আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বর্ষার প্রণয়



এটি আমার প্রথম গল্প। ব্যাপারটিকে বোকামিপূর্ণ সাহসিকতা বলে অভিহিত করা যেতে পারে। পড়া শেষে সমালোচনা করার অনুরোধ রইল। বর্ষার প্রণয় ১. বর্ষা অর্ণবের প্রিয় ঋতু। সেবার বর্ষায় অর্ণব তার খালার বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল।

সংস্কৃতমনা খালুর নিয়ম হলো পরিবারের সবাইকে নিয়ে বর্ষার প্রথম বৃষ্টিস্নান করা। সেবারো এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। সেই পারিবারিক আনন্দে সেবার অর্ণবও যোগ দিয়েছিল। খালাতো বোন নিতুর প্রতি ছোটবেলা থেকেই হয়তোবা তার মনে কোন দুর্বলতা কাজ করত। কিন্তু প্রায় সমবয়সী নিতুর সাথে কখনোই তেমন তীব্র অনুভূতি প্রকাশ পায়নি অর্ণবের মনে।

কিন্তু সেবার বর্ষার নবধারা জলে নিতুকে যেন অন্যরকম স্নিগ্ধ লাগছিল। সেই পবিত্র স্নিগ্ধতা আর শুদ্ধতার দৃষ্টি অর্ণবের মনে এক অজানা মুগ্ধতার সৃষ্টি করে। পরদিন অঝোর শ্রাবণধারায় সন্ধ্যার বৃষ্টিতে নিতুকে যেন আনমনে প্রশ্ন করে অর্ণব, “নিতু তুই কি কখনও প্রেমে পড়েছিস?” “জানিনা” নিতুর সেই নিস্পৃহ উত্তরে অর্ণব যেন উৎসাহ হারিয়ে ফেলে। পরদিন সন্ধ্যায় অর্ণব তরতাজা কিছু ফুল কিনে আনে। বর্ষার স্মারক কদম।

সন্ধ্যার সেই রহস্যময় লাল কালো আলোকোজ্জ্বল পরিবেশে নিতুকে ফুলগুলো দেয় সে। সাথে পাঁচটা তরতাজা গোলাপ। “কদম না হয় বর্ষার স্মারক কিন্তু গোলাপ কেন রে?”- প্রশ্ন করে নিতু। “এম্নিই। ভাল লাগলো তাই; আর তোকে কি আমি এমনি গোলাপ দিতে পারি না??”---প্রায় লজ্জায় বলে উঠে অর্ণব।

“তোর মনে যা আছে তা বলে ফেলতে পারিস না গাধা?? যা বলার বলে ফেল না। “--হঠাৎ করেই যেন বলে উঠল নিতু। সেই আলো আঁধারির পরিবেশে অর্ণবের মনে হলো যেন প্রায় কান্না আর শ্লেষভরা কন্ঠে কথাগুলো বলে উঠে নিতু। কিন্তু তবু লজ্জা আর ইতস্ততায় কেন যেন মনের কথাগুলো বলা হয়ে উঠে না অর্ণবের। ২. বাড়ি ফেরার কিছুদিন পর একটা চিঠি আসে অর্ণবের নামে।

কে লিখেছে লেখা নেই। । এই মোবাইলের যুগে চিঠি!!চিঠিটা কার কে জানে??উপদেশ রকমের চিঠি। “জীবনে যা কিছু হয় হোক,ভয় আর লজ্জা কে দূরে ঠেলে দাও। যদি আঘাত আসে আসবে।

মন ভেঙ্গে গেলে যাবে। তবু মনের যা গোপন কথাগুলো আছে বলে ফেলো। তা না হলে অনেক কিছু হারাবে। লজ্জা তো আর পুরুষের ভূষণ নয়!!” তাইতো লজ্জা পাবে কেন সে?? হঠাৎ করেই যেন সাহসী হয়ে উঠে অর্ণব। মনের সব ভয় আর লজ্জা দূরে ঠেলে দিয়ে হাতের মুঠোফোনটার উপর অত্যাচার শুরু করে সে।

অস্ফুট ভাবে কি যেন বলতে থাকে সে। ৩. আট বছর পর অর্ণবের বিয়ের রাতে অর্ণব তার নববধূর কাছ থেকে কিছু মরা গোলাপের পাপড়ি উপহার পায়। সে রাতে অর্ণবের বিছানা নানা বর্ণের সুগন্ধি ফুলে সাজানো ছিল। কিন্তু এত সতেজ ফুল আর মায়াবি সৌন্দর্যের মাঝেও সেই মরা পাপড়িগুলো অর্ণবের কাছে অনেক বেশি সতেজ মনে হয়। শেখ মিনহাজ হোসেন--নিউ ইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।