আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও কানাডায় মানবাধিকার লংঘনে জাতিসংঘে ইরানের তীব্র নিন্দা



ইরান জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের তৃতীয় কমিটিতে ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডায় মানবাধিকার লংঘনের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। জাতিসংঘে ইরানের প্রতিনিধি জনাব ফরহাদ মামদুহি এই কমিটিতে বলেছেন, গত কয়েক বছরে ইউরোপীয় দেশগুলোতে জাতিগত এবং ধর্মীয় পক্ষপাতমূলক আচরণ বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি আরো বলেছেন, মুসলমানসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা মৌখিক ও দৈহিক হামলার শিকার হচ্ছে এবং তাদেরকে প্রকাশ্য স্থানে ধর্মীয় কর্তব্য পালন করতে দেয়া হয় না। এ ছাড়া তাদেরকে চাকুরির সুযোগ দেয়া হচ্ছে না বলে জনাব ফরহাদ মামদুহি উল্লেখ করেন। ইরানের প্রতিনিধি ইউরোপীয় জোটে মুসলমানদের মানবাধিকার লংঘন প্রসঙ্গে বলেন, এই সব দেশে বসবাসরত মুসলমানদেরকে স্বাধীনভাবে ইসলামী পোশাক পরতে দেয়া হচ্ছে না এবং নামাজ সহ অন্যান্য ধর্মীয় অনুশাসন পালনের ক্ষেত্রেও নানা সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হচ্ছে।

ইউরোপীয় জোটভুক্ত দেশগুলোতে পুলিশ মুসলমানদের উপর নির্যাতন চালাচ্ছে এবং এ বিষয়টি এরই মধ্যে জাতিসংঘের বিভিন্ন কমিটিতে উত্থাপন করা হয়েছে বলে তিনি জানান। এ ছাড়া ইরানের এই প্রতিনিধি কানাডায় আদিবাসীদের মানবাধিকার লংঘনের বিষয়টিও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, "এই আদিবাসীরা কানাডার অন্যান্য নাগরিকদের তুলনায় খুবই নিম্নমানের জীবন যাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন। কানাডার আদিবাসী মহিলারা পুলিশের সন্ত্রাস এবং ধর্ষণের শিকার হয়ে থাকেন। তাদেরকে পুরুষদের সাথে একত্রে আটক রাখা হয় ফলে তারা অন্যান্য পুরুষ বন্দিদের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়ে থাকেন।

" এ ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মানবাধিকার লংঘনের ঘটনা তুলে ধরতে যেয়ে এই প্রতিনিধি জাতিসংঘের প্রতিবেদন তুলে ধরেন। এ সব প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতিগত সংখ্যালঘু ও আফ্রিকান এবং লাতিন আমেরিকার বংশোদ্ভুত ব্যক্তিরা যুক্তরাষ্ট্রে হয়রানি, বৈষম্য এবং মানবাধিকার লংঘনের শিকার হচ্ছেন । ইরানে জাতিসংঘের এই প্রতিনিধি, অধিকৃত ফিলিস্তিনে ইসরাইলের গণহত্যা, নৃশংস দমন-পীড়ন ও ফিলিস্তিনীদের প্রতি ইসরাইলের অমানবিক আচরণের কথা তুলে ধরে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের এসব পদক্ষেপের প্রতি নিঃশর্ত সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। পাশ্চাত্য মানবাধিকার রক্ষার দাবীদার হলেও গত ৫০ বছরেরও বেশী সময় ধরে মানবিক মূল্যবোধ ও ধর্মীয় বিশ্বাসকে পদদলিত করে বিশ্বের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে বড় ধরনের অনেক সংকট সৃষ্টি করেছে। জাতিসংঘ ও এর নিরাপত্তা পরিষদকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে পশ্চিমা শক্তিগুলো বিশ্বের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ভাগ্যের ওপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে।

সাম্রাজ্যবাদী এই শক্তিগুলো বাক-স্বাধীনতা ও মানবাধিকারের সমর্থক বলে দাবী করলেও তারা কোনো প্রতিবাদ বা সমালোচনা সহ্য করে না এবং পাশ্চাত্যে মানবাধিকার লংঘনের তিক্ত সত্য বা বাস্তবতাগুলোকে গোপন রাখার চেষ্টা করছে। জার্মানীর একটি আদালতে এক আসামীর ১৮ টি ছুরিকাঘাতে মারওয়া শেরবিনি নামের এক মিশরীয় মুসলিম যুবতীর শাহাদতের ঘটনার ব্যাপারে পশ্চিমা সংবাদ-মাধ্যমের রাখ-ঢাক নীতিই এর উজ্জ্বল প্রমাণ। উল্লেখ্য, এ ঘটনার সময় সেখানে বিচারকবৃন্দ, পুলিশ, শেরবিনির স্বামী ও শিশু পুত্র উপস্থিত ছিল। শেরবিনির স্বামী স্ত্রীকে বাঁচাতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে আহত হন। আসলে বলদর্পী শক্তিগুলো মানবাধিকারের মত শব্দগুলোকে এমনভাবে তুলে ধরে যে, মনে হয় যেন তারা সব সময়ই এসবের পৃষ্ঠপোষক।

অথচ এ শক্তিগুলোই বিশ্বে সন্ত্রাস ও নিরাপত্তাহীনতার মূল উৎস। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কথা বললেও তারা সন্ত্রাসীদের সাথেই আলোচনায় বসছে, গোপনে কারাগার ও নির্যাতন-ক্যাম্প বসাচ্ছে, বিভিন্ন দেশ দখল করছে এবং পরমাণু, রাসায়নিক ও অন্যান্য নিষিদ্ধ অস্ত্র ব্যবহার করছে। বলদর্পী এইসব শক্তি সন্ত্রাসের ভয়াবহ রাজত্ব সৃষ্টি করে ও প্রকাশ্যে মানবাধিকার পদদলিত করে মহাবিপর্যয় সৃষ্টি করতে কুণ্ঠিত হয় না। গাজায় ২২ দিনের যুদ্ধে ইসরাইলের নৃশংসতম অপরাধযজ্ঞ এর অন্যতম দৃষ্টান্ত।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.