আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যতই দিন যাচ্ছে শেখ ততই বোকা হয়ে যাচ্ছে. . . . .( বিভাগঃ দৃশ্যমান ও অদৃশ্যমান বন্ধুরা)

একমুখাপেক্ষি না হয়ে যা কিছু ভাল তা গ্রহন করা উচিৎ...

বন্ধুটির নাম শেখ। ওর সাথে যেদিন প্রথম পরিচয় হলো সেদিন শেখকে দেখে মনে হয়েছিলো ও পাখির মতো চঞ্চল এবং অত্যন্ত মেধবিী একজন। সত্যিই ও মেধাবী। কিন্তু শেখ ধীরে ধীরে কেমন যেনো বোকা হয়ে হয়ে গেলো। প্রথম বোকামিঃ ওর বোকামিটা প্রথম ধরা পরলো সেকেন্ড ইয়ারে উঠে।

আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে ক্লাসের অবসরে আলম ভাইয়ের চায়ের দোকানে আড্ডা দিচ্ছিলাম। কয়েকজন বসেছিলাম আর কয়েকজন দাড়িয়েছিলাম। আমি বসেছিলাম আর শেখ দাড়িয়ে ছিলো। আমি শেখকে বললাম একটু পানি আনতো। ও আমার কথা শুনে হেলতে হেলতে আলম ভাইয়ের কাছে গেলো।

পানির একটা গ্লাস চাইলো, পানির বোতল থেকে পানি ঢাললো এরপর নিজে খেলো, তারপর হেলতে হেলতে আবার আমার কাছে চলে আসলো। আমিতো অবাক, ওকে বললাম পানি নিয়ে আসতে আর ও পানি খেয়ে চলে আসলো!! আমি বললাম, ”শেখ, এটা কি করলি?” ও বললো, ”কি করলাম?” তোকে না পানি আনতে বললাম? ও বললো, ”ও আচ্ছা আচ্ছা, পানি. . . .” এই বলে পানি নিয়ে আসলো. . . দ্বিতীয় বোকামিঃ একদিন আমি আর আমার এক বন্ধু (শুভ) টেবিল টেনিস খেলছিলাম। শেখ ও আমাদের সাথে ছিলো। আমাদের সবারই ২:৩০ মিনিটে ল্যাব ছিলো। শেখ ল্যাবে যাবে।

আমি আর শুভ নিশ্চিত ছিলাম না যে আমাদের ল্যাব হবে কিনা! তাই নিশ্চিত হওয়ার জন্য শেখ কে বললাম, ”শেখ, শুন । তুই ল্যাবে যা, যদি ল্যাব না হয় তবে একটা মিস কল দিবি, আর যদি ল্যাব হয় তবে দুইটা মিস কল দিবি। ”। ও বললো, ঠিক আছে। কিছুক্ষন পর আমি শেখের নম্বর থেকে একটা মিস কল পেলাম।

সাথে সাথেই শেখ শুভর নম্বরেও আর একটা মিস কল দিলো। এরপর আমি আমার বন্ধুর দিকে কিছুক্ষন চুপ করে তাকিয়ে রইলাম। বুঝতে পারছিলাম না যে শেখ কি আমাদের একটা মিস কল দিলো, নাকি দুইটা মিস কল দিলো! মোবইলেও টাকা ছিলো না, তাই কলও করতে পারলাম না। তাই প্রচন্ড জেদ নিয়ে ডিপার্টমেন্টে গেলাম। আমরা সিঁড়ি দিয়ে উঠছি আর শেখ হেলতে হেলতে সিঁড়ি দিয়ে নামছে।

ওকে বললাম, ”কিরে ল্যাব হবেনা?” ও বললো হবেনা। আমরা বললাম তাহলে দুটো মিস কল দিলি কেনো? ও বললো, দুটো কোথায়? তোর মোবইলে একটা মিস কল দিসি, আর শুভর মোবইলে একটা। আমরা আর কি বলবো!! হা হয়ে থাকলাম. . .! তৃতীয় বোকামীঃ অনেক দিন পর শেখের সাথে দেখা। শেখ আর আমি কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে হেঁটে যাচ্ছি। শেখ কেনো যেনো বারবার পেছন ফিরে তার পায়ের দিকে তাকাচ্ছে।

বারবার একই কাজ করায় আমি বিরক্ত হলাম। আমি বললাম, ”কি সমস্যা?” ও বললো, ”প্যান্টে পানি লাগছে কোথা থেকে?” আমি মনে হয় জীবনে এর চেয়ে বেশী অবাক কোনোদিন হইনি!! আমি বললাম, ”বৃষ্টি হচ্ছে. . .!!” ও আকাশের দিকে তাকিয়ে বললো, ”ও, তাইতো. . .” শেখ ইদানিং ফোন ধরেনা! কারণ জানার জন্য কয়েকদিন অনুসন্ধান চালালাম। জানতে পারলাম, ও সারাদিন মোবাইল সাইল্যান্ট করে রাখে, তাও ভাইব্রেট ছাড়া! আমি কারণ জানতে চাইলাম। শেখ বললো, রিং টোন বাজালে মোবাইল নষ্ট হয়ে যায়। আমি বললাম, অন্তত ভাইব্রেশন দিয়ে রাখ! ও বললো ভাইব্রেশন দিয়ে রাখলেতো আরো আগে মোবইল নষ্ট হবে।

শেখের অবস্থা মনে হচ্ছে দিন দিন আরও খারাপ হবে। আপনারা ওর জন্য দোয়া করবেন। বেচারা হৃদয় বিলাতে বিলাতে বোকই হয়ে গেলো!!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।