আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইনকুইজেশনঃ আহত সভ্যতার চরম পর্যায় ( শেষ পর্ব )

একজন বইপোকা।

( আমি খ্রিষ্টান পাদ্রিদের চরম সভ্যতা লংঘনের কিছু ইতিহাস এখানে তুলে ধরার চেষ্টা করবো। আপনাদের সুবিধার্তে পর্ব করে প্রকাশের চিন্তা করলাম। জানিনা, কতটুকু সফলতা পাবো । বিচারের দায় আপনাদের।

সুপ্রিয় ব্লগার বন্ধুরা ! আপনারা আমার এ লেখা থেকে যদি সামান্য উপকৃত হোন তাহলে আমার কষ্ট সফল। ) ইনকুইজেশনের নিরপরাধ আসামী যদি অপরাধ স্বীকার না-করে তাহলে শুরু হতো দৈহিক নির্যাতন। ঐতিহাসিকগন মাত্র অল্প ক'টা পদ্ধতির কথা বর্ণনা করেছেন । কিন্তু, "ম্যালগর্স" উল্লেখ করেছেন ১৪ ধরণের শাস্তি। কয়েদীর পায়ে চর্বি মাখিয়ে জলন্ত আগুনে দাড় করানো হতো।

অথবা গরম লোহা দিয়ে দাগ দেয়া হতো। এরপর শুলিতে চড়ানো হতো। একটা কাঠের সাথে দু'হাত পেরেক দিয়ে আটকে দেয়া হতো। কপি কলের একমাথার সাথে রশি দিয়ে দু'বাহু আটকে দেয়া হতো। এবং অপর মাথা ধরে টান দিলে কয়েদীর পা উঠে যেতো মাটি থেকে ।

আবার রশি ঢিলা দিয়ে জবানবন্দি নেয়া হতো। অপরাধ স্বীকার না করলে টেনে ছাদ পর্যন্ত নেয়া হতো। আবার ছেড়ে দেয়া হতো তখন লোকটার হাত পা ভেঙ্গে যেতো। অথবা অনেক সময় হাত পা ছিড়ে যেতো। কখনো কখনো তার পায়ে পাথর বেধে মাটি আর ছাদের মাঝখানে ঝুলিয়ে দেয়া হতো।

অপরাধ স্বীকার না করলে চলতে থাকতো নির্যাতন। জল্লাদের তৎপরতা, আসামীর বয়স , ঝুলিয়ে রাখার সময় তার দৈহিক মানসিক অবস্থা কী ছিল বিস্তারিত লিখে রাখতো ইনকুইজেশনের কেরানীরা। পানির সাথে সংশ্লিষ্ট শাস্তিগুলো ছিলো পাদ্রীদের খুব প্রিয়। আসামীকে একটি কাঠের সিড়িতে শোয়ানো হতো একটু নিচে চামড়ার রশি দিয়ে বেধে দেয়া হতো। নাক এবং কান তুলা দিয়ে পেছিয়ে দেয়া হতো।

কয়েদী শ্বাস নেয়ার জন্য মুখ খুললে জল্লাদ ন্যাকড়া ঢুকিয়ে দিতো। এরপর তার উপর পানি ছিটানো হতো। পানির এবং শ্বাসের চাপে ন্যাকড়া গলায় আটকে যেতো। শেষ পর্যন্ত আসামী মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তো। পাদ্রিরা ছিল জ্ঞান এবং বিজ্ঞানের বিপক্ষ শক্তি ।

আমরা ইতিহাসের পাতা যদি নাড়াচাড়া করি তাহলে দেখতে পাই, পাদ্রীদের শাস্তির ভয়ে বিজ্ঞানীরা তাদের বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবন লুকিয়ে ফেলতেন। " মাত্র আঠারো বছরে ১৪৮১ সাল থেকে ১৪৯৯ সাল পর্যন্ত ১০,২২০ জনকে পাদ্রীরা জীবন্ত পূড়িয়ে মেরেছে এবং ৬,৮৬০ জনকে ফাসিতে ঝুলানো হয়। মার্টিন লুথার (১৪৮৩-১৫৪৬) সংস্কার মোলক বিপ্লব ঘটান। এবং তার মাধ্যমেই সর্ব প্রথম পাদ্রীদের ক্ষমতা খর্ব হতে থাকে। একজন আধুনিক ঐতিহাসিক "হেনরী কামান" তার লেখা "স্পেনিশ ইনকুইজেশন" লিখেছেন যে খ্রীষ্টান পাদ্রী "জেমসের" নির্দেশে গ্যানাডার দশ লক্ষ পাঁচ হাজার বিজ্ঞান ভিত্তিক গ্রন্থ পূড়িয়ে ফেলা হয়।

এখানেই শেষ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।