আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অন্ধকারে কাঁদো শিরিন, তোমার বাবার মৃত্যুর তদন্ত হবে না,



অন্ধকারে অঝোরে কাঁদো শিরিণ, তোমার বাবার সংবাদ তুমি জানবে না। তোমার বাবা সম্ভবত খুন হয়েছেন অন্ধকারেই। তার মৃত্যুর তদন্ত হবে না। বর্তমানে যারা তোমার বাবাকে জিম্মায় রেখেছেন কিংবা তোমার বাবাকে জিম্মি করে রেখেছেন, তাদের জন্য বাংলাদেশের আইন প্রযোজ্য নয়, তাদের কেশাগ্র স্পর্শ্ব করে না আদালত আর পুলিশ। তাদের কাছেই আটক হয়ে আছে আরও ২ হাজার শিক্ষার্থীর জীবন, তাদের কথিত তদন্ত এবং নিয়মিত নির্যাতন শেষ না হওয়া পর্যন্ত বাইরেফলস স্কুল এন্ড কেলজের শিক্ষার্থীরা সেখানে যেতে পারবে না।

তাদের ভবিষ্যত হয়তো স্তব্ধ হয়ে যাবে। বাংলাদেশের পুলিশকে সাহায্য সহযোগিতা করতে গিয়ে যেই কিশোর নিহত হলো পিলখানার সামনে, তার জন্য রাষ্ট্রীয় পদক নেই, রাষ্ট্র তার এই অবদানকে স্বীকিত দিবে না। কোনো এক নির্বোধ বৈদ্যুতিক তারে হেলিক্পটার আটকে নিহত হলে রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষিত হবে। আমাদের সাধারণ মানুষের আইনানুগত্যকে বিবেচনায় আনবে না কেউই। আমরা ব্লাডি সিভিলিয়ান, আমাদের যোগ্যতা এবং অদক্ষতা এটুকুই।

আমি তোমার বাবার মৃত্যুর ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন যদি কখনও আসে, সেটার ভাষ্য বলে দিতে পারি। সেটা অপমৃত্যু না হলে লেখা থাকবে হঠাৎ হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন তিনি। নির্যাতনের কোনো সংবাদ সেখানে থাকবে না। আর যদি অপমৃত্যু হয়, তবে সেটা হবে বাথরুমের জানালায় গামছা বেধে আত্মহত্যা করবার ঘটনা। ঘরের সিলিং ফ্যানে গামছা বেধে আত্মহত্যা করবার ঘটনাও ঘটবে কিছু।

এবং এইসব মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ি হবে না। তুমি বিচারের দাবি নিয়ে কোথাও যেতে পারবে না। কোনো আদালত কিংবা থানা তোমার অভিযোগ গ্রহন করবে না। তুমি বরং আমার কাছ থেকে সহানুভুতি নিয়ে যাও। অপরাধ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত অভিযুক্তকে অপরাধী মনে করাও সভ্য সমাজে আইনানুগ নয়।

তবে বাংলাদেশে পরিস্থিতি ভিন্ন, সভ্য সমাজে যতক্ষণ না একজন ব্যক্তি আদালতের তদন্ত ও সাক্ষ্যপ্রমাণে নিশ্চিত ভাবে অপরাধী বিবেচিত হচ্ছেন না, ততক্ষণ তাকে নিরপরাধ ভাবার দস্তুর আছে। কিন্তু বাংলাদেশে সন্দেহের বশবর্তী হয়ে সাম্ভাব্য অভিযুক্তকে খাঁচায় পুরে জিজ্ঞাসাবাদ চলে, প্রয়োজনে অত্যাচার করা হয়, স্বীকারোক্তি আদায় না করা পর্যন্ত এই নির্যাতন চলতে থাকে। গুয়ানতামো বে'র কারাগার বন্ধ হয়েছে সম্প্রতি, তবে বাংলাদেশের রাজধানীতে নতুন গুয়ানতামোর সাম্ভাব্য অপরাধী শিবির চালু হয়েছে। সেখানে আটক রয়েছে বিডিআর সদস্যগণ। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উচ্চমন্য কর্মকর্তাগণের অহং আহত হয়েছে পিলখানার হত্যাকান্ডের ঘটনায়।

