আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মার্কিন রাষ্ট্রদূত পক্ষান্তরে প্রধানমন্ত্রী কে ই সমর্থন করলেন



ঢাকাস্থ মার্কিন রাষ্ট্রদূত মি. জন এফ মরিয়ার্টি পক্ষান্তরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যকেই সমর্থন করলেন। মে দিবসের পৃথক সমাবেশ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘দেশে জঙ্গি হুমকি রয়েছে’ এবং বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া ‘দেশে এখন কোনো জঙ্গি হুমকি নেই’ এমন মন্তব্য করেন। তাদের এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রদূত মরিয়ার্টি বলেন, বাংলাদেশে ভোলায় সাম্প্রতিক অস্ত্র উদ্ধার এবং দেশব্যাপী জেএমবি সদস্য গ্রেপ্তার প্রমাণ করে, এদেশে সন্ত্রাস বা জঙ্গিবাদ একটি উদ্বেগের বিষয়। মার্কিন সরকারের তথ্য অনুযায়ীও বাংলাদেশে এখনো সন্ত্রাস বা জঙ্গিবাদের হুমকি রয়েছে। ----------------------------------------------------------------------------- মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ---------------------------------------------- কাগজ প্রতিবেদক : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, বাংলাদেশে এখনো সন্ত্রাস বা জঙ্গিবাদের হুমকি রয়েছে।

গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে কার্যকর ও শক্তিশালী করাই এই মুহূর্তে বাংলাদেশের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছে প্রভাবশালী দেশটি। একই সঙ্গে বিডিআর পুনর্গঠনে বাংলাদেশকে সহায়তা দিতেও আগ্রহ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) আয়োজিত মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেমস এফ মরিয়ার্টি গতকাল রোববার এসব কথা জানান। ডিআরইউ ভিআইপি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশ-ইউএস দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডিআরইউ সভাপতি শামীম আহমেদ, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শেখ মামুনুর রশীদ, মার্কিন দূতাবাসের উপ-পরিচালক হারভে ডব্লিউ সারনভিচ, প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মেরিনা ইয়াসমিন প্রমুখ। মে দিবসের পৃথক সমাবেশ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘দেশে জঙ্গি হুমকি রয়েছে’ এবং বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া ‘দেশে এখন কোনো জঙ্গি হুমকি নেই’ এমন মন্তব্য করেন।

তাদের এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রদূত মরিয়ার্টি বলেন, বাংলাদেশে ভোলায় সাম্প্রতিক অস্ত্র উদ্ধার এবং দেশব্যাপী জেএমবি সদস্য গ্রেপ্তার প্রমাণ করে, এদেশে সন্ত্রাস বা জঙ্গিবাদ একটি উদ্বেগের বিষয়। মার্কিন সরকারের তথ্য অনুযায়ীও বাংলাদেশে এখনো সন্ত্রাস বা জঙ্গিবাদের হুমকি রয়েছে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, তার দেশ বিডিআর পুনর্গঠনে সহায়তা দিতে আগ্রহী। এই ব্যাপারে ইতিমধ্যে প্রস্তাবও দিয়েছে তার সরকার। তবে এই পুনর্গঠন কেমন হবে বা নাম কি হবে তা এদেশের সরকারকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

বর্তমান সরকারের সামনে স্পষ্ট চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিদ্যুৎ ও পানি সমস্যা থাকলেও মরিয়ার্টির মতে, একটি সুস্থ গণতন্ত্রের জন্য বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে জোরদার করাই এই মুহূর্তে বড় চ্যালেঞ্জ। তিনি বলেন, শক্তিশালী ও টেকসই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সময় লাগে। এই ব্যাপারে চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। আর স্বাধীন গণমাধ্যম ছাড়া স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের অস্তিত্ব অসম্ভব। এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, দুটি বড় রাজনৈতিক দলের মধ্যে সংলাপ ও আলোচনা দরকার।

ক্ষমতাসীন দলকে জাতীয় সংসদে আলোচনা ও বিতর্কের জন্য বিরোধী দলকে যথার্থ সুযোগ দিতে হবে, অন্যদিকে বিরোধী দলকেও সরকারকে সহায়তা করতে হবে। বিদেশে পলাতক যুদ্ধাপরাধী ও বঙ্গবন্ধু খুনিদের ফিরিয়ে আনার প্রসঙ্গে মরিয়ার্টি জানান, অপরাধীকে বিচারের আওতায় আনাকে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন করে। একই সঙ্গে এই বিচারটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হতে হবে। লিখিত বক্তব্যে মরিয়ার্টি বলেন, দীর্ঘদিনের বন্ধুদেশ বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্রের উন্নয়নে, উন্নয়ন নিশ্চিতকরণে এবং সন্ত্রাসবাদকে আশ্রয় দিতে অস্বীকৃতি জানাতে সহায়তা দিয়ে যাবে। গত ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনকে তিনি এ যাবৎকালের সবচেয়ে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হিসেবে আখ্যা দেন।

তিনি বলেন, এই নির্বাচনে জয়লাভের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নতুন সরকার ক্ষমতায় এসেই সংসদের মাধ্যমে ‘বিচার বিভাগ পৃথককরণ’ ও ‘তথ্য অধিকার আইন’ এবং ‘অর্থ পাচার প্রতিরোধ অধ্যাদেশ’ ও ‘সন্ত্রাস বিরোধী অধ্যাদেশ’ পাস করেছে যা প্রশংসনীয়। তিনি বিশ্ব অর্থনৈতিক সংকটের প্রভাবকে বাংলাদেশের সামনে সংগোপনে আসা ভীতি হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এর প্রভাবে এদেশের রপ্তানি ও বিদেশ থেকে অর্থ প্রেরণ প্রবাহ কমে যেতে পারে। তিনি আরো বলেন, একটি দুঃসময়ের মধ্যে আগামী বাজেট হতে যাচ্ছে। আসন্ন বাজেটে তিনি চলমান বিদ্যুৎ সংকট, গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো প্রকল্প, কৃষি ও শিক্ষা খাতকে অগ্রাধিকার দেয়ার সুপারিশ করেন। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইর সহায়তার পরও বিডিআর সদর দপ্তরে সেনা হত্যাযজ্ঞের ঘটনার তদন্তে সময় লাগছে বলে যুক্তরাষ্ট্র ও এফবিআই মোটেও অবাক হচ্ছে না জানিয়ে মরিয়ার্টি বলেন, এই ধরনের ঘটনায় অনেকের সাক্ষাৎকার নিতে হয়।

এই প্রসঙ্গে তিনি ৯/১১ এর দৃষ্টান্ত টেনে বলেন, এ ধরনের ঘটনার তদন্ত সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। উপজেলা চেয়ারম্যানদের ওপর সংসদ সদস্যদের খবরদারি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তার দেশ ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণে বিশ্বাস করে যাতে তৃণমূল পর্যায় থেকেও জনগণ সিদ্ধান্ত গ্রহণে অংশ নিতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশী তৈরি পোশাকের অবাধ প্রবেশাধিকার বিষয়ক মার্কিন কংগ্রেসে বিবেচনাধীন বিলটি প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত জানান, তিনি এই বিলটির সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত নন। তবে এটি খুবই কঠিন হবে। ----------------------------------------------------------------------- দৈনিক ভোরের কাগজ ।

৪ মে ২০০৯ প্রকাশিত

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.