আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সামহোয়ার কি "একমত একমত" মার্কা ব্লগ হতে চাইছে?

http://joyodrath.blogspot.com/

সামহোয়ারে রেজিস্ট্রেশন করেছিলাম বহু আগে। কিন্তু লেখা হয়ে উঠেনি নানা কারণে। বাঙলা ভাষার সবচেয়ে বড় এই ব্লগিং প্লাটফর্মটির সবচেয়ে বড় ভার্চু এর ডাইভারসিটি। নানামুনির নানান মতকে একোমোডেট করতে পারে সে এবং এটাই এই ব্লগটিকে এতদূর নিয়ে এসেছে। কিন্তু সম্প্রতি সামহোয়ার-এর কিছু প্রশাসনিক মুভ দেখে আমার মনে হচ্ছে সামহোয়ার যেন "একমত একমত" মার্কা ব্লগ হতে চাইছে! রিফাত হাসানের একটা পোস্ট দেখেছিলাম যুদ্ধাপরাধী এবং গাজায় নির্বিচার ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞ নিয়ে।

তার বক্তব্য বিষয়ে আমি একমত ছিলাম না, কিন্তু তিনি একটি যুক্তির অবতারণা করেছিলেন সেখানে। অবসিন কিংবা বিদ্বেষমূলক কিছু লিখেছিলেন বলে মনে হয় নি আমার। পরে মোহাম্মদ আরজুর একটা পোস্ট পড়ে জানতে পারলাম রিফাতের ঐ পোস্ট মুছে দেয়া হয়েছে এবং তাকে "সাধারণ ব্লগার" পদে অবনমন দেয়া হয়েছে। বিষয়টা উদ্বেগজনক। রিফাত হাসানের সাথে নানান ব্লগপোস্টে আমার তর্ক হয়েছে।

তার মতাদর্শের অনুসারী আমি সম্ভবত নই। কিন্তু সন্দেহ নেই তিনি তার মতামতকে যথেষ্ট যৌক্তিকভাবে এবং মার্জিত ভঙ্গিতে প্রকাশ করে থাকেন। ফলে একটা স্বাস্থ্যকর তর্ক করার পরিস্থিতি থাকে। যুদ্ধাপরাধীর বিচার নিয়ে নানান মত আছে সমাজে। ব্যক্তিগতভাবে আমি একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীর বিচার দেখতে চাই।

এ নিয়ে আমার নিজের শক্তিশালী যৌক্তিক অবস্থান আছে। এখন যারা এ বিষয়ে ক্রিটিক্যাল তাদের যুক্তিগুলো আমি শুনতেই চাই, কারণ তাদের যুক্তি মোকাবেলা করতে করতে আমার অবস্থান আরো সুসংহত হয়ে উঠবে। প্রতিপক্ষের মুখে রুমাল চেপে নিজের বিজয় ঘোষণা করা কাপুরুষতা, বাঙালি জাতি ঐতিহাসিকভাবে এই কাপুরুষতার চর্চা করে নি। রিফাত কেন "সাধারণ" হয়েছেন আমি পরিষ্কার বুঝতে পারছি না। তিনি ভালো লেখক, পীড়াদায়ক ব্লগিং করেছেন বলে মনে পড়ে না।

তিনি আমার সাথে একমত হন না বলে আমার ক্ষোভ হতে পারে, কিন্তু এই ধরনের ডায়ালজিক্যাল সম্পর্ক এই ব্লগটির বৈচিত্র্য বহুগুণে বাড়িয়ে তোলে। আর ব্লগ যারা চালান তাদের জন্য এই ধরনের তর্কমূলক সম্পর্ক এবং বৈচিত্র্য সবচেয়ে বড় স্বস্তির জায়গা। হওয়ার কথা। কিন্তু অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে বৈচিত্র্য নয়, যেন "একমত একমত" শ্লোগানে মুখরিত একটা প্লাটফর্ম হতে চায় সামহোয়ার। রিফাত হাসানের ঐ পোস্টকে ধরে কর্তৃপক্ষীয় আচরণ আমাকে সেরকমই ভাবাচ্ছে।

সামহোয়ারে ব্রুটাল মেজরিটি পেয়ে গেলেই যুদ্ধাপরাধীর বিচার হয়ে যাবে এমনটা ভাবি না আমি। আবার এই বিচারসম্পর্কিত ক্রিটিক্যাল বক্তব্যগুলো কানে এলেই লোকে দলে দলে সেই মতের গুণগ্রাহী হয়ে পড়বে এমনও নয়। মুক্তিযুদ্ধে বাঙালির আত্মত্যাগকে যেন আমরা এত ঠুনকো না ভাবি। যুদ্ধাপরাধীর বিচারের দাবি জোরালো করবার জন্য কারো মুখে রুমাল চেপে ধরবার দরকার নেই। রিফাত হাসানকে তার পূর্ববর্তী স্ট্যাটাস ফিরিয়ে দেয়া হোক।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।