এটা সম্পূর্ণ ভাবেই সামরিক তথ্য ও গোয়েন্দা দপ্তরের ত্রুটির ফল। কিন্তু সামরিক গোয়েন্দ বাহিনী কিংবা এইসব কাজে যারা নিয়োজিত ছিলেন, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ কিংবা আটকের ঘটনা পত্রিকায় প্রকাশিত হচ্ছে না। পূর্বের অভিযোগ ছিলো অস্বচ্ছতার, এখনও আমার অভিযোগ, সামরিক বাহিনীতে স্বচ্ছতা আসুক। গুজব আর বাস্তবতার ভেতরে তফাত সামান্যই, বাংলাদেশে সামরিক বাহিনীর হত্যাকান্ড ও নিষ্পেষণের গুজব যখন সেনাছাউনি থেকে বাইরে চলে আসে, তখন সেখানে নিহত মানুষদের পরিজনই শুধু জানে এই গুজবের বাস্তবতা কতটুকু। বিডিআর সদরদপ্তরে যা হয়েছে সেটার তদন্ত হবে বাংলাদেশের প্রচলিত বিধিতে।

এবং বিডিআর অন্তত ঘটনা সংঘটিত হওয়ার সময়কালে সরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের অধীনে ছিলো। শেখ হাসিনাকে জোরপূর্বক ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে এমন গুজবের পরদিনই দেখা গেলো শেখ হাসিনা ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের দরবার হলে গিয়ে উত্তেজিত সেনা কর্মকর্তাদের জেরার সম্মুখীন হয়েছেন। এবং তাদের দাবি মেনে নিয়েছেন। তাদের দাবি-দাওয়ার শেষ নেই, রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি, এবং এত পেয়েও প্রতিহিংসার প্রকোপ কমে না। সাধারণ মানুষ এবং আইন নিহত হয় অগোচরেই।

সাউথ ইস্ট ব্যাংক প্রতিমাসে ২ লক্ষ ৫০ হাজার করে ১০ বছর মেয়াদে ৩ কোটি টাকা ১০ সেনাসদস্যদের পরিবারদের দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে, অন্যান্য ব্যাংকও একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা সম্মিলিত ভাবে সম্ভবত সাড়ে সাত কোটি টাকা প্রদান করবে নিহত সেনা কর্মকর্তাদের পরিজনদের। ব্যাংকও চুড়ান্ত বিচারে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, তাদের অর্জিত সম্পদ তারা কোন খাতে ব্যয় করবে এটার জবাবদিহিতা আমার পক্ষে চাওয়াও শোভন নয়। তবে একই সাথে ঘটনার উল্টোপিঠে আছে বিডিআর সদস্যগণ। যারা সেদিন বিদ্রোহকে দমন করতে গিয়ে কিংবা সেনাকর্মকর্তাদের নিরাপত্তা প্রদান করতে গিয়ে নিহত হয়েছে।

বিডিআরের সকল প্লাটুন এই অভিযোগে অভিযুক্ত নয়, বরং কয়েকটি প্লাটুন সম্মিলিত ভাবে এই ঘটনা ঘটায়। অন্য সবাই এই গণহত্যার বিরোধিতা করেছে। তারা প্রতিরোধ করে নিহত হয়েছে। বাংলাদেশের গণমাধ্যম বিষয়টাকে সচেতন উপেক্ষা করছে, সেনা কর্মকর্তাদের রোষের শিকার হতে পারেন বিবেচনায় কিংবা বর্তমানে সেনাছাউনি থেকেই নির্দেশনা আছে পত্রিকায় এই বিষয়ে কতটুকু ছাপানো শোভন হবে, এবং অতিরিক্ত স্পর্শ্বকাতর সেনা কর্মকর্তাদের আহত না করে সাংবাদিকতা এবং সাধারণ মানুষের কাছে তথ্য উপস্থাপনের কৌশল জানা নেই বলেই সম্ভবত, এইসব হত্যাকান্ডের পারিতোষিক দাবি করা যাচ্ছে না। সেনা কর্মকর্তাগণ পেলেন ১ কোটি টাকা, ৩জন নিহত সাধারণ মানুষ পেলেন ২ লক্ষ টাকা করে, কিন্তু পিলখানায় বিদ্রোহীদের গুলিতে নিহত, কিংবা সেনা কর্মকর্তাদের বাঁচাতে গিয়ে নিহত বিডিআর সদস্যগণ গণদুশমন কিংবা রাষ্ট্রদ্রোহী হওয়া ভিন্ন কি পেলো।

