আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিশ্ববিদ্যলয়ের প্রেম - ৩৩- কৃষকের স্বীকারোক্তি

কৃষক blogsaudi@gmail.com

এই সম্পর্ক ভাঙ্গার পিছনে আমি আমার সমস্ত দায় স্বীকার করে নিচ্ছি। এ রকম একটি দোষই ‎সম্পর্ক ভাঙ্গার জন্য যথেষ্ট। ‎ আমি কিষাণীর অভিযোগ গুলিকে অস্বীকার করতে পারবো না, কারণ এই ঘটনা গুলি ঘটেছে ‎আজ খেকে ১৫-১৬ বছর আগে। এই অভিযোগ অনেকগুলিকে সে তার নিজের পক্ষে দাড় ‎করিয়েছিল সে সময় বা বলা যায় নিজেকে ডিফেন্ড করেছে সেই সময়। ‎ তার অনড় সিদ্ধান্তে আমার সমস্ত চেষ্টগুলি ফিরে এসেছিল বিফল হয়ে।

আমি তার চরিত্রের এই ‎দিকটা খুব ভালভাবে জানতাম যে, একবার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর সে আর কথনও পিছন ফিরে ‎তাকায় না। বুঝতে পেরেছিলাম সে আর ফিরে আসবে না। এখনও মনে হয় তেমনই আছে ( ‎একরোখা)‎ আমার দিক থেকে সব চেষ্টাই করেছি সেই সময়। শুধু যা করিনি তাহলো ভালো হয়ে তার ‎সামনে উপস্থিত হওয়া। আর সেটাই বা করবো কি ভাবে? আমার সেই জগত থেকে বেরিয়ে ‎আসতে লেগে যায় ২ বছর।

দুই বছর অনেক সময়। তাকে বুঝাতে পারিনি আমি ২-৩ বছর ‎জীবনের তুলনায় বড় অল্প সময়। ‎ সম্পর্ক ভেঙ্গে যাওয়ার পর । তাকে মাঝে মাঝে দেখতাম। সবসময় সাজগোজ করা অবস্থায়, ‎বন্ধু বান্ধব পরিবেষ্টিত, যে কেউ দেখে বলবে আগের চেয়ে বেশী উচ্ছল, সুখী।

আমার কেন ‎জানি মনে হতো এ সবই অভিনয় অথবা বুঝতে পারতাম। মাঝে মাঝে মনে হতো জোড় করে ‎তার হাত ধরে বলি অনেক অভিমান হয়েছে আর না। এসো আবার আগের মতো হয়ে যাই, ‎এই আমি সব ছেড়ে দিচ্ছি তুমি একটু সাহায্য করো, কিন্তু বলতে পারি নি কারণ একবার তো ‎সে আমার পাশে ছিলো তারপরও ছাড়তে পারি নি। বরাবরই আমি নেশা ছেড়ে দিতে চেয়েছি। ‎শেষ দিকে শুধু শরীরের টানেই নেশা করতাম।

আমার কিষাণী বিহীন ক্যাম্পাস বড় বেশী অসহ্য মনে হতে লাগলো। একদিন তাকে ‎লাইব্রেরীতে যাওয়ার পথে পথ আগলে বলতে চেয়েছিলাম কথাগুলি। কিন্তু সেদিন তার চোখে ‎আমি ঘৃনা ছাড়া আর কিছুই দেখিনি। আমি নিশ্চিত আমি ভুল দেখিনি। কিষাণীকে জিজ্ঞেস ‎করে দেখুন? বুঝতে পারি, আমার আর কোন জায়গা নেই তার হৃদয়ে।

‎ বাবা মা আর চাইলেন না এখানে পড়াতে । আমি আর অমত করলাম না। ফিরে গেলাম, ‎কয়েকদিন এভাবেই কাটলো তার পর ভর্তি করা হলাম কেন্দ্রীয় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে। ‎ডিটক্সিফিকেশন শেষে ফিরলাম বাড়ীতে। তত দিনে কিষানীর সামনে দাড়ানো মতো মানসিক ‎শক্তি আর আমার মধ্যে অবশিষ্ট নেই।

‎ তারা বললো আবার পড়ালেখা শুরু কর অন্য কোন প্রাইভেট ইউনিতে(ততদিনে বাংলাদেশ ‎প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় গুলি চালু হয়েছে)আমার আর পড়াশুনার প্রতি আগ্রহ রইলো না। একদিন ‎বাসায় ঘোষনা দিলাম আমি আর এই দেশে থাকবো না। বিদেশে চলে যাবো। এরপর থেকে ‎প্রবাসী। প্রবাসে নতুন পরিবেশে নতুন নিয়মে নিজেকে খাপ খাইয়ে নেই।

আস্তে আস্তে স্মৃতি গুলি ‎ধুসর হয়ে যায়। এর মাঝে আর কোন খোজ নেওয়ার চেষ্ট করিনি। কি লাভ হতো এই ভেবে। ‎ গত বছর কি করে যেন হঠাত করে ****** এর সাইটে ঢুকে পড়ি এবং পরিচিত কে কে আছে ‎খুজতে খুজতে কিষানীর নাম পেয়ে যাই। তার পর ইযাহুতে তার নাম দিয়ে সার্চ দেওয়া পর ‎ফেইসবুকের লিংক পেয়ে যাই।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।