আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শয়তানের পয়গম্বর

---

শেষ যুদ্ধ দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পর যে নতুন বিশ্ব ব্যবস্থা গড়ে ওঠে তার কাছে মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষা ছিল অনেক। কিন্তু সব আশার মুখে ছাই দিয়ে নতুন বিশ্ব ব্যবস্থার পরাশক্তিরা যে আচরণ করেছে তা হিটলার অথবা মুসোলিনীর চেয়ে কোন অংশে কম নিষ্ঠুর নয় বরং অল্পকালের মধ্যেই মানুষের বুঝতে আর বাকি রইল না যে এই বিশ্ব ব্যবস্থা নাতসি তন্ত্রের-ই আরেক ধূর্ত রূপ যা প্রাক্তন শয়তানের চেয়ে বহুগুন ভয়াবহ ও সর্বগ্রাসী! এই বিশ্ব ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রন করছে অসংখ্য হিটলারের প্রেতাত্মা! তথাকথিত নতুন বিশ্ব ব্যবস্থা এই পর্যন্ত কোন রকম বিশ্ব যুদ্ধ ছাড়াই মানুষের জান ও মালের যে পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতী করেছে তার হিসেব করলেই কল্পনা করা যায় এই বিশ্ব ব্যবস্থার আওতায় যদি অন্য কোন বিশ্ব যুদ্ধ হয় তাহলে মানবসভ্যতার জন্য তা কি পরিমাণ ধ্বংসাত্বক হবে! এ হবে মানব সভ্যতার ইতিহাসে সবচেয়ে জঘন্য, ভয়াবহ ও লোমহর্ষক যুদ্ধ যার জীবনহানি ও ক্ষয়ক্ষতীর পরিমাণ এই পৃথিবীতে তাবৎকালের সমস্ত যুদ্ধকে ছাড়িয়ে যাবে! আমরা যদি শুধু গত একশ বছরের অভিজ্ঞতায় ফিরে যাই তাহলে দেখি হিটলার, মুসোলিনী, স্ট্যলিন, ল্যানিনের মত দোর্দণ্ড প্রতাপশালীদের যুদ্ধলীলায় সমস্ত পৃথিবী মানুষ-খুনের অস্থির তাণ্ডবে মত্ত। লক্ষ কোটি হোমোসেপিয়ানের রক্তে সত্যি দু:সহ স্বপ্নে পরিণত হয়েছিল সেই বছরগুলি। তারপর মুক্তির পয়গাম নিয়ে পৃথিবীর কলিজায় জাতিসংঘের শান্তির অট্টালিকা যখন ভর দিয়ে দাঁড়াল, তখন আমরা দেখলাম ভিয়েতনাম, ক্যাম্বোডিয়া ও কোরিয়ার ভূখণ্ডে মৃত্যুর বিভীষিকা! আমাদের পক্ষে কখনো বোঝা সম্ভব নয় সেই এক কোটি অসহায় দরিদ্র কৃষক ও নির্দোষ জনগণের মর্মন্তুদ যন্ত্রণা যাদের ন্যাপাম ,ক্লাস্টার আর জৈবিক অস্ত্রের ঝাঁজ দিয়ে ইঁদুরের মত হত্যা করা হয়েছিল! জীবনের পথ থেকে পুঁজিবাদের কাঁটা উপ্‌ড়ে ফেলে নতুন এক সাম্যের সমাজ গড়ার অদম্য আস্পর্ধাই ছিল তাদের একমাত্র অপরাধ! এরপর মাত্র দুই-আড়াই যুগের মধ্যেই দেখে ফেললাম বিশ্ব শান্তির স্ব-ঘোষিত নব্য পয়গম্বরদের উস্‌কে দেওয়া কাশ্মীর-ইন্ডিয়া, আফগানিস্তান-রাশিয়া, ভারত-পাকিস্তান, ব্রিটেন-আয়ারল্যান্ড,চেচনিয়া-রাশিয়া, উগান্ডা-বুরুন্ডি, মিশর-ইসরাইল, সিরিয়া ইসরাইল , প্রথম লেবানন-ইসরাইল, প্যালেসটাইন-ইসরাইল, ইরাক-ইরান, ক্রোট-সার্বিয়ান, ইরাক-কুয়েত, ইরাক-যুক্তরাষ্ট্র প্রথম, আফগানিস্তান-যুক্তরাষ্ট্র এবং আরো অনেক অনেক অনেক সংঘাত...., যার ক্ষয়ক্ষতী ও জীবনহানির হিসাব একমাত্র বিধাতা ছাড়া আর কারো পক্ষে নির্ণয় করা সম্ভব নয়! ৭১’এ নিজ দেশের মাটিতেই সাক্ষী হয়ে রইলাম আন্তর্জাতিক চক্রান্তের সস্তা শিকার, খুন আর ধর্ষণের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকা পাকিস্তানি মার্কিন মদদ-পুষ্ট জেনারেলদের লক্ষ লক্ষ খুন-ধর্ষণের ! এ রক্তের হলি-খেলা যেন আর শেষ হবার নয়! উনিশ শতকের শেষার্ধে হঠাৎ খোদ ইউরোপের নাকের ডগায় সস্নবোদান মিলোসোভিচ এর উগ্র জাতীয়তাবাদী স্লাভিচ সৈন্যরা ধর্ষণ ও হত্যাযজ্ঞের উন্মত্ততায় সাবাড় করল বসনিয়া আর কসভোর কয়েক লক্ষ নিরস্ত্র মানুষ! এসব যুদ্ধের প্রায় প্রত্যেকটিতে শান্তির নব্য পয়গম্বরদের (আমেরিকা, ব্রিটেন ,ফ্রান্স ও তথাকথিত সাম্যের বামপন্থী ব্লক চীন-রাশিয়া) প্রত্যক্ষ ভূমিকা ,উসকানি ও মদদ ছিল। এইবার বিক্ষুব্ধ বোবাদের মঞ্চ থেকে অসহায়ের মত দেখলাম বুশ-বেস্নয়ারের তিক্ত আর ঝাঁজালো ডিপ্লেলেটেড ইউরোনিয়ামের বারুদ এক এক করে শেষ করে দিল টাইগ্রিস নদীর তীরে গড়ে ওঠা মেসোপটিমিয়া সভ্যতার দশ লক্ষ মূল্যবান নিষ্পাপ প্রাণ! ....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।