আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

টেলিযোগাযোগ শিল্পে সরকারী নীতি বিষয়ক কয়েকটি কথা

ক খ গ ঘ ঙ

একটা সময় ছিল যখন টিএ্যান্ডটি তে ঢাকা-চট্টগ্রাম কথা বলতে মিনিটে ৩৫ টাকা বা ১ ডলার খরচ করতে হত (তখন ডলারের বিপরীতে টাকার মান ও রকমই ছিল)। সেই সময় থেকে আমরা অনেক দূরে এখন। টেলিযোগাযোগ সেবা অনেক সহজলভ্য হয়েছে এবং এতে বাংলাদেশের মানুষ যে উপকৃত তাতে কোন সন্দেহ নাই। তাই প্রতিটা সরকারই দাবী করে তাদের নীতিই বাংলাদেশের এই সফল্যের পিছনে সবচেয়ে কার্যকর ভুমিকা রেখেছে। দেশীয় প্রতিষ্ঠানকে এই শিল্পের সাথে সম্পৃক্ত রাখার সরকারী নীতিও বেশ প্রসংসা পেয়েছে বলেই আমার মনে হয়, যদিও তা কতোটা সফল হয়েছে তা বিতর্কের দাবী রাখে।

টেলিযোগাযোগের সেবা বাজারের প্রতি আমাদের মনযোগ যতটা বেশি ততটা মনযোগ সম্ভবত যন্ত্রাংসের বাজারের প্রতি আমাদের নেই। সেকারনেই ল্যান্ড ফোন, ইন্টার ন্যাশনাল গেট ওয়ে বা ইন্টারনেট সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে দেশি প্রতিষ্ঠানকে উৎসাহিত করতে দেখা গেলেও যন্ত্রাংশ প্রস্তুত বা আমদানীর বাজার থেকে উপকৃত হবার তেমন কোন প্রচেষ্টা লক্ষ্য করা যায় না। মোটামুটি ভাবে ধরা যায় দেশে এখন ৩ কোটি মোবাইল ব্যবহারকারী আছেন (মোট সংযোগ এর চেয়ে অনেক বেশি)। অর্থাৎ ৩ কোটি মোবাইল হ্যান্ডসেট চালু অবস্থায় আছে। এক একটা হ্যান্ডসেট গড়ে ৩ বছরের বেশি ব্যবহার করা হয় বলে আমার মনে হয় না।

সে হিসাবে আমরা বছরে ১ কোটি হ্যান্ডসেট আমদানি করি। হ্যান্ডসেটের গড় মূল্য ৭ হাজার টাকা করে ধরলে, বছরে শুধু হ্যান্ডসেট আমদানী করতেই আমরা ৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করি যা গ্রমীন ফোনের ইনিসিয়াল ইনভেস্টমেন্ট এর প্রায় সমান। মোবাইল ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ছেই, কাজেই টাকার এই পরিমান আরও বেশি হতে পারে। সেবা ক্ষাতে সরকারের রাজস্ব আয় কম নয়। নতুন সংযোগ কিনতে গেলে ৮০০ টাকা ট্যাক্স, সেবা গ্রহনের জন্য ১৫% ভ্যাট আমরা সরকারকে দিয়ে থাকি।

টেলিযোগাযোগের সেবা ক্ষাত বিলাস সামগ্রির মধ্যে পরে না। মানুষ প্রয়োজনের তাগিদেই কথা বলে। কিন্ত মোবাইল হ্যান্ডসেট অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিলাস সামগ্রীর মধ্যে পরে। কিন্তু এ ক্ষাত থেকে সরকারের রাজস্ব আয় কতো টুকু? টেলিযোগাযোগ সেবার মূল্য বাংলাদেশে যে পরিমান নীচে নেমে এসেছে তাতে দেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষে নতুন করে এ প্রতিযোগিতায় নামা কতোটা সহজ হবে তা নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে। ল্যান্ড ফোনের ক্ষেত্রে তার প্রমানও আমরা দেখেছি।

বরং যন্ত্রাংশ প্রস্তুতের ক্ষেত্রে দেশি প্রতিষ্ঠানকে সুযোগ করে দেয়ার সরকারী উদ্দোগ প্রয়োজন। আমাদের এতো বড় বাজারে বাইরে থেকে আমদানীর চেয়ে বরং দেশে প্লান্ট স্থাপনের জন্য কোম্পানীগুলোকে কে উৎসাহিত করা প্রয়োজন। আমাদের এত বড় বাজার দর কষাকষির জন্য অবশ্যই আমাদেরকে অনেক ভাল অবস্থানে এনে দিয়েছে। এর সুযোগ আমাদেরকে নিতেই হবে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.