আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সেনাবিদ্বেষ : আত্মপক্ষ সমর্থন-১০



১৭. * শূন্য আরণ্যকের তালিকা: ‘'রেব এর কিছু কিছু ভালো কাজের পাশাপাশি শত শত ঘুষ খাওয়ার অভিযোগ, বিনা বিচারে ক্রসফায়ারে সন্ত্রাসীদের পাশাপাশি নিরপরাধ লোকের মৃত্যু’.' ভাল কাজগুলো কী কী জানালে ভাল হত. RAB-এর অধিকাংশ সদস্য সেনাসদস্য নন. ঘুষ, দূর্নীতির জন্য RAB-এর পুলিশ সদস্যদের কয়জনের চাকুরি যায় জানি না, তবে সেনাসদস্যদের চাকুরি হারানো, জেল-জরিমানা ও অন্যান্য শাস্তি প্রাপ্তির ঘটনা অনেক (পরিচিত RAB সদস্যদের থেকে তথ্য নিন, ভ্রান্তির অপনোদন হবে). আমি ক্রসফায়ারের সরাসরি বিরোধী, এতে RAB-এর উৎশৃঙ্খল, দূর্নীতিগ্রস্থ ও অমানবিক সংস্থায় পরিণত হওয়ার পথ খুলে. RAB এটির প্রবর্তক হলেও ২০০৬-এর তথ্য থেকে মনে করতে পারছি, পুলিস কর্তৃক ক্রসফায়ারের ঘটনা RAB-এর তুলনায় প্রায় চারগুন বেশি ছিল (কারও সাম্প্রতিক তথ্য জানা থাকলে দয়া করে লিংক দিন). কিন্তু, বাস্তবতা হল, দেশের অধিকাংশ মানুষ ক্রসফায়ারের পক্ষে, ব্লগের মতও পক্ষেই ভারি মনে হল. তাদের এই নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির কারণ আমরা জানি. তারা মায়নাসে মায়নাসে প্লাসের আলেয়ার পিছু নিয়েছেন. বাজার-তত্ত্ব অনুযায়ী, চাহিদা থাকলে সরবরাহ থাকবে. দেশের মানুষের ক্রসফায়ারের চাহিদা আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নৈরাজ্যের পথ ধরা - এর থেকে উত্তরণের পথ খোঁজা আজ জরুরি. আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হলে ক্রসফায়ারের চাহিদা থাকবে না. সেনাবিদ্বেষের নিষ্ফল পথে না গিয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত করতে, চলুন আজ পজেটিভ কিছু লিখি. ১৮. * শূন্য আরণ্যকের তালিকা: '‘উইকিপিডিয়া অনুযায়ী আমাদের ২০০৭ এর মিলিটারী এক্সপেন্ডিচার হলো 5858,30,00,000 টাকা’.' উইকিপিডিয়ার তথ্যানুসারেই ভারতের প্রতিরক্ষা বাজেট বাংলাদেশের ৩৯-গুন, কিন্তু দেশটাতো আকারে ও জনসংখ্যায় ৩৯-গুন বড় না! পাকিস্তানের কথা বাদই দিলাম. দক্ষিণ এশিয়াতেই নেপালের সামরিক ব্যয় জিডিপির ১.৬%, ছোট্ট মালদ্বীপেরও ৫.৫% আর বাংলাদেশের মাত্র ১.৫% . গৃহযুদ্ধজয়ী শ্রীলংকার সামরিক ব্যয় আমাদের দ্বিগুন, সামরিক বাহিনীও আমাদের চেয়ে বড় –- পাশাপাশি, আমাদের সাথে জনসংখ্যার অনুপাতটাও মনে রাখুন. * শূন্য আরণ্যক বলেছেন, '‘ভারতের সাথে আমরা কোন সময়ই পেরে উঠবো না... শক্তিমত্তায়... নিউক্লিয়ার বোমার কথা ছেড়েই দিলাম’.' জনাব শূন্যের হীনমন্যতা আর আত্মমর্যাদার দৈন্য দেখে লজ্জিত হলাম. আমরা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে পরাজিত করেছি. ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধে একা সিনিয়র টাইগার্সের (ইস্ট বেঙ্গল) সাহসিকতার পদক প্রাপ্তির সংখ্যা ছিল পাকিস্তানের প্রদত্ত মোট পদকের অর্ধেকেরও বেশি. গরিব ভিয়েতনাম ফ্রান্সকে পরাজিত করল, আমেরিকাকে নাস্তানাবুদ করল এই সেদিন - কই, পারমানবিক অস্ত্রতো এদেরও ছিল! চেচেনদের কাছে রাশানদের মার খাওয়ার অধ্যায়তো এখনও শেষ হয়নি. ছোট্ট ইসরায়েল পুরো আরব বিশ্বের উপর ছড়ি ঘুরাচ্ছে. আর কিউবা? শূন্যেরা এসব দেখেন না? বর্তমানের একক সুপারপাওয়ার কীভাবে মার খাচ্ছে ইরাক-আফগানিস্তানের কাছে, এসব দেখুন. তাও একা লড়াই করার ক্ষমতা নাই, ন্যাটো ফোর্স নিয়েও হিমসিম অবস্থা. নিজেদের অন্তর্কোন্দল না থাকলে এবং গেরিলাদের পাশাপাশি তাদের নিয়মিত বাহিনীও যুদ্ধ করলে এই ন্যাটো বাহিনীর কী অবস্থা হত, একবার কল্পনা করুন. আর ভারত? বিত্ত, প্রযুক্তি, সামরিক শক্তি, আনবিক শক্তি, কূটনৈতিক শক্তি - কোনভাবে তারা যুক্তরাস্ট্রের সাথে তুলনীয়? আমাদের মনে রাখতে হবে, ভারতকে অতি-আবশ্যিকভাবে পাকিস্তান ও চীন সীমান্তের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তবেই বাংলাদেশে আসতে হবে, যদি একান্তই আসে. আর আক্রমণের সাদামাটা সূত্র অনুযায়ী তিনগুন শক্তি নিয়ে আসতে হবে. পাঠকদের আশ্বস্থ করতে চাই, ভারতের ইস্টার্ন কমান্ডের সেই তিন গুন শক্তিমত্তা নাই. বাংলাদেশ হল প্রাকৃতিকভাবে প্রতিরক্ষার স্বর্গরাজ্য (defender’'s paradise –- এই অভিধা ভারতীয়সহ অন্যান্য বিদেশিদের দেয়া). আগ্রাসী ভারতের বিরুদ্ধে স্বদেশের মাটিতে আমাদের শক্তিমত্তা বহুগুনে বাড়বে, কারণ সেদিন শূন্যেরাও সাহসী হবেন (কারণ দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাবে যে!) এবং সশস্ত্রবাহিনীর পাশে এসে দাড়াবেন, বন্দুক না ধরুন, জনতার তথ্য এবং কায়িক, মানসিক ও বস্তুগত সমর্থনে এক সর্বব্যাপী অপ্রচলিত যুদ্ধের মুখোমুখী হবে ভারত. লেজে আগুন-লাগা শেয়ালের মতই সে পালিয়ে বাঁচতে বাধ্য হবে এই বাংলার মাটি থেকে. জানি না আমার যুক্তি কারও মনে ধরলো কিনা, না ধরুক, তা হলেও কি আমরা যুদ্ধ করব না? টিপু সুলতানের বাণী স্মরণ করুন - শিয়ালের মত একশ বছর পরাধীন বাঁচার চেয়ে বাঘের মত একদিন বাঁচাও শ্রেয়তর.

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।