ছবি তুলে পাঠিয়েছে| আমাকে নিয়ে লেখা নীলার একটি কবিতা Your kind heartness exudes even beyond the mazed of wires Unhindered by the impossibility of actual presence Bridging the bodies of water that comes between us. Your sincerity is so serene Unconditionally, offering genuine, taking time and effort to share the goodness of the heart Something far beyond what material things can offer. Your character stands out from the rest: Sturdy resolution for a commitment to profession Ardent desire for truth Empathy in words uttered, and Magnificent understanding for humanity. I wish you excellence In time, to be known and adored not just by me, your family and your country but also, of the world. Capitalized on your eloquence Hold on to your dreams And, BELIEVE IN YOURSELF, As, we do believe in you. For being awarded with someone so real as you, I swear to the trees, the water, and the flowers That I will take the cudgel to ensure that Our Friendship will be evergreen. বিয়েতে থাকতে পারবেনা তা সে জানতে পেরেছে। এবার কি অনুরোধ করছে দেখুন। fascinatingfaith (2/7/10 10:11 PM): can i ask a request fascinatingfaith (2/7/10 10:11 PM): please send me a video of your wishes to me and sri for the wedding fascinatingfaith (2/7/10 10:11 PM): so i can show to all the guest that i have my best friend foreigner in bangladesh fascinatingfaith (2/7/10 10:11 PM): its just a request. আপনারা আমার নীলার জন্য দোয়া করবেন।

Click This Link

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।