এইতো কিছুদিন আগে ঘুরে এলাম ভয়ানক সুন্দরের রাজ্য মাসাইমারা সাফারি থেকে। ভাবছেন সুন্দর আবার ভয়ানক হয় কি করে?এখানে একবার ঘুরে গেলেই তা বুঝতে পারবেন। মাসাইমার কেনিয়ার একটি সবচেয়ে বড় সাফারি। শুধু কেনিয়ার নয়,বিশ্বের একটি বৃহতম সাফারি। মাসাইমারার উদ্দেশ্যে আমি, আমার হাসবেন্ড আরও ৪ জনসহ মোট ৬ জনের একটা গ্রুপ ৬ই মার্চ ১২টার দিকে রওনা হলাম।
পথে যেতে যেতে অনেক প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মুগ্ধ করেছে আমাদের সবাইকে। বিকেল ৫ টার দিকে প্রধান ফটকে আমরা পৌঁছলাম। তারপর টিকেট কেঁটে আমাদের পূর্ব নির্ধারিত লজের উদ্দেশ্যে আবার রওনা হলাম। যেতে এতো সময় লাগছিল যে,আমরা সবাই ভাবছিলাম এখানে মনে হয় কোন লজ নাই। যাই হোক অবশেষে ৬টা ৩০ এ কিকোরক লজে পৌঁছলাম।
যেতে যেতে অবশ্য অনেক পশু পাখি দেখা হয়েছে আমাদের। লজে পৌঁছানোর পর লজের স্টাফরা খুব সুন্দর ভাবে শুভেচ্ছা জানাল। তারপর ফ্রেশ হয়ে রাতের খাবার শেষে কিছুক্ষন গল্প করে সবাই যার যার রুমে চলে গেলাম। সবাই খুব ক্লান্ত ছিলাম তাই তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পরলাম,তাছাড়া পরদিন ভোরে আমাদের সাফারির উদ্দেশ্যে রওনা হতে হবে। পরদিন খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে গেলাম সবাই।
চা খেয়েই সাফারির গাড়িতে উঠে পরলাম। সেদিনের ভোরটা ছিল সত্যি দারুন চমৎকার। আমাদের চোখের সামনে ধীরে ধীরে সূর্যিমামাকে উঠতে দেখলাম। চমৎকার সেই অনুভূতি। সাফারি করতে করতে অনেক পশুপাখি দেখতে পেলাম।
প্রথমেই চোখে পরলো হাজার হাজার মহিষ। তারপর অনেক হরিন আরো কতো কিছু তা বলে শেষ করা যাবে না। তারপর চোখে পরল চিতার হরিন শিকার তাও গাছের মগডালে বসে হরিনের মাথাটা নিচের দিকে ঝুলিয়ে সে আয়েশ করে খাচ্ছে। এতো কাছ থেকে এগুলো দেখে যেমন ভাল লাগছিল তেমন ভয়ে গা শিরশর করছিল। এরপর দেখা হলো বনের রাজা সিংহের সাথে।
রাজার মতই সে বসে ছিল মেইন রাস্তায়,কোন দিকে তার কোন খেয়াল নেই। গাড়ি থেকে একহাত দূরে ছিলেন তিনি। ভয়ে গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠছিল তেমনি ভীষন ভাল লাগা কাজ করছিল। যাই হোক,আমাদের গ্রুপের প্রতিটি চোখই যেন ছিল অনুসন্ধানী,কোথায় কি আছে সবার চোখ তা খুজছে। এভাবে দুটি দিন পার করে আমরা নিজ গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম।
ভীষন ভাল লাগা নিয়ে ফিরছিল প্রতিটি মন। যাই হোক আপনারা কেউ যদি এই ভয়ানক সৌন্দর্যকে উপভোগ করতে চান,তবে সময় করে একবার ঘুরে আসুন না মাসাইমারা সাফারি থেকে। কিছু ছবি এতে সংযোজন করলাম। ভাল লাগলে জানাবেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।