আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাঁধ ভাঙ্গা ইচ্ছেগুলো

ইমরোজ

ছুটতে শিখেছিলাম, তাই দাঁড়াবার কথা ভুলে গেছি। এইতো সেদিন বাসে করে স্কুলে যাওয়া। বাসে বসে অন্য ছাত্রদের দেখা। ক্লাসের সময় নিয়ে কত টেনশন, কত চিন্তা! টিফিনের ঘণ্টা বাজবে, আর আমি দৌড়ে নামব...খেলব। মাত্র পনেরটা মিনিট যেন এক একটি যুগের সমান।

দৌড়ে মাঠের এপাশ থেকে ওপাশ। এভাবেই শব্দ বসে বসে একটা কবিতার রূপ নেয়। আমার ডায়েরীর পাতা জুড়ে পাশের বাড়ির মেয়েটা ঠাই নিচ্ছে তখন। আমি প্রতি রাতে বিয়ের স্বপ্নে তোলপাড় করি। অথবা মেঠো বল নিয়ে দুপুরে ক্রীকেট খেলতে দৌড়।

মায়ের চোখ ফাঁকি দিয়ে যতসব কাদা মাখিয়ে ঘরে ঢুকতাম। ফিরে দেখি, আবার ছুটে যেতে চাই...তবে এখন সব দূরে। যেন আলোকবর্ষের ব্যবধান সেই আমি থেকে এই আমি। জীবন বুঝতে শিখেছি মাত্র ক'দিন হলো। এখন মনের বাকে উকি দিয়ে দুনিয়ার সব কৈশোরের হাতছানি দেয়।

অথবা এখনও বৃষ্টি দেখলে কাদা-মাখামাখি করে ফুটবলের স্বর্গে যেতে ইচ্ছে করে। তবে আর নেই সে সময়, এখন জীবনকে বুঝতে শিখেছি। পাশের বাড়ির মেয়েটা আর লেখায় ঠাই পায় না, অথবা জড়াজীর্ণ ডায়েরীটা নিষ্প্রভ! ধুলো পড়ে গেছে, তবু তার নামে নামে এখনও অমলিন স্মৃতি। ওহ! আবার ফিরে পেতে বড় ইচ্ছে করে... হ্যারিকেন জ্বালা রিকশার পেছন পেছন দৌড়ে রাতে দোকান থেকে আসা, সাথে যাবতীয় সব সংসারের জাল...একটা বাতি, একটা দেয়াশলাই। রান্নাঘরের মায়ের বিরিয়ানি রান্না, ছেলে-বেলার যত উদ্ভট চিন্তা, রাগে জাপটে ধরে থাকা বালিশ।

আমি আজ কিছু খাব না, মায়ের সাথে অভিমান! অথবা বাবার সাথে রাগ, আমাকে কেন প্রমোদ উদ্যানের সেই বেঞ্চিতে বসতে দেওয়া হলো না! আজ কার কাছে বাঁধা নই, স্কুলের তাড়া নেই, কী খেলায়, আনন্দ ফূর্তিতে, কিছুতেই তো বাঁধা নেই, তবু পারিনা ইচ্ছে হলেই দৌড়ে যেতে সূর্যের দিকে, অথবা বৃষ্টির মেঘ ছেয়ে অনেকটা পথ দূরে!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।