তাদের পরিজনদের কি সামান্য কিছু প্রাপ্য ছিলো না? কিংবা বর্তমানে পিলখানায় আটক ৫ হাজার বিডিআর জাওয়ানদের ভেতরে অভিযুক্ত কিংবা সাম্ভাব্য অপরাধী মাত্র ৫০০ জন। কিন্তু তাদের অধিকাংশকেই আটক রেখে নির্যাতন চালানো হচ্ছে। তাদের কাছ থেকে কি জোরপূর্বক সাম্ভাব্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহন নিশ্চিত করা হচ্ছে? ঠিক কেনো তাদের পরিজনদের সাথে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না। এত রাখ ঢাক কেনো? কেনো এত গোপনীয়তার আড়াল? ফালতু অহং বোধ দিয়ে নির্যাতন করে সমীহ আদায় করা যায় হয়তো কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে সেটা জনবিচ্ছিন্নতা এড়ানোর সহায়ক পন্থা নয়। সাংবাদিকদের তথ্য প্রদান করা হচ্ছে, একজন পুলিশও নেই সেখানে, পিলখানা বর্তমানে সাবক্যান্টমেন্ট হয়ে আছে।

সরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ের কর্মকর্তাদের সামরিক কর্মকর্তাগণ যে রিপোর্ট প্রদান করছেন, বাইরে সাংবাদিকদের যতটুকু অবহিত করছেন, ঠিক ততটুকুই আমরা জানছি। আমরা খবর রাখতে চাই না। দৈনিকের প্রথম পাতার হেড লাইন বদলে যায় দিনের আলো শেষ হলেই। সম্পাদক এবং সাংবাদিকেরা নতুন কোনো সংবাদের আইটেম খুঁজতে ব্যস্ত থাকেন। এবং যা আমাদের জানা প্রয়োজন সেসব সংবাদ আমরা পাই না, মানুষের আগ্রহে ভাটা পড়ে না, কিন্তু যেহেতু তথ্য অনুপস্থিত সুতরাং আমরা জানতেও পারি না আদতে পিলখানায় আটক ৫০০০ মানুষের কি হলো, কিংবা তাদের সাথে কেমন আচরণ করছে সেনাকর্মকর্তা ও জিজ্ঞাসাবদে নিয়োজিত পেশাদার নির্যাতকগণ।

পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে, পিলখানার ভেতরে যাওয়া বিডিআর সদস্যদের সাথে তাদের উদ্বিগ্ন পরিজন সাক্ষাৎ করতে পারছে না। তাদের সহায়তার জন্য বাইরে একটি চিঠির বাস্ক স্থাপন করেছে সদাশয় সেনা কর্মকর্তাগণ। অথচ বিডিআর ট্রাজেডীর সময়ের টিভি ফুটেজ দেখলে স্পষ্ট হয়, আদতে নিহত সেনা কর্মকর্তাদের পরিজনদের প্রতি তেমন সহমর্মিতা ছিলো না সেনাসদস্যদের। যখন পিলখানার গেটের বাইরে উদ্বিগ্ন স্বজনেরা সেনাকর্মকর্তাদের লাশের সংবাদ জানতে অপেক্ষা করছেন, ঠিক তখন বাইরে সেনা ও জাওয়ান মওজুদ থাকলেও, এইসব উদ্বিগ্ন মানুষের জন্য সামান্য ছায়ার ব্যবস্থা করবার বোধটুকুও তাদের জন্মায় নি। এইসব মানুষ, যারা ন্যুনতম মানবিকতাবোধ সম্পন্ন নয়, তারাই বিভিন্ন আব্দার নিয়ে প্রধানমন্ত্রী কাছে শিশুতোষ বায়না ধরেছেন।

