আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বজ্রপাত ঠেকাবে বিজ্ঞানীরা

আমি মানুষের সাথে বন্ধুত্ব করতে ভালবাসি ।

জলোচ্ছবাস, বন্যা, ঝড়, ভূমিকম্প ইত্যাদিকে প্রাকৃতিক বিপর্যয় বলে মনে করেন আবহাওয়া পরিবেশ বিজ্ঞানীরা। মাত্রাতিরিক্ত গরম পড়া বা অসহনীয় ঠান্ডা পড়াকে সংশ্লিষ্টরা প্রাকৃতিক বৈরি আচরণ বলে মনে করেন। কিন্তু বাজ বা ঠাটা কিংবা বজ্রপাতকে এসবের কোন শ্রেণীর মধ্যে ফেলা যায় এ নিয়ে অতীতে তেমনভাবে ভাবা হয়নি। ভৌগলিকভাবে মানুষ জানে যে আকাশে বড় মেঘের সঙ্গে পরস্পরে ব্যাপক সংঘর্ষের ফলে ধনাত্মক ও ঋণাত্মক প্রতিক্রিয়ার ফলস্বরূপ বজ্রপাতের সৃষ্টি হয়।

অনেকে মনে করেন কিছু কিছু প্রাকৃতিক বিপর্যয় কমবেশি ঠেকানো গেলেও বজ্রপাতের মত ঘটনা বা বিষয় মোটেই ঠেকানো যায় না। কারণ এগুলো আকাশে হঠাৎ করে হয় এবং অতিরিক্ত তাপযুক্ত আগুন অনেক সময় নীচে নেমে নানা ধরনের দুর্ঘটনা ঘটায়। ন্যাশনাল সেন্টার ফর অ্যাটমসফেরিক রিসার্চের বিজ্ঞানী ও তার লোকজন এবং ইউরোপের বেশ কয়েকটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, বায়ুমন্ডলের নিকটতম যেখানে গ্যাসের পরিমাণ বেশি সেখানেই বেশি ঘটে থাকে বজ্রপাত। নাসার বিশেষ মহাকাশে করে এর উপর যথাযথ সমীক্ষা চালানোর মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা জানান, দাবানলের কারণে বায়ুমন্ডলে যে পরিমাণ ওজন তৈরি হয় বজ্রপাতের কারণে তৈরি হয় এর চাইতে বেশি বজ্রপাত। আর বায়ুমন্ডলের নিচের স্তরে যখন ওজনের পরিমাণ বেড়ে যায় তখনই বজ্রপাত হওয়ার প্রবণতা দেখা দেয়।

বিজ্ঞানীরা এসব বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় অনেক এগিয়ে গেছেন। তারা এখন ব্যাপক গবেষণা চালাচ্ছেন বজ্রপাতের দুষ্টচক্রটি কিভাবে ভাঙ্গা বা রোধ করা যায়। নাসার বিজ্ঞানীরা এসব বিষয়ে অনেক এগিয়ে গেছেন বলে জানা যায়। সংশ্লিষ্ট অনেকে মনে করেন বজ্রপাতের আসল কারণ হচ্ছে বায়ুদূষণ। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে বিশেষ করে দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ায় বজ্রপাতের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ায় জানমালের ক্ষয়ক্ষতিও দিন দিন বেড়ে চলেছে।

আরো জানা গেছে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, ভারত, নেপাল, ভুটান প্রভৃতি দেশে এ সংক্রান্ত ঝুঁকি বেশি। আশার কথা হলো, উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এর কারণ নিয়ে তেমন গবেষণা না হলেও ইউরোপ, আমেরিকা তথা অন্যান্য দেশে এ নিয়ে ব্যাপক গবেষণা চলছে। এ সংক্রান্ত গবেষণার প্রতিবেদন প্রায়ই প্রকাশ পায় নানা মাধ্যমে। ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক নিউজের এক রিপোর্টে বলা হয়, বজ্রপাত আবহাওয়া সম্পর্কিত দ্বিতীয় বৃহত্তম ঘাতক। বজ্রপাতে একদিকে বৃদ্ধি পাচ্ছে বায়ুদূষণের মাত্রা।

তেমনি বায়ুদূষণের (ব্যাপক) কারণে প্রতিবছর বৃদ্ধি পাচ্ছে তাপমাত্রা। জানা গেছে, বজ্রপাতের পর পরই ট্রপস্ফিয়ার বা বায়ুমন্ডলে সবচেয়ে নিচের স্তরে নাইট্রোজেন অক্সাইডের পরিমাণ বাড়ে। কার্বন-ডাই-অক্সাইড বা কার্বন মনো-অক্সাইডের চাইতে বেশি বিষাক্ত নাইট্রোজেন অক্সাইড রূপান্তরিত হয়ে তা রীতিমতো পরিণত হয় ওজন গ্যাসে। এ গ্যাস বাতাসের এমন একটি স্থানে ভেসে বেড়ায় যার ফলে দিন দিন বেড়েই চলেছে বায়ুদূষণের মাত্রা বা পরিমাণ। গবেষণার ফলাফলে আরো জানা যায়, বজ্রপাতের কারণে তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে দ্রুত।

এর নেতিবাচক প্রভাব যাচ্ছে মেরু বা বরফাঞ্চলে। তাই দ্রুত বরফ গলছে। ফলে বাড়ছে সাগরের পানি। আরো জানা গেছে, যানবাহন ও কল-কারাখানার কারণে যে পরিমাণ দূষণ হচ্ছে তার চাইতে বেশি মাত্রায় দূষণ সৃষ্টি হচ্ছে বজ্রপাতের কারণে। অনেক সময় যথেষ্ট পরিমাণে বৃষ্টিপাত হলে তা প্রকৃতির জন্য ভাল, কিন্তু বৃষ্টির সাথে বেশি বজ্রপাত হলে এর পরিণতি হয় বিপরীত।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।