আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অন্ধ হলে কি প্রলয় বন্ধ থাকে?

ফেসবুক আইডি:নাই

পয়লা মে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের এক জনসভায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিরোধী দল বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া যেসব কথাবার্তা বলেছেন, তাতে মনে হয় তিনি বাংলাদেশের জনগণকে হয় নির্বোধ, নয় অন্ধ বলে মনে করেন। খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘দেশে এখন আর কোনো জঙ্গি নেই, যা ছিল আমরা ধরেছি ও শাস্তি দিয়েছি। ’ দেশবাসীর মনে আছে, বেগম জিয়ার প্রধানমন্ত্রিত্বে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে যখন বাংলা ভাই ও শায়খ আবদুর রহমানের নেতৃত্বে জঙ্গি-তৎপরতার খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ পাচ্ছিল, তখন তিনি ও তাঁর মন্ত্রীরা বলতেন, বাংলা ভাই বলে কেউ নেই। বাংলা ভাই মিডিয়ার সৃষ্টি। জঙ্গিদের ব্যাপারে বেগম জিয়ার সরকারের নমনীয় মনোভাব ও কার্যত পৃষ্ঠপোষকতার ফলে জঙ্গি-তৎপরতা ক্রমে এতটাই বিস্তার লাভ করে যে একটা সময় পুলিশের সঙ্গেও জঙ্গিদের বন্দুকযুদ্ধ ও পুলিশের অস্ত্র লুটের ঘটনা ঘটে।

২০০৫ সাল নাগাদ জঙ্গিরা এমন সংগঠিত হয়ে ওঠে যে সে বছরের ১৭ আগস্ট সারা দেশের একটি ছাড়া সব জেলায় একযোগে বোমা বিস্কোরণ ঘটিয়ে নিজেদের শক্তিমত্তার জানান দেয়। দেশের বিভিন্ন আদালতে হামলার ঘটনা ঘটিয়ে তারা দেশের প্রচলিত বিচারব্যবস্থার প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়। দেশি-বিদেশি সংবাদমাধ্যমে এ দেশে জঙ্গিবাদের বিস্তার সম্পর্কে তথ্য প্রকাশের ফলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি যখন হুমকির মুখে পড়ে, তখনো সরকার বলার চেষ্টা করে যে বাংলাদেশের শত্রুরা এসব মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছে। কিন্তু অবস্থা এতটাই খারাপ হয়ে যায় যে বেগম জিয়ার সরকারের পক্ষেও আর জঙ্গি-তৎপরতার ব্যাপারে নিষ্কিত্র্নয় থাকা সম্ভব হয় না। বাংলা ভাই ও শায়খ আবদুর রহমানসহ কিছু জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা হয়; বিচারে তাঁদের ফাঁসি হয়।

কিন্তু বেগম জিয়ার সরকারের আমলেই বিপুলসংখ্যক জঙ্গিকে জেল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। মামলায় নিম্ন আদালতের রায়ে যাবজ্জীবন কারাদন্ড পেয়েছে এমন ৪৬ জঙ্গিকে জামিন দেওয়া হয়েছে। তারা জেল থেকে বেরিয়ে বিভিন্ন সংগঠনের নামে নতুন করে জঙ্গি-তৎপরতায় লিপ্ত হয়েছে। এটা শুধু যাবজ্জীবন কারাদন্ডপ্রাপ্তদের সংখ্যা; বিভিন্ন মেয়াদের সাজা হয়েছে বা গ্রেপ্তার হয়ে বিচারাধীন ছিল, এমন জঙ্গিদেরও ব্যাপক সংখ্যায় জামিন দেওয়া হয়েছে বেগম জিয়ার সরকারের আমলেই। উল্লেখ্য, বাংলা ভাই শেষবার গ্রেপ্তার হওয়ার আগেও দুইবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।

জয়পুরহাটে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হলে সেখানকার বিএনপির সাংসদ পুলিশ কর্মকর্তাকে ভর্ৎসনা করে তাঁকে মুক্ত করে দিয়েছিলেন। এ সবই জানা ইতিহাস। জঙ্গিবাদের সঙ্গে বিএনপি-জামায়াতের সম্পর্ক পৃষ্ঠপোষকতা বৈ অন্য কিছু ছিল না। কিন্তু এখন আর জনগণের সেসব স্নরণ না করলেও চলে। বেগম জিয়া নতুন করে দেশে জঙ্গি নেই বলে সেটা স্নরণ করিয়ে দিলেন।

কিন্তু কী চান তিনি এসব বলার মধ্য দিয়ে? ভোলাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় জঙ্গিদের ঘাঁটি, অস্ত্র-বিস্কোরক আটকের ঘটনাগুলো দেশে জঙ্গিবাদের অস্তিত্ব ভালোভাবেই জানান দিচ্ছে। বেগম জিয়া ও তাঁর দল কি এ বাস্তবতা অস্বীকার করেই চলবেন? এই ধ্বংসাত্মক ও অশুভ শক্তির পক্ষেই কথা বলে চলবেন?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।