তবে এই শিশু নির্বোধ হলেও অস্ত্র চালাতে পারে। সুতরাং প্রধান মন্ত্রীকে তাদের সব রায় মেনে নিয়ে নিরাপদে ক্যান্টনমেন্ট ত্যাগ করতে হয়। এখনও দৃশ্যটা বদলায় নি, তবে সেনাকর্মকর্তাদের পরিবার নয় এখন লিপখানার গেটে অপেক্ষারত বিডিআর জাওয়ানদের পরিজন। এবং সংখ্যা বিচারে তারা অগনিত। অন্তত ৬০ জন নিহত সেনাকর্মকর্তার জন্য প্রায় ৫০০০ মানুষ জিম্মি হয়ে আছে।

সেই সাথে অন্তত ৮ হাজার পরিবার জিম্মি। উন্মাদের হাতে পারমাণবিক বোমার সুইচ দিয়ে দেওয়া তেমন বোধবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের কাজ নয়, কিন্তু আবেগান্ধ চতুর, ক্ষমতালোভী সেনাকর্মকর্তাদের হাতে সব ক্ষমতাই আদতে অর্পন করে নিরাপদে নিজের নাগরিকের নাগরিক অধিকার ও আইনি অধিকার ক্ষন্ন হওয়ার তামাশা দেখছে প্রশাসন ও সরকার। বিডিআর জাওয়ানদের কেউ চোখে দেখছে না, তাদের কণ্ঠ শুনছে উদ্বিগ্ন স্বজনেরা। এবং সেই টেলিফোন বুথের সামনে বসে আছে নির্যাতকের দল। তারা সব কিছুই মনিটর করছে।

আদতে তারা বুদ্ধিতে তেমন উচ্চ নয় বলেই অনেক অদ্ভুত কাজ করছে। নির্বোধের তামশা দেখা আর সার্কাসের জোকারদের তামাশা দেখবার ভেতরে তেমন প্রভেদ নেই। কিন্তু এই তামাশায় আমরা হাসতেও পারছি না, অস্ত্রধারী নির্বোধের তামাশা দেখে হাসলেও প্রাণদন্ড হয়ে যেতে পারে। কিংবা তাদের এই আচরণ তাদের কাছে অতি বুদ্ধিমান পদক্ষেপ মনে হচ্ছে। ডিএডি আব্দুল জলিল, তিনি ২৬ তারিখে আহত অবস্থায় হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

এবং ৪ঠা মার্চ থেকে তার কোনো সংবাদ পাওয়া যাচ্ছে না। একজন জলজ্যান্ত মানুষ হাসপাতল থেকে উধাও হয়ে যান নি, তার খোঁজে স্বজন ঘুরছে। কিন্তু এই মানুষটিকে কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না। রাষ্ট্রের প্রতিহিংসায় এমন অনেক আব্দুল জলিল হয়তো গোপনে হাপিশ হয়ে যাচ্ছে। আমাদের তথ্যহীনতা কিংবা উদাসীনতায় এমন অনেক নির্যাতনপ্রবণ হত্যাকান্ড সংঘটিত হচ্ছে।

গতকাল একজন বিডিআর সদস্য আত্মহত্যা করেছেন, বাথরুমের জানালায় গামছা বেধে আত্মহত্যা করেছেন তিনি। তার স্বজন এখনও জানে না এই মৃত্যুর খবর, ময়না তদন্ত হয়েছে, যে মানুষটা বাথরুমের জানালায় ঝুলে ছিলেন, তার উর্ধাঙ্গে বালু কিভাবে আসলো এই প্রশ্নের উত্তর দিবে কে? হত্যার আলামত হয়তো মুছে ফেলা সম্ভব, আর্মি এবং পুলিশের নির্যাতক দল এমন অনেক হত্যার চিহ্ন লুকিয়েছে, ডিবি অফিসের পানির ট্যাংকে লুকিয়ে রাখা লাশ, আর্মির ট্রাক থেকে হঠাৎ পড়ে যাওয়া লাশ রাস্তায় পড়ে থেকেছে, কিন্তু কেনো জীবিত লোকটা আর্মির ট্রাকে উঠবার পরে লাশ হয়ে খসে পড়লো এটার উত্তর কেউ জানে নি। তাদের ইন্ডেমিনিটি রয়েছে। আইন তাদের জন্য প্রযোজ্য নয়। সুতরাং তারা অস্ত্র হাতে জনপদে নেমে আসলে, তাদের নিজের খেয়ালখুশী মতো হত্যাযজ্ঞ চালালেও মেরুদন্ডহীন সাংবাদিকগণ তাদের মর্জমফিকই প্রেস রিলিজ লিখে যাবেন।

