আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পালাবদল লেখক-রফিকুর রশীদ



পালাবদল রফিকুর রশীদ এবার এই হাড়কাঁপানো শীতেও যে দজ্জাল মশার উৎপাত কমেনি, সে কথা বিশেষ মনেই ছিল না তার। রাতে ঘুমানোর সময় বাড়িতে মশারি টাঙানো হয় না বেশ কিছুদিন থেকেই। এমন কি পাঁচবেলা বাড়ির পাশে মসজিদে গিয়েও মশার দৌরাত্ম তেমন টের পান না। কিন্তু আজ এই ঘুটঘুটে অন্ধকারে এ কোন নরকে এসে দাঁড়িয়েছেন-ঝাঁকে ঝাঁকে তেড়ে আসছে দজ্জালের দল! মাফলারে-চাদরে কানমুখ মুড়ানো বলে ওদের রণসঙ্গীত কানে আসছে না, সেই সঙ্গে মাইক্রোফোনের তীব্র শব্দও খানিক প্রতিরোধ করেছে বটে, কিন্তু পা দুটোতে চালিয়ে যাচ্ছে মুহুর্মুহু আক্রমণ। এক পা তুলে আর সেই জংলি আক্রমণ কতটুকু প্রতিহত করা যায়! এদিকে যাত্রাপালার দৃশ্য তো থমকে দাঁড়ায় না, আপন গতিতে চলতেই থাকে।

সহসা জ্বরতপ্ত মানুষের মতো সারা শরীর শিউরে ওঠে, কেঁপে ওঠে। অন্ধকারেই জিভে কামড় দেন। তওবা কাটেন মনে মনে। ঠোঁটে বিড় বিড় করেন, নাউজুবিল্লাহ মিন জালেক। এতক্ষণ পর নিজের গায়ে চিমটি কেটে নিজেকেই শুধাতে ইচ্ছে করে- এখানে কী করতে এসেছেন তিনি? মাঘরাত্রির এই শৈতদাহ উপেক্ষা করে এভাবে অন্ধকারে একাকী দাঁড়িয়ে থাকার কোনো মানে হয়? স্মরণ করার চেষ্টা করেন, কতক্ষণ দাঁড়িয়ে আছেন এখানে? কতক্ষণ? ঘুটঘুটে অন্ধকারে বাড়ি থেকে বেরিয়ে তিনি যখন এখানে এসে দাঁড়ান, তখন তীব্র শীতে নাকি প্রচণ্ড ক্রোধে তার শরীর থরথর করে কাঁপছিল? না না, প্রথমেই তিনি তো এইখানে এই নির্জনে এসে দাঁড়াননি।

অস্পষ্ট হলেও প্রাইমারি স্কুলের এই খোলা বারান্দায় দাঁড়িয়ে সব দেখা যায় এবং সব শোনা যায় বটে, তবু তিনি গোঁয়ার মোষের মতো ফুঁসতে ফুঁসতে সোজাসুজি ছুটে যান যাত্রাপালার প্যাণ্ডেলের কাছে। টুপি-মাফলারে ঢাকা হলেও তার মাথার চাঁদিতে এখন দাউ দাউ আগুন- এক কুলাঙ্গার পুত্রের বেয়াড়া কর্মকাণ্ডের জন্যে সৈয়দ বংশের মানসম্মান এভাবে ধুলোয় লুটিয়ে যাবে! নেই নেই করেও কুলগৌরবের শুষ্ক প্রায় ধারাটি তিনি এখনো আগলে রেখেছেন। অর্থ-বিত্ত-প্রতিপত্তি আজ তার নেই বললেই চলে, তবু তার শরীরে বইছে সৈয়দ আশরাফ হাজীর রক্তপ্রবাহ; এই বাঁশতলি বলে তো শুধু নয়, দশদিগরের মানুষ আজো সেই বহমান রক্তধারাকে সম্মান করে, মর্যাদা দেয়। সহায়-সম্পদ বিশেষ কিছু না থাক, ইমাম সাহেব হিসেবে সারা গ্রামে তার সম্মানের আসন ঠিকই আছে। পেটের দায়ে নয়, বাড়ির পাশের মসজিদে তিনি পাঁচবেলা ইমামতি করেন মানুষের শ্রদ্ধা ভক্তি সম্মান ধরে রাখার জন্যে।

