আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গুড়ো দুধে মেলামাইন এবং অতঃপর

আ মা র আ মি

গুড়োদুধে মেলামাইন নিয়ে অনেক কিছুই দেখলাম। দেশের ৮ টি ব্রান্ডের গুড়াদুধে মেলামাইনের অস্তিত্ব পাওয়া, ঐ ব্রান্ডগুলোর পক্ষ থেকে প্রতিবাদ, ঢাবির রসায়ন বিভাগের চ্যালেঞ্জ, বিএসটিআই-এর সিদ্ধান্তহীনতা, বিদেশে পরীক্ষার জন্য নমুনা পাঠানো, পরীক্ষার ফলাফল আসতে দেরি হওয়া, অভিভাবকদের উৎকন্ঠা, আর সবকিছু দেখেও সরকারের না দেখার ভান করা। অবশেষে একটা সমাধান পাওয়া গেল আদালতে। আদালত ঐ ৮ টি ব্রান্ডের গুড়োদুধ বাজার থেকে সরিয়ে ফেলতে আদেশ দিয়েছে। এর মাঝে একদিন এ সম্পর্কে খাদ্য সচিবের সাক্ষাতকার শুনলাম কোন চ্যানেলের কোন এক খবরে।

সেখানে সে মাথানত ভাবেই স্বীকার করলেন আমাদের বিএসটিআই এর পরীক্ষার জন্য খুব একটা উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় না। সাথে সাথে সে আরও একটা কথা বলেছিলো, তা হলো, এ মুহুর্তে যদি সব গুড়োদুধ নিষিদ্ধ করে দেয়া হয়, তাহলে দেশে দুধের সংকট দেখা দেবে। কেননা গুড়ো দুধের বিকল্প হিসাবে গরুর তরল দুধের যোগান দেশে বেশী নেই। তাই সবকিছুই একটু বুঝে শুনে করতে হবে। এবং অতপর আদালত অবমাননার দায় এড়াতেই সরকার বোধহয় বাজারে পুলিশ পাঠিয়ে মেলামাইনযুক্ত ঐ ৮টি ব্রান্ডের গুড়োদুধ উঠিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে।

এবং যে সকল দোকালে এ দুধ পাওয়া যাচ্ছে তাদের ১৬ থেকে ২২ হাজার টাকা করে জরিমানা করছে। আমার প্রশ্ন হলো, খুচরা দোকানদাররা যারা এ দুধ বিক্রির কারনে এখন জরিমানা দিচ্ছেন তারা কি এ দুধ পরীক্ষা করে বিক্রির জন্য দায়বদ্ধ। আমার মনেহয় না। এ দায়িত্ব মূলত বিএসটিআই -এর। আর ব্রান্ডগুলো যেহেতু সনামধন্য, এ সকল দুধ নিশ্চয়ই বিএসটিআই-এর কাছ থেকে ছাড়পত্র পেয়েই তা বাজারজাত করেছে।

খুচরা দোকানদাররা এ দুধ পাইকারী দরে কিনে নেয়। তবে সরকারের বা বিএসটিআআই-এর ভুলের কারনে যে দুধ নিষিদ্ধ হলো তার জন্য ঐ খুচরা দোকানদার কেন সে দুধ ফেলে দেবে বা বিক্রির জন্য জরিমানা দিবে? এ দুধ কিনতে ঐ খুচরা বিক্রেতাকে তো টাকা খরচ করতে হয়েছে, সে তো চাইবেই দুধ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়ার। তাই বলে আমিও চাই না, এ দুধ বাজারে আসুক। এ দুধ বাজার থেকে