আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চিয়ার্স গার্লস : এ কোন্ ধরনের ক্রীড়া সংস্কৃতি

আমি মানুষের সাথে বন্ধুত্ব করতে ভালবাসি ।

স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল- এ কথাটি আমরা সকলেই পরিজ্ঞাত। তাই দেহ-মনের সুস্থতার জন্য খেলাধুলা অপরিহার্য। পাশাপাশি সুস্থ বিনোদন দেহ ও মনের খোরাক জোগায়। তাই বিনোদনের জন্য খেলাধুলা অন্যতম।

বাংলাদেশের গ্রামেগঞ্জে সাধারণত খেলাধুলা বা বিনোদনের তেমন কোন মাঠ বা প্লে স্পট না থাকায় উন্মুক্ত মাঠে ময়দানেই বিনোদনের নিমিত্তে নানা ধরনের খেলাধুলা গ্রামীণ ছেলেপেলেরা করে থাকে। সেগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল হা-ডু-ডু, গোল্লাছুট, দাড়িয়াবাঁধা ইত্যাদি। হালে অবশ্য সে সমস্ত খেলাধুলা সংস্কৃতির পরিবর্তন ঘটেছে। শহুর সংস্কৃতির সাথে সাথে গ্রামীণ জীবনেও তার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। যেমন শহরে এখন গ্রামীণ সেই ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলার প্রচলন আর নেই।

এখন সেখানে আছে আধুনিক বিশ্বের নতুন নতুন খেলার প্রচলন এবং আরো নিত্যনতুন সংযোজন হচ্ছে। শহরের খেলাধুলার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ক্রিকেট, ভলিবল, ব্যাডমিন্টন, গলফ, ফুটবল, টেবিল টেনিস, স্কোয়াসসহ নিত্য নতুন খেলাধুলা। যাতে প্রযুক্তির ব্যবহারও সমান তালে এগিয়ে চলেছে। এতে অবশ্য জ্ঞান-বিজ্ঞানসহ আরো অনেক প্রযুক্তির ডিজিটাল প্রোগ্রামের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়, যা বিনোদন সহায়ক উৎকর্ষতার পরিচায়ক। যাই হোক, আমার আজকের প্রসঙ্গ : শহরের খেলাধুলার মান এবং দর্শকদের রুচি ও দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে পর্যালোচনা।

আগেই বলেছি, সুস্থ বিনোদন দেহ ও মনকে প্রফুল্ল করে এবং তা জীবনের জন্য প্রয়োজনও বটে। কিন্তু তা যদি হয় বিড়ম্বনা ও বিরক্তির কারণ, তখনই প্রশ্ন জাগে- এ কোন ধরনের ক্রীড়া সংস্কৃতি যা মানুষের সুস্থ বিনোদনের পরিবর্তে বিকৃত সংস্কৃতি ও রুচিবোধগর্হিত অপসংস্কৃতির দেহবল্লরী প্রদর্শন মাত্র! কেননা, উর্বশী তন্বী তরুণীর উদ্যাম নৃত্যছন্দের মাধ্যমে পাশ্চ্যাত সংস্কৃতির উগ্রনারীর দেহ প্রদর্শনই যদি মুখ্য হয় তাহলে তাকে আর সুস্থ বিনোদন বলা যায় না। তা সর্বোতই কু-রুচিপূর্ণ এবং মুসলিম সংস্কৃতির সাথে সাংঘর্ষিক। ইদানীংকালে পাশ্চাত্য জগতের মত আমাদের দেশেও সংস্কৃতি বিনোদন অর্থাৎ খেলাধুলার মধ্যেও অনাবশ্যকভাবে পাশ্চাত্য ঢঙ্গে তথাকথিত ‘চিয়ার্স গার্লস' দের ব্যবহার করা হচ্ছে। যা এদেশের জাতিসত্তা ও সংস্কৃতির সম্পূর্ণ বিরোধী।

অন্তত এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের মনুষ্যত্ব ও সংস্কৃতিবিরোধী এ ধরনের লাম্পট্য ও কু-রুচিপূর্ণ নৃত্য ঢঙে নারী দেহের উন্মাদনা প্রদর্শন করে দর্শক আকর্ষণের এ কোন ধরনের অভিলাষ পূরণে ক্রীড়া কর্তৃপক্ষ এগিয়ে চলেছেন, তা সুস্থ মানসিকতাসম্পন্ন জনগণের কাছে এক বিরাট প্রশ্ন! এ ব্যাপারে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে ভেবে দেখবেন কী? কেননা আজকাল টিভি বা বিভিন্ন চ্যানেলের মাধ্যমে ক্রীড়ামোদিরা ঘরে বসে সেটের সামনে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে যখন খেলা দেখতে বসেন ঠিক তখনই খেলার মাঝখানে এ ধরনের চিত্তাকর্ষক (!) প্রাণোন্মদনার উদ্দেশ্যে যদি টিনএজার ‘চিয়ার্স গার্লস'দের দেখানো হয়। তখন সকলকেই এক বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। যা আমাদের মর্মপীড়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আমাদের সারাদিনের কর্মব্যস্ততার পর যখন একটুখানি সুস্থ বিনোদনের জন্য আয়েশ নিয়ে টিভি সেটের সামনে খেলা দেখার জন্য বসা হয়, তখনই সুস্থ মনটা অসুস্থ হয়ে মানসিক বিষাদ বাড়িয়ে দেয়। অতএব সুস্থ বিনোদনের জন্য সুস্থ পরিবেশ চাই।

তাই আমরা আশা করব আগামী দিনগুলোতে যখনই খেলাধুলা বিটিভিসহ বিভিন্ন চ্যনেলগুলোতে প্রদর্শন করা হবে তখন যেন ক্রীড়াসংস্থার দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গ সুস্থ ধারার বিনোদন সংস্কৃতি প্রদর্শনের মাধ্যমে আমাদের খেলাধুলার জগতকে শিল্পমানসম্মত ক্রীড়ানুরাগ দর্শকদের জন্য ক্রীড়া অকর্ষণ সৃষ্টিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবেন। বাংলাদেশ সরকারের ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গের প্রতি আন্তরিক দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যেন ভবিষ্যতে জাতীয় কৃষ্টি ও কালচারের বিপরীত এ ধরনের অপসংস্কৃতির সয়লাব ঘটিয়ে বিনোদনের সংস্কৃতির নামে এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের ঈমান আকীদাবিরোধী অপসংস্কৃতি রোধ করে সুস্থ বিনোদন ও ক্রীড়া সংস্কৃতি বিকাশে জাতীয় ক্রীড়া সংস্থা গঠনমূলক ভূমিকা পালন করবে গোটা দেশবাসী আগামীদিনে তাই প্রত্যাশা করে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।