তার ছেলে যায় যাত্রা করতে! বাঁশতলি প্রাইমারির পাশেই হাইস্কুল প্রাঙ্গণে সাজানো হয়েছে যাত্রার মঞ্চ। এ গ্রামেরই শিক্ষিত ছেলেরা জোট বেঁধে গঠন করেছে ক্রীড়া ও সামাজিক সাংস্কৃতিক ক্লাব। ক্লাবের উদ্যোগেই সারাদিন নানা কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয়েছে বিজয় দিবস। রাতের বেলা নাটক। এই নাটক নিয়েও গত কয়েকদিনে বেশ নাটক হয়ে গেছে।

মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নাটক ‘রক্তের স্বাক্ষর’ মঞ্চায়নে স্থানীয় প্রশাসনের আপত্তি, ওই নাটকে রাজনীতি আছে। একেবারে শেষবেলায় সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে পারিবারিক নাটক নামানো হচ্ছে ‘সংসার কেন ভাঙ্গে’। বাঁশতলি হাইস্কুলের নুরুল স্যারের লেখা। ফলে তার উৎসাহ আকাশছোঁয়া। অনেকদিন পূর্বে স্কুলের পক্ষ থেকেও এ নাটক একবার নামানো হয়েছিল।

তখনকার ছাত্রদের অনেকেই এখন বড় হয়েছে, গ্রামের ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। ‘রক্তের স্বাক্ষর’ মঞ্চায়নের অনুমতি না পেয়ে শেষ পর্যন্ত নাটকের জেদ পূরণের জন্যে তারাই মেতে ওঠে এই নাটক নিয়ে। গ্রামের লোক ওই নাটককেই বলে যাত্রা। সৈয়দ আশরাফ হাজীর বংশধর হয়ে মধ্যবয়স পেরুনোর পর ইমাম সাহেব কি রাতের আঁধারে যাবেন যাত্রা দেখতে! মাথা খারাপ! এ রকম মতিভ্রম হবার বিশেষ কোনো কারণ ঘটেনি আদৌ। তাই বলে নিজেকে তিনি গোঁড়া মওলানা-মৌলবির কাতারেও ফেলতে চান না।

তার একমাত্র পুত্র আসলাম মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাসের পর কলেজে ভর্তি হতে চাইলে তিনি বাধা দেননি। এমন কি দু’এক মাসের মধ্যে পুত্রের পোশাক-পরিচ্ছদ এবং চলাফেরার পরিবর্তনও তার নজরে পড়েছে, তিনি চোখ রগড়ে তাকিয়েছেন, কিন্তু তিনি এসবের কিছুতেই কখনো আপত্তি জানাননি। তাই বলে সেই ছেলের এতটা অধঃপতনও তাকে নীরবে মেনে নিতে হবে? তার ছেলে হয়ে আসলাম নামবে যাত্রাপালায়! এতটা স্পর্ধা সে পায় কোথায়? পাঁচ মেয়ের পরে একমাত্র ছেলে পাওয়া গেছে বলে এমন লাগামহীন আশকারা দেবে আসলামের মা? একদিন নয়, একাধিক দিন তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ওই ছেলের জন্যে মা-বাপকেও দোজখের আগুনে পুড়ে খাক হতে হবে, হ্যাঁ। সারা জীবনের ইবাদত বন্দেগি সব বরবাদ হয়ে যাবে। আজও এশার নামাজ শেষে মসজিদ থেকে বেরিয়ে মাইক্রোফোনের শব্দ শুনে তিনি চমকে ওঠেন।

