আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গণেশ হালুইয়ের রং-রেখায় নিসর্গের সৌন্দর্য

প্রকৃতির অন্তর্গত সৌন্দর্যকে রঙে-রেখায় উদ্ভাসিত করে তোলেন ভারতের সমকালীন অগ্রগণ্য শিল্পী গণেশ হালুই। জন্ম তাঁর বাংলাদেশেই, ময়মনসিংহের জামালপুরে। দেশভাগের পর সপরিবারে চলে যান কলকাতায়। তবে জন্মভূমির কথা ভুলতে পারেননি। বিভিন্ন সময়ে নানা উপলক্ষে এসেছেন এখানে।

এবার ঢাকায় তাঁর প্রথম একক চারুকলা প্রদর্শনী হচ্ছে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় ধানমন্ডির বেঙ্গল গ্যালারিতে ‘বাস্তবের ছন্দ’ নামের ১২ দিনের এই প্রদর্শনী শুরু হয়েছে।
বেঙ্গল গ্যালারি অব ফাইন আর্টস ও কলকাতার আকার প্রকার গ্যালারির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই প্রদর্শনীর সহায়তা দিচ্ছে প্রথম আলো। সংস্কৃতিমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ প্রধান অতিথি হিসেবে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে ভারতের হাইকমিশনার পঙ্কজ সরন ও বরেণ্য শিল্পী রফিকুন নবী।

আলোচনায় অংশ নেন আকার প্রকার গ্যালারির পরিচালক রিনা লাথ ও বেঙ্গল গ্যালারির পরিচালক সুবীর চৌধুরী। শিল্পী গণেশ হালুই তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, অনেক দিন থেকেই বাংলাদেশে একটি প্রদর্শনী করার ইচ্ছা ছিল। সেটি পূরণ হওয়ায় তিনি আনন্দিত।
প্রদর্শনীতে শিল্পকর্ম রয়েছে ৬৫টি। সব কটিই জলরঙের।

এই শিল্পকর্ম বিক্রির অর্থে শিল্পী তাঁর জন্মভূমি জামালপুরে একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র গড়ে তোলার পরিকল্পনা করেছেন। গণেশ হালুই কাজ করেন বিমূর্ত রীতিতে। রেখাপ্রধান তাঁর কাজ। উল্লম্ব, আনুভূমিক, আড়াআড়ি, তরঙ্গায়িত নানা ধরনের রেখার সঙ্গে বৃত্ত, ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ রচনা করে তিনি এর পাশে ছড়িয়ে দেন স্বচ্ছ রং। বাহুল্যবর্জিত অল্প কাজে তিনি পৌঁছে যেতে চেষ্টা করেন প্রকৃতির আপাত দৃশ্যমানতাকে অতিক্রম করে তার ভেতরের সত্তা ও সৌন্দর্যের কাছে।

এতে যে সহজ ও স্বতঃস্ফূর্ত ব্যঞ্জনার সৃষ্টি হয়, তা দর্শকের মনে যেমন ভালোলাগার আবেশ ছড়ায়, তেমনি দৃশ্যটি তাকে ভাবিতও করে।
গণেশ হালুইয়ের জন্ম ১৯৩৬ সালে। তিনি ১৯৫৬ সালে কলকাতার গভর্নমেন্ট কলেজ অব আর্টস অ্যান্ড ক্রাফটস থেকে স্নাতক ডিগ্রি নেন। পরে ১৯৬৩ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত সেখানেই শিক্ষকতা করেছেন। কলকাতার অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টস থেকে ছয়বার স্বর্ণপদক, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘হীরাচাঁদ দুর্গা স্মারক’, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য অ্যাকাডেমি সম্মানসহ বিভিন্ন পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেছেন।

এ পর্যন্ত তাঁর ১৯টি একক ও বহু যৌথ প্রদর্শনী হয়েছে। এই প্রদর্শনী চলবে আগামী ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।
স্বপ্নের দিন গোনা
গানের সুর, কবিতা আর নৃত্যের ছন্দে এক মনোজ্ঞ অনুষ্ঠান ছিল গতকাল বুধবার শিল্পকলা একাডেমীর জাতীয় সংগীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজী নজরুল ইসলামের গান আর সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতা নিয়ে ‘হে সাথী, আজকে স্বপ্নের দিন গোনা’ নামে এই ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠানটি হলো গতকাল উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর পরিবেশনায়।
বাংলাদেশ সংগীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদ গত বছর থেকে নিয়মিতভাবে দর্শনীর বিনিময়ে পাক্ষিক গানের আসরের আয়োজন করছে।

এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সমন্বয় পরিষদের এই আয়োজনে সহায়তা দিচ্ছে প্রথম আলো।
শুরুতেই ছিল সংক্ষিপ্ত আলোচনা। উদীচীর সাধারণ সম্পাদক প্রবীর সরদার ও প্রথম আলোর ব্র্যান্ড ম্যানেজার অরূপ কুমার ঘোষ আলোচনায় অংশ নেন। সমন্বয় পরিষদের সম্পাদক বিশ্বজির‌্যা ঘোষ অনুষ্ঠানে সহায়তা করায় প্রথম আলোকে ধন্যবাদ জানান।

এরপর ছিল গান, কবিতা আর নৃত্যের মাঝে হারিয়ে যাওয়ার পালা। শুরুতে ‘কান্নাহাসির-দোল-দোলানো পৌষ-ফাগুনের পালা’গানটির সঙ্গে ছিল সমবেত নৃত্য পরিবেশনা। পরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘দুই বিঘা জমি’ কবিতার একক আবৃত্তি। ‘নিশিদিন ভরসা রাখিস, ওরে মন’ গানটি সমবেতভাবে পরিবেশন করেন শিল্পীরা। এরপর আবার কবিতা।

‘বিদ্রোহী’ কবিতার অংশবিশেষ আবৃত্তি করেন শিল্পীরা। পরের পরিবেশনা ছিল সমবেত সংগীত ‘বল ভাই মাভৈঃ মাভৈঃ’। ‘হে মানব, একবার এসো ফিরে’ কবিতা আবৃত্তির সঙ্গে নৃত্য পরিবেশনার মধ্য দিয়ে আয়োজনটি শেষ হয়। ।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।