যে চিঠির বাস্ক বাইরে রাখা হয়েছিলো, উদ্বিগ্ন যে স্বজনেরা আটক বিডিআর জাওয়ানদের চিঠি লিখেছিলেন, সেসব এখনও বিলি করা হয় নি। চিঠির বাস্ক উপচে পড়েছে চিঠিতে, নতুন চিঠি রাখবার স্থান নেই। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কোনো ব্যাঘাত ঘটবে না। আমরা নিজেদের মতো বৈকালিক আহার সেরে হয়তো এই ছবিটা দেখে খানিকটা বিমর্ষ হবো। কিন্তু আমাদের চোখ আর মনের আড়ালে চলে যাবে দৃশ্যগুলো।

সার সার ট্রাকে করে চলে যাচ্ছে বিডিআর জাওয়ানেরা, তাদের হাতে পায়ে ডান্ডা বেড়ী, তাদের চোখ কালো কাপড়ে বাধা, তাদের ঠোঁটের কোনে জমে থাকা রক্ত। তারা কি বধ্যভুমিতে যাচ্ছে? পিলখানার ভেতরে কি কোথাও গণকবর খোঁদা হচ্ছে। যেসব মিলিটারি জীপ এবং আম্বুলেন্স ছুটে বের হচ্ছে পিলখানা থাকে, সেসবের ভেতরে সেনাকর্মকর্তাদের পায়ের নীচে কি পাচার হচ্ছে বিসিআর জাওয়ানদের লাশ। আমরা জানি না, অস্বচ্ছতায় আমাদের চারপাশ আচ্ছন্ন। শুধু এইটুকু বলতে চাই, আমার দাবি আগেও যেমন ছিলো , এখনও তাই আছে।

অভিযুক্ত বিডিআর সদস্যদের বিচার হোক, সেটা আইন মন্ত্রীর বক্তব্য অনুসারে কোর্ট মার্শালে হওয়াও বিচিত্র কিছু নয়, কিন্তু এর পরে, আটক বিডিআর জাওয়ানদের কেউ যদি নিহত হয়, কিংবা খুন হয়ে যায়, আমি চাইবো রাষ্ট্র এবং বিকলাঙ্গ মানবাধিকার সংস্থা ৩রা মার্চ থেকে অদ্যাবধি যেসব সেনা কর্মকর্তা এবং সাধারন সৈনিক পিলখানায় কর্মরত ছিলেন, তাদের সবাইকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়েরক রবার অধিকার রাখবে, এই সময়ে আমি কোনো ইন্ডেমিনিটি চাই না। যদি অভিযুক্তকে কোর্ট মার্শাল করতে চায়, সেটাও সবাইকে জানিয়েই করতে হবে। একটা হত্যার প্রতিকার আরও অনেকগুলো হত্যা দিয়ে হয় না। একটা অমনবিকতার ঘটনার প্রতিষোধক আরও অনেকগুলো অমানবিক আচরণ নয়। তবে বাংলাদেশে, অসভ্য সেনাকর্মকর্তা এবং সুবিধাবাদী গণমাধ্যমের কাছে, দায়িত্বশীলতা এবং পেশাদারিত্ব আশা করা বৃথা।

বরং বায়তুল মোকাররম থেকে নব নিযুক্ত খতিবকে ডেকে নিয়ে এসে সেখানে গায়েবানা জানাযা শুরু করা যেতে পারে। আজ একজন খুন হয়েছে, আগামি কাল আরও অনেকেই হবে, তাদের সবার রুহের মাগফেরাত কামনা করে চাইছি এই নির্বিঘ্ন হত্যাকান্ডের শেষ হোক। পিলখানার কারাগার থেকে নিরপাধার বিডিআরদের মুক্ত করতে সক্রিয় হোক প্রশাসন, সেটাই তাদের দায়িত্ব, এই হত্যাকান্ডগুলোর দায়িত্ব সরকারও এড়াতে পারবে না।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।