বলা যায় বুকের মধ্যে হাতুড়ির পিটুনি টের পান। স্কুল-পাড়ায় মাইক বাজছে সকাল থেকেই। নানান রকম গান বাজছে, খেলাধুলার ধারাভাষ্য শোনা যাচ্ছে, কখনোবা মাইক্রোফোনের ভেতরে সম্মিলিত কোলাহলও ভেসে আসছে; কিন্তু শিশিরভেজা রাতের ইথারে এ কোন্ ঘোষণা? ‘আসলাম, তুমি যেখানেই থাক, অতি সত্বর গ্রিন রুমে এসে দেখা কর। ’ এই একই ঘোষণা বারবার এসে কানের দরজায় করাঘাত করে। ঝনঝন করে কেঁপে ওঠে তাঁর দেহের খাঁচা।

সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না- কী করবেন তিনি! এতবার নিষেধ করেও তাহলে ঠেকানো গেল না ওই অকালকুষ্মাণ্ডকে! রাগে গরগর করতে করতে দ্রুত পায়ে বাড়ি ফিরেই তিনি তম্বি চালান স্ত্রীর উপরে, শুনছ তো, তোমার গুণধর ছেলের নাম ঘোষণা হচ্ছে মাইকে! কী রত্ন যে পেটে ধরেছিলে! ওই শোনো। না, এবারের ঘোষণা খানিকটা পরিবর্তিত। সমস্যা হয়েছে আসলাম নামটা নিয়ে। এ পাড়াতেই আরও এক আসলাম আছে, রহিম বক্স মণ্ডলের বড় ছেলে। দুই আসলামকে পৃথকভাবে শনাক্ত করার জন্যেই হয়তোবা নিরুপায় ঘোষক বলছে-ইমাম সাহেবের পুত্র আসলাম, তুমি যেখানেই।

কানের ভেতর দিয়ে আগুনের হলকা ঢুকে মগজের বিস্তীর্ণ অঞ্চল জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেয়। দাউ দাউ জ্বলে ওঠে চৈতন্যের প্রান্তর। হিতাহিত জ্ঞান এক নিমিষে লুপ্ত হয়ে যায়। সহসা এক ধাক্কায় সামনে দাঁড়িয়ে থাকা স্ত্রীকে উঠোনে ফেলে দিয়ে ইমাম সাহেব হনহন করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। মাত্র কয়েক কদম এগিয়ে যাবার পর আবার ফিরে আসেন বাড়ির মধ্যে।

আসলামের মা তখন উঠোনোর ধূলোয় লুটিয়ে বুক চাপড়ে আহাজারি শুরু করেছে। মায়ের এ মাতম যেন ক্রোধের আগুনে ঘি ঢেলে দেয়। ইমাম সাহেব উবু হয়ে স্ত্রীর চুলের মুঠি ধরে টানতে টানতে ঘোষণা দেন- তোমার ছেলেকে আমি ত্যাজ্যপুত্র করব, হ্যাঁ। কেটে টুকরো টুকরো করে নদীতে ভাসিয়ে দেব। কিন্তু বাস্তবে সে নদী কোথায়? গ্রামের পাশে ছিল বটে ক্ষীণকায়া কাজলা নদী, সে নদীর বুকে এখন ধানের আবাদ হয়; পা ডোবানোর পানি নেই, মানুষ ভাসাবে কেমন করে! তাছাড়া ত্যাজ্যপুত্র ঘোষণার পর তাকে কেটে টুকরো করা কিংবা নদীতে ভাসানোরইবা কী দরকার! এসব যৌক্তিক প্রশ্ন ইমাম সাহেবের অন্তরে আদৌ উদয় হয় কিনা কে জানে! স্ত্রীর উপরে হুমকি ঝাড়ার পর বাড়ি থেকে বেরিয়ে তিনি সোজা চলে আসে স্কুলপাড়ায়।

