আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পাভেল মহিতুল আলম এর প্রথম আলোর নাচ-গানের পক্ষে সাফাই স্ট্যাটাস !

সব হৃদয়ের গল্প বলি, রংধনুটাকে রং করি, নির্ঘুম চোখের কথা নিয়ে বৃষ্টির মত ঝরে পড়ি সারা বাংলাদেশ আজ এতই শোকার্ত যে এই কয়টা দিন কোনো বাংলাদেশি দম্পতি সেক্স করে নাই। কোনো প্রেমিক প্রেমিকা ডেট করে নাই। কেউ হিন্দী কিবা বাংলা গানে সানি লিওন-কারিনা-ক্যাটরিনা-ববির পেট দেখে নাই। বার্সেলোনা-রিয়ালের খেলা দেখে নাই। কোনো চ্যানেলে কোনো নাচ-গান-সিনেমা-নাটক প্রদর্শিত হয় নাই, কোনো পত্রিকায় বিনোদন পাতাটা প্রকাশিত হয় নাই।

মানুষ বেড়াতে যায় নাই। বৃষ্টি দেখে কারো মনটা খুশিতে নেচে ওঠে নাই। খেলাধুলা করে নাই। পূর্বনির্ধারিত কোনো বিয়ে-জন্মদিনের অনুষ্ঠান হয় নাই। কেউ কোনো জোকস শুনে নাই, হাসি ঠাট্টা করে নাই।

মজার কিছু দেখে নাই, শোনে নাই, বলে নাই। কোনো মানুষ এই কয়টা দিন এক ফোটা হাসে নাই। কারণ অসহায় মানুষগুলোকে যতো টাকাই তারা দেক, যতোভাবেই হেল্প করুক, যতোভাবেই শোক করুক, তারপরও প্রাত্যহিক ও পূর্বনিধারিত ওই সবকিছুর মধ্যেই তো আনন্দ আছে! শোকের সময় তো আর 'এসব' আনন্দ করা যায় না! বাংলাদেশ ক্রিকেট দল বিদেশের মাটিতে জিম্বাবুইয়ের সাথে তাদের দ্বিতীয় টেস্টটি বর্জন করেছে। যুবদল দেশের মাটিতে খেলে নাই শ্রীলংকার সাথে। কারণ সেখানে যতোই কালো ব্যাজ ধারণ করুক, খেলোয়ারদের মনটা যতোই শোকার্ত থাকুক, একেকটা উইকেট পেলেই তারা আনন্দে ভাসবেন, ভাসবে পুরো জাতি, একেকটা ফিফটি-সেঞ্চুরি হলে তারা আনন্দ পাবেন, পাবে পুরো জাতি।

শোকের মধ্যে এমন আনন্দ একদমই মানায় না, সে আপনি যতোভাবেই আহত মানুষগুলোকে সহাযোগিতা করেন না কেন! বন্ধ ছিলো দেশের ফুটবল খেলা, বন্ধ ছিলো পূর্বনির্ধারিত ৮ম বাংলাদেশ গেমস। খেলাই হয়নি, পদক পেয়ে আনন্দ করার তো প্রশ্নই ওঠে না। এই কটা দিন মানুষ ভাত খায় নাই... না না.. খেয়েছে। বেঁচে থাকার জন্য খেতে হয় বলে খেয়েছে শুধু, মন থেকে খায় নাই। তরকারিতে লবণ কম হয়েছে বলে কেউ চিৎকার চেঁচামেচি করে নাই, রান্নাটা খুব ভালো হলেও কোনো প্রশংসা করে নাই।

দৈনন্দিন কাজকর্ম চলেছে, তবে সেখানে বিন্দুমাত্র আনন্দও ছিলো না। সারাদেশের কোনো মানুষ যখন কোনো আনন্দ করে নাই, সেখানে শুধু প্রথম আলোই এত শোকের ভীড়েও আনন্দ করেছে। পূর্বনির্ধারিত অনুষ্ঠান করেছে। তারকাদের নিয়ে নাচগান করেছে, হাসিঠাট্টা করেছে। ছি প্রথম আলো, ছি! সেই অনুষ্ঠান আয়োজনের পেছনে যতো শ্রমই থাকুক, ৪ মাস/এক বছর কিংবা যতো সময় ধরেই তার পরিকল্পনা/কাজ করা হোক, সম্মেলন কেন্দ্রের বুকিং পাওয়া যতোই কঠিন হোক, দেশের সব তারকার শিডিউল মিলিয়ে তাদের এক সাথে করাটা যতোই দুঃসাধ্য হোক, আজীবন সম্মাননাপ্রাপ্ত গুণী মানুষটাকে এই দিনের পর সামনাসামনি সম্মান জানানোর সুযোগটুকু আর যতোই না পাওয়া যাক, এই দিনে না করলে অনুষ্ঠানটি এ বছর আর না হবার যতোই সম্ভাবনা থাকুক, প্রথম আলোর উচিৎ হয় নাই অনুষ্ঠানটি এখন করা।

প্রথম আলো বন্ধুসভা ও ট্রাস্টের ছেলেমেয়েরা আগে থেকেই ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের পাশে যতোই দাঁড়াক, এর কর্মীরা দাপ্তরিক ও ব্যক্তিগতভাবে যতোই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেক না কেন, অনুষ্ঠানটা আয়োজন করা একদমই ঠিক হয় নাই। কারণ যতোই নীরবতা থাকুক, পূর্বনির্ধারিত অনুষ্ঠানের দৈর্ঘ্য যতোই কমানো হোক, অনষ্ঠান থেকে পূর্বনির্ধারিত নাচগান ও আনন্দপর্বের বেশিরভাগই যতোই বাদ দেয়া হোক, যতোই কালো ব্যাজ ধারণ করা হোক, ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের জন্য যতোই টাকা তোলা হোক, শোককে শক্তিতে পরিণত করে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে যতোই আহবান জানানো হোক না কেন, অনুষ্ঠানে যে কিছুটা আনন্দও হয়েছে সেটা তো মিথ্যা না, তাই না? এই আনন্দটা প্রথম আলো কীভাবে করতে পারলো? ষোলকোটি মানুষ যখন দৈনন্দিন আনন্দ বিসর্জন দিয়ে দিলো, তখন প্রথম আলো এই আনন্দটুকু না করলে কি পারতো না? ছি প্রথম আলো, ছি! (সূত্র ) মানুষ কতটা নিচে নামলে এমন দালালী করতে পারে তা এইটা না দেখলে অসম্পূর্ণ থেকে যেত। তাই এটা সবাইকে জানানোর জন্য কপি-পেষ্ট করলাম। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ৪৯ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.