আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শায়লা হকের গ্রীষ্মের পদাবলি : একটি সমালোচনাপ্রচেষ্টা -(১)

কাগু ক্যান স্টার্ট অ্যা ফায়ার ইউজিং জাস্ট টু আইস কিউবস

সাহিত্য সমালোচনায় অনেক রথী মহারথীই লেখকের ব্যক্তিজীবন ও দর্শনের ছাঁচে লেখার বিচার করার চেষ্টা করেন । এইখানে দু'টি কারণে সেই প্রচেষ্টা বাদ দিলাম । প্রথমত, বর্তমানে মানুষের জীবন ও সম্পর্কগুলার অদ্ভুত জটিলতা এবং কিছুকিছু ক্ষেত্রে (শিবরাম, জীবনানন্দ) আউটরাইট ব্যর্থতা । দ্বিতীয়ত ইতিহাসে উদাহরণবিহীন ঘটনা ইন্টারনেটের কারণে । কবিতাগুলা যেহেতু অনলাইন থেকে নেয়া সেহেতু সমালোচনায় শুধুমাত্র কবিতা ছাড়া অন্য কোন তথ্যের বিশ্বাসযোগ্যতা আমার মত সম্পূর্ণ অপরিচিতের কাছে শূণ্য ।

টাইপ করতে পারে যেকেউ একটা প্রোফাইল লেখতে পারে, আর অল্পবয়স্ক তরুণীর ছবিও ইন্টারনেট থেকে জোগাড় করা হিমালয় ডিঙানোর মত কোন কাজ না । হতে পারে শায়লা হকের অন্তরালে কোন ভাঙাচোরা আব্দুর রহিম জড়িত । তার চাইতে কবিতায় কি উঠে আসলো সেইটা বিচার মোটামুটি যুক্তিসঙ্গত । গ্রীষ্মের পদাবলি ছয়টি কবিতা থেকে কিছু কিছু শব্দের প্রেক্ষিতে বোঝা যায় , কবিতাগুলা একটি অল্পবয়স্কা আমেরিকা প্রবাসী, সম্ভবত দ্বিতীয় প্রজন্মের বাঙ্গালি তরুণীর বেড়ে উঠার পটভূমিতে লেখা । এর বেশি কিছু ডিডাক্ট করার চেষ্টা নাহয় নাই করলাম ।

কবিতাগুলার ভিতরে ঢোকা যাক, গ্রীষ্মের পদাবলী ১ আমি জানি দুষ্টছেলে তোমার চোখ আমার মসৃন পায়ে এবং ঘামে ভেজা মসৃন টি-শার্টের কোথায় গ্রীষ্ম আমাকে তোমার চোখের মাপে বানিয়েছে এমনটা ভাবতেই ভালোবাসি কবিতাটি পাঠে খুঁতখুঁতে পাঠকের প্রথমে যেকথা মনে আসতে পারে সেটা হলো পুরো কবিতায় কোন বিরাম চিহ্ন নাই । এমনিতে নিতান্ত সহজ এবং বোধগম্য এবং সঠিক বাংলায় লেখা হলেও, বিরাম চিহ্নের এই অনুপস্থিতি কবির বিরামহীন কাব্যপ্রচেষ্টা বা তারুণ্যের নির্বাধ বকরবকর এইসবের বাইরে বাংলার ব্যকরণ বিষয়ে অজ্ঞতা হিসাবেও দেখা যেতে পারে । ভাষার মতই কবিতার বিষয়ও নিতান্ত সরল । কেবলমাত্র গ্রীষ্মের অসহনীয় তাপমাত্রার কারণেই আরামদায়ক পোষাক পরলেও পুরুষের লোলুপ দৃষ্টি বিষয়ে কবি সচেতন । এইটুকুতে ঝামেলা না থাকলেও, শেষের পাঁচটি লাইনই কবিতাটির কেন্দ্র এবং মূল আকর্ষণ ।

এইখানে দেখা যায়, লোলুপ দৃষ্টি নিয়ে কবির কোন অভিযোগ নাই, বরং কিছুটা উপভোগ্য প্রশ্রয় আছে । এটিকে প্রকৃতির খেলা বলে মেনে নিতে কবি কেবল রাজিই নন, বরং ভালও বাসেন । নিন্দুকেরা এখানে পুঁজিবাদের নিজের দোষ প্রকৃতির ঘাড়ে চাপিয়ে দেবার মাধ্যমে কূট-র‌্যাশনালাইযেশনের মিডিয়া বড়ি , একটি সরলা নির্বোধ তরুণীকে , সফলরুপে গেলানো হয়েছে জাতীয় উদ্ভট সব জিনিস দেখতে চাইলেও, নিছক কৌতুহলী সারল্য হিসাবে দেখাও যাইতে পারে । গ্রীষ্মের পদাবলী ২ সেদিন সাঁতারের পরে আমার পিছু পিছু এসে ড্রেসিংরুমের দরজায় থেমে গেলে হায়রে দুষ্টছেলে এরকম ফ্যান্টাসির দিন ফুরিয়ে এলো এখনো মুখচেপে থাকো যদি আরো একটা শীত এসে লেপমুড়ি দেবে তোমার মাথায় পুল থেকে উঠতেই অন্যকেউ হয়তো আমার হাত ধরে তোমাকে ছেলেদের ড্রেসিংরুম দেখাবে বিরামচিহ্নের অনুপস্থিতি আগেরবারে মতই । সাঁতারের পরের সংক্ষিপ্ত পোশাকের দৃষ্টিনন্দন হাঁটা লক্ষ্য করে সহজাত আকর্ষণে পিছু অনুসরন করা অজানা দুষ্টছেলের আচরণে কবি তেমনকোন স্টিগমা অনুভব করেন না ।

বরং তিনি চান, অনুসরনকারী আরেকটু সাহসী হোক । সাহসী এবং মনখোলা এবং সাথে সাথে কিছু ম্যাচুরিটি যদি তৈরী করতে না পারে, দুষ্টছেলে অচিরেই যে পস্তাবে , সেই সাবধানবাণীও তিনি দিচ্ছেন, বরাবরের মতই কবিতার শেষের মূল আকর্ষণে । পদাবলীসমূহের প্রায় সবগুলোতেই এই দুষ্টছেলেটি কে, এই নিয়ে পাঠকের উৎসাহ তৈরী হয় বৈকি ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।