এসে তার চু ছানাবড়া। বাপরে বাপ! এত মানুষের ভিড়! এ নিশ্চয় শুধু বাঁশতলির মানুষ নয়, আশপাশের আরও পাঁচ গ্রামের মানুষজন শীতরাত্রির বারণ উপেক্ষা করে ছুটে এসে নরক গুলজার করে তুলেছে। ইমাম সাহেব কিছুতেই ভেবে পান না-এখন এই মানব প্রাচাক্ষীর টপকে কিভাবে তার পুত্রের কাছে পৌঁছুবেন! কাছে পৌঁছুতে না পারলে তো তার কান ধরে হিড়হিড় করে টেনে বের করে আনা যাচ্ছে না। ভিড়ের মধ্যে ঠেলাঠেলি করতেও ভীষণ সংকোচ হয়- কেউ যদি তাকে চিনে ফেলে! ইমাম সাহেবকে যাত্রার আসরে দেখে কী ভাববে লোকজন! এরই মাঝে কে একজন জুতোঅলা পা তুলে দেয় তার পায়ে। মুখ দিয়ে একবার কাতরানি বেরিয়ে পড়ে-‘উহ্!’ কিন্তু জুতোঅলা যুবক ভ্রুক্ষেপই করে না।

সে খুঁজছে একটু নিরাপদ জায়গা, যেখানে দাঁড়িয়ে নির্বিঘ্নে মঞ্চের দৃশ্য দেখা সম্ভব। এদিকে যাত্রা শুরু হয়ে গেছে। ছটফট তো করবেই। সিগারেটের ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে সে দিব্যি সরে যায়। ইমাম সাহেবও যন্ত্রণাদগ্ধ পায়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে ফাঁক-ফোকর খোঁজেন।

অবশেষে নিরূপায় হয়ে তিনি খানিকটা পিছিয়ে আসেন। তখন ভাবেন, তেমন পরিচিত কাউকে পেলে তাকে দিয়ে খবর পাঠাবেন-তোর বাপ এসেছে, জন্মদাতা বাপ। বাপের ব্যাটা হলে এক্ষুণি বেরিয়ে আয় যাত্রা প্যাণ্ডেল থেকে। বুকের পাটা থাকে তো সামনে এসে দাঁড়া। আয়, সামনে আয়! কিন্তু কাকে বলবেন এ কথা! কাকে দিয়ে খবর দেবেন? ইতস্তত ছুটাছুটি করছে যেসব লোকজন, এই আলো-আঁধারিতে তাদের কাউকেই বিশেষ চেনা যাচ্ছে না।

ভারী অবাক ব্যাপার তো! এত সব মানুষজনের মধ্যে একটা চেনা মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না? তাহলে এত মানুষ কি ভিন্ গ্রহ থেকে এলো নাকি? আরো কয়েক পা পিছিয়ে এসে কাঁধ উঁচু করতেই তার দৃষ্টি গিয়ে পড়ে মঞ্চের উপরে। কে একজন অসহায় বৃদ্ধ তখন আবেগরুদ্ধ কণ্ঠে সংলাপ উচ্চারণ করছে-‘তুমি আমার সাজানো বাগান এভাবে ভেঙেচুরে তছনছ করে দিয়ো না বউমা। এই সংসারে বড় বউ তুমি। তোমার উপরে কত আশা, কত ভরসা আমার। আর তুমি কিনা শেষ পর্যন্ত।

