আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হারানোর পূর্বমূহুর্তে

The mind is in its own place, and in itself/ Can make a Heaven of Hell, a Hell of Heav’n

আপনারা কি বন্ধুত্বের আদর্শ কোন সংজ্ঞা দিতে পারবেন? আদৌও কি বন্ধুত্বের কোন সংজ্ঞা হয়? আমার ক্ষুদ্র জ্ঞান দিতে পারে না বন্ধুত্ব নামক এক পরম নির্ভরতার সংজ্ঞা দিতে। আমার আজকের সন্ধ্যাটা খুব কষ্টের। আর বড় কোন কষ্ট মেনে নেয়ার মতো ক্ষমতা সৃষ্টিকর্তা আমাকে দেন নি। কেন জানি না, মাঝে মাঝে তাঁর উপর আমার অভিমান হয়। মনে মনে বলি কেন আমার প্রতি তোমার এই বৈষম্য? কেন আমাকে এত কষ্ট দাও? আবার সেই কষ্ট সহ্য করার মতো শক্তি আমাকে দাও না কেন? বড্ড জটিল আমার মন।

আমার মনের আকাঙ্খা আবার বড়ই অদ্ভুত। বন্ধুত্ব নামক সম্পর্কটির প্রতি আমার রয়েছে শ্রদ্ধা, ভালবাসা আর নির্ভরতা-বিশ্বাসের এক অপূর্ব সংমিশ্রণ। যাকে বন্ধুত্বের চাদরে উপহার দিই ভালবাসা, তার প্রতি আমার মনের মাঝে গড়ে ওঠে অসীম মমত্ববোধ। কেন জানি না, তাকে বড় বেশি আপন মনে হয়। এই বুঝি হৃদয়ের তীব্র টান আর অনুভুতি।

আবার, বন্ধুদের আড়ালে লুকিয়ে থাকা সেই স্বার্থপরতা যখন প্রকাশ পায়, বিশ্বাস করুন, আমি আর পারি না নিজেকে ধরে রাখতে। কষ্ট, বড়ই কষ্ট পাই। তবুও বন্ধুত্বের প্রতি অপার শ্রদ্ধাবোধ, ভালবাসা, বিশ্বাস আর নির্ভরতা মনে-প্রাণে লালন করে যাই। যদিও প্রায়ই ব্যর্থ হই। শুরুতেই বলেছি, আজকের সন্ধ্যাটা আমার জন্য খুব কষ্টের।

এতদিন বন্ধুত্বের অন্তরালে পেয়েছি অন্য ছায়া। নিজেকে খুব দুর্ভাগা মনে হতো। আমি বোধ হয় কারো বন্ধু হওয়ার যোগ্য নই। নইলে আলেয়ার পিছে ছুটছি কেন? তবে সৃষ্টিকর্তা আমার কথা শুনেছিলেন। তাইতো একজন সত্যিকারের বন্ধুর দেখা পেলাম।

যার প্রতিটি পদক্ষেপ আমাকে দিয়েছে নতুন আলো। একসময় আলেয়ার পিছে ছুটতে ছুটতে অন্ধকারে প্রায় নিমজ্জিত হয়ে গিয়েছিলাম। সব আশা, উচ্ছ্বাস আর লক্ষ্য হারিয়ে গিয়েছিল। তার আলোকবর্তিকার মতো আবির্ভাব আমার জীবনে নিয়ে এলো নতুন বার্তা। হারানো সব ভালবাসা-বিশ্বাস-নির্ভরতা ধীরে ধীরে ফিরে পেতে থাকল তার আপন আশ্রয়।

তবে এজন্য আমার সেই বন্ধুর অনেক কষ্ট পোহাতে হয়েছে। এভাবেই আমার দিন কাটছিল। বলতে গেলে, খুব আনন্দে কাটছিল। আমার সব ভালো লাগা, কষ্টের অনুভূতি, আমার জীবনের লক্ষ্য---- সবকিছুই তার সাথে শেয়ার করতাম। সেও একজন প্রকৃত বন্ধুর মতো আমাকে আমার লক্ষ্যে পৌছানোর জন্য প্রেরণা দিত।

এবং তারও সব ভাল লাগা, কষ্ট, সমস্যা আমার সাথে শেয়ার করতো। ধীরে ধীরে সে আমার একজন পরম নির্ভরতা হয়ে দাঁড়ালো। কোন কিছু ঘটলে সে আমাকে আর আমি তাকে না জানানো পর্যন্ত শান্তি পেতাম না। মনে-প্রাণে সৃষ্টিকর্তাকে কৃতজ্ঞতা জানালাম। কিন্তু ওই যে আমি আসলে দুর্ভাগা।

কারো বন্ধু হওয়ার মতো যোগ্যতা নেই। আজকের এই সন্ধ্যায় আমি আর আমার সেই বন্ধু আবিস্কার করলাম যে আমরা আর বন্ধুত্বের নিবিড় ছায়া থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বো খুব শীঘ্রই। দুজনার পথ দুদিকে চলে যাবে। হয়তো বা কালে-ভদ্রে যোগাযোগ হবে। তবে সেই যোগাযোগ আমাদের আরো কষ্ট দেবে।

এখনকার মতো আর হয়তো যোগাযোগ থাকবে না। থাকাটা বাঞ্ছনীয়ও নয়। বলেছিলাম, কোন বড় কষ্ট মেনে নেয়ার মতো ক্ষমতা সৃষ্টিকর্তা আমাকে দেন নি। মনের মাঝে এক তীব্র ক্ষরণ হচ্ছে। আমি পারছি না সেই কষ্টটাকে মেনে নিতে।

এমন একটা বন্ধুকে হারাতে যাচ্ছি যে সদা আমার জন্য সৃষ্টিকর্তার নিকট আমার মঙ্গল কামনা করে। আমি আমার জীবনের মূল্যবান রত্নের চেয়ে দামি বন্ধুকে হারানোর পূর্ব মূহুর্তে আমার সেই বন্ধুর জন্য সৃষ্টিকর্তার নিকট প্রার্থনা করছি। সে যেন তার গন্তব্যের পথে অবিচল থাকে। কোন অনিষ্ট যেন তাকে স্পর্শ করতে না পারে।


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।