আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিশ্ব ফিজিওথেরাপি দিবস কাল

আগামীকাল বিশ্ব ফিজিওথেরাপি দিবস। এ বছরের স্লোগান 'ফিট ফর দ্য ফিউচার'। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও পালিত হবে দিবসটি। বিজ্ঞানের সবকটি শাখা উন্নতির ধারাবাহিকতায় থেমে নেই চিকিৎসা বিজ্ঞানও। একসময় মানুষ সুনির্দিষ্ট চিকিৎসার অভাবে মারা যেত, কষ্ট পেত কিংবা পঙ্গু হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করত।

কিন্তু বর্তমান আধুনিক বিশ্বে বিজ্ঞানের অবদানে আজ মানুষ অসম্ভব করেছে সম্ভব, ফিরে পাচ্ছে মুখের হাসি ও চলমান স্বাভাবিক জীবন। চিকিৎসা বিজ্ঞানর যে শাখাটি আবিষ্কারের জন্য আজ মানুষ পঙ্গুত্বকে করেছে জয়, সেসঙ্গে কাটাচ্ছে বাত-ব্যথা মুক্ত সুস্থ স্বাভাবিক জীবন, সেই শাখাটির নাম ফিজিওথেরাপি। ফিজিওথেরাপি একটি ইংরেজি শব্দ। এখানে ফিজিও অর্থ শারীরিক আর থেরাপি অর্থ চিকিৎসা পদ্ধতি অর্থাৎ ফিজিওথেরাপি অর্থ হচ্ছে শারীরিক চিকিৎসা পদ্ধতি।

১৯১৩ সালে নিউজিল্যান্ডের একদল স্বাস্থ্যকর্মী প্রথম তাদের দেশে চিকিৎসাসেবায় প্রথমবারের মতো ফিজিওথেরাপি সেবা দেওয়া শুরু করে।

ঠিক এর পরের বছর ১৯১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র তাদের দেশেও ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা সেবা দেওয়া আরম্ভ করে। এরপর শুরু হয় ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতি কাজে নানা গবেষণা। ১৯২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসক মেরি এমসি মিলান ফিজিক্যাল থেরাপিস্ট অ্যাসোসিয়েশন গঠন করেন এবং ঘোষণা দেন এখন থেকে পঙ্গুদের পুনর্বাসনের জন্য চিকিৎসা বিজ্ঞানের আধুনিক শাখাটির নাম ফিজিওথেরাপি। ১৯২৪ সালে জিওরজিয়া ওয়ার্ম স্পিং ফাউন্ডেশন পোলিও রোগ নিয়ে কাজ শুরু করে, এক পর্যায়ে ফাউন্ডেশনটির অন্যতম কর্মী সিস্টার কিননি পোলিও চিকিৎসায় ফিজিওথেরাপি অন্তর্ভুক্ত করেন। এরপর ফিজিওথেরাপি হয়ে ওঠে পোলিও রোগীর পুনর্বাসন ও চিকিৎসার মূল চিকিৎসা পদ্ধতি।

মোটকথা এটাই ফিজিওথেরাপি চিকিৎসাকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যায়। ১৯৫০ সালে পঙ্গুত্ব ও বাতব্যথা প্যারালাইসিস চিকিৎসায় ফিজিওথেরাপি উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন হাসপাতালে নিউরোলজি, অর্থোপেডিকস ডিপার্টমেন্টের পাশাপাশি স্থান করে নেয়। ১৯৯০ সালে ফ্রেডি কেলর্টেনবর্ন নামের একজন ফিজিওথেরাপিস্ট ম্যানুয়াল থেরাপির বিভিন্ন ধারা ব্যবহার করে রোগীকে সুস্থ করে তোলার মধ্য দিয়ে সারা পৃথিবীতে আলোড়ন সৃষ্টি করে। এভাবেই একটু একটু করে সাফল্য অর্জনের মধ্য দিয়ে ফিজিওথেরাপি বাতব্যথা প্যারালাইসিস ও স্পোর্টস ইনজুরির চিকিৎসাসহ পঙ্গুদের পুনর্বাসনে চিকিৎসা বিজ্ঞানে অন্যতম শাখা হিসেবে স্থান করে নেয়। চিকিৎসা ব্যবস্থায় ফিজিওথেরাপির গুরুত্ব, ফিজিক্যাল থেরাপিষ্টদের ভূমিকা ও অবদান চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট ও সাধারণ মানুষের মাঝে পৌঁছানোর লক্ষ্যে ১৯৫১ সালে থেকে ৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ব ফিজিওথেরাপি দিবস পালিত হচ্ছে।

সক্রিয় জীবনের জন্য মুভমেন্ট অপরিহার্য। No Movement, No life জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত যদি কোনো কারণে মুভমেন্ট জনিত সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে তার ফিজিওথেরাপি লাগবে। এই দীর্ঘ পরিক্রমায় কারা কিভাবে বিজ্ঞান সম্মত ফিজিওথেরাপি সেবা প্রদান করবেন তা জানতে হবে। যেমন জন্মের পর শারীরিক অক্ষমতা এবং মুভমেন্ট জনিত সমস্যা তাত্তি্বক জ্ঞান প্রয়োগ করে পর্যালোচনামূলক বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে সমস্যা ও সমস্যার কারণ নির্ধারণ পূর্বক বিজ্ঞান সম্মত ফিজিওথেরাপি নির্ধারিত হয়। এ বিষয়গুলো যিনি নির্ধারণ কিংবা প্রয়োগ করবেন তাকে নিশ্চয় মুভমেন্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হতে হবে।

যদি তা না হয়, সর্বনাশ অনিবার্য। হতে পারে হিতে বিপরীত। সুতরাং একজন ফিজিওই পারেন এভিডেন্স বেইজড ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা দিতে।

ডা. মো. সফিউল্যাহ্ প্রধান, ভাইস প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশ ফিজিওথেরাপি এসোসিয়েশন, চেয়ারম্যান

ডিপিআরসি, ঢাকা। ফোন : ০১৭১৬৩০৬৯১৩

 

 



সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.