’ সংলাপ শেষ না হতেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে বৃদ্ধ। বউমা ক্যানকেনে কণ্ঠে কী জবাব দেয়, স্পষ্ট বুঝা যায় না। তবে বৃদ্ধের এক ছেলে, সম্ভবত বড় ছেলেই হবে, বেশ কর্কশ কণ্ঠে উচ্চারণ করে-‘তুমি এভাবে একতরফা বিচার করলে তো চলবে না বাবা!’ বৃদ্ধের কণ্ঠে মর্মরিত হয় সেই হাহাকার, ওরে তুই এ কথা বলতে পারলি মানিক! এত বড় আঘাত ধর্মে সইবে না বাপ! ইমাম সাহেবের বুকের ভেতরে কী যে হয়, মঞ্চ থেকে চোখ সরিয়ে নেন, নিজেকেও আরও খানিক পিছিয়ে নেন। মঞ্চের অভিনেতাদের কাউকেই ঠিক চিনতে পারেন না। ভাবনা হয়- আসলামকে তাহলে শনাক্ত করবেন কী করে? দাড়িগোঁফ, গালে মোটা আঁচিল লাগিয়ে, রং-ঢং মাখিয়ে এক-একজনের যে চেহারা বানিয়েছে, সহজে কি চেনার উপায় আছে? মঞ্চের দিকে তাকাতে না চাইলেও একজনের কণ্ঠ শুনে আবার দৃষ্টি চলে যায় মঞ্চে।

এক যুবক সেই বড় বউকে বলছে, খুব ছোটবেলায় আমি মাকে হারিয়েছি ভাবী। মায়ের আদর কাকে বলে জানি না। ভেবেছিলাম, তোমাকে পেয়ে- ন্যাকামো রাখ তো রতন! খুব হয়েছে। রতন! ইমাম সাহেব এবার চোখ মেলে তাকান- ওই বৃদ্ধের ছোট ছেলের নাম রতন নাকি? কণ্ঠটা কেমন চেনা চেনা মনে হয়। কিন্তু না, ঠোঁটের উপরে গোঁফ, চোখে চশমা; তিনি যা ভেবেছিলেন, তাতো ঠিক মিলছে না।

তবু তিনি চোখ সরিয়ে নেন। ওই অভিনেতারও যদি চোখে চোখ পড়ে যায়, কী কাণ্ড হবে তখন! পিছু হটতে হটতে ইমাম সাহেব এক সময় প্রাইমারি স্কুলের নির্জন বারান্দায় উঠে দাঁড়ান। এখান থেকে মঞ্চের অভিনয় স্পষ্ট দেখা যায় না, পুতুল নাচের দৃশ্য বলে মনে হয়; তবে উন্নত মাইক্রোফোনের কল্যাণে সংলাপ ঠিকই শোনা যায়। নাটকের কাহিনী সেই চিরকেলে মধ্যবিত্ত বা নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের ভাঙ্গনের কাহিনী। বড় বউ বড়লোক বাপের সহায়-সম্পদের অহঙ্কারে দেবর-ননদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে, এমনকি বৃদ্ধ শ্বশুরকে অপমান করতে বাধে না।

মানিক সব দেখেও প্রতিবাদে সাহসী হয় না। বৃদ্ধের আহাজারি কখন অগোচরে ইমাম সাহেবের অন্তরে বেদনার সঞ্চার ঘটায়, নিজের অজান্তে চাদরের খুঁটে চোখের কোণা মোছেন। এভাবেই চলছি বেশ। দজ্জাল মশার কামড়ে এক সময় তার চৈতন্যোদয় ঘটে। নতুন করে তাকে স্মরণ করতে হয়- এখানে তিনি কী করতে এসেছিলেন।

‘নাউজুবিল্লাহ’ পড়তে গিয়ে এবার মাঝপথে তার কণ্ঠ থেমে যায়। দাঁতে জিভ কাটেন তিনি। এতক্ষণে টের পান, তার ক্রোধের বেলুন হাওয়া শূন্য হয়ে চুপসে গেছে অনেক আগেই। শীতার্ত মধ্যরাতে এবার তিনি বাড়ির পথে পা বাড়ান। নাটক প্রায় শেষের পথে।

আসলাম বাড়ি যাবার আগেই তিনি পৌঁছুতে চান এবং আসলাম কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই তিনি লেপের তলে ঢুকে পড়তে চান। আসলাম যেভাবে জন্মাদাতা বাপের চোখ ফাঁকি দেয়, সেইভাবে আজ তিনিও ওর চোখে ধূলো দিতে চান।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।