আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যন্ত্রমানব

সৃষ্টির রহস্য খুজছি

আজ শবেবরাত। মাকে খুব মনে পড়ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার পর, এরকম কিছু দিনে মাকে খুব মনে পড়ে। ছোটবেলার কথা মনে পড়ে। মা চালের গুড়ি দিয়ে পিঠা বানাতেন।

কখোনো ঢেকিতে বা পাটায় বাটতেন সেই চাল। বিকেল দিকে সেই চাল দিয়ে রম্নটি পিঠা বানাতেন মা। ছোট্ট পিড়িতে করে বেলুনি দিয়ে কি অদ্‌ভুদ পাতলা রম্নটি তৈরি করতেন মা। আমি চুলার কাছে বসে থাকতাম। প্রথম রম্নটিটি আমার খেতে হবেই।

রম্নটি খাবর জন্য হাস বা মুর্গির ঝোল তৈরি করতেন মা। সে এক অদ্‌ভুদ স্বাদ। আজ ৩ বছর হল ঢাকায় আসলাম। মা এখনও পিঠা তৈরি করেন। কিন্তু আমি খেতে পারি না।

মনটা খালি খালি লাগে। জ্বিভে সেই পিঠার স্বাদ চলে আসে। মা ফোনে আজ বললেন পিঠা বানাচ্ছি, তখন কি এক অদ্‌ভুদ অনুভূতি। মনে হচ্ছে এখনই চলে যাই বাড়ি। কিন্তু পরিনা।

সারারাত মা এই দিনে নামাজ পড়েন। ছোটবেলায় সন্ধ্যা হলেই মা লুঙ্গি, পাঞ্জাবী এবং টুপি পড়িয়ে মসজিদে পাঠিয়ে দিতেন। মসজিদে গিয়ে নামজ পড়ার চেয়ে বাদরামির স্বভাব আমার বেশি ছিল। সমবয়সী কয়েকজন মিলে একসাথে বসতাম, আর গল্প হাসাহাসি করতাম। কেউ নামাজ পড়ছে, তার জামা বা কান ধরে টান দিয়ে মসজিদের আরেক কোনে চলে যেতাম।

আমাদের এলাকায় ৫ টা মসজিদ। রাতে বন্ধুরা মিলে এক মসজিদ থেকে আরেক মসজিদে যেতাম। নামাজ পড়ার নামে ঠনঠন। মসজিদে গিয়ে আগে দেখতাম কে কি এনেছে মিলাদ পড়ানোর জন্য। অনেকেই ফিরনি, জিলাপি, মিষ্টি নিয়ে আসত।

রাত পর্যন্তô জেগে থাকতাম। হয়ত কখনও ঘুমিয়ে পড়তাম। যখন মিলাদ শুরম্ন হত, তখন তার শব্দে বা বন্ধুদের গুতানিতে ঘুম ভেঙ্গে যেত। নামাজ না পড়ে মিলাদের মাধ্যমে তবারক খাওয়াটা ছিল প্যাজটিজে লাগার মত। তাই ঘুম থেকে উঠে এমন ভান ধরতাম যে আমি নামাজ পড়েছি।

গভীর রাতে ঘরে এসে দেখতাম মা তখনও নামজ পড়ছেন বা দোয়া করেছেন আর কান্না করছেন। ঘরে এসে মাকে জোড়ে জোড়ে ডাকতাম যেন আমি নামাজ পড়ে মহাভাড়ত সুদ্ধ করে ফেলেছি। মা আবার রাতে খাবার দিতেন। তখন ভাত কিন্তু তার সাথে দুপুরের মাংস, তবে তা আলাদা ভাবে আমার জন্য রেখে দিতেন। বড় হয়েছি।

এখন আগের সেই অদ্‌ভুদ অনুভূতিগুলো হারিয়ে গেছে। যন্ত্রময় এই ঢাকার শহরে আমিও এক যন্ত্রমানব। নামজ আর পড়া হয় না। বন্ধুদের সাথে সেই হাসাহাসি, লুকোচুরি, মায়ের হাতের ছোয়া সবকিছুই কেবল মনের এককোনে পড়ে আছে। মাঝে মাঝে মাথাচড়া দিয়ে ওঠে।

বলে শরিফ তুই কি ••••••••••••••••••••••••••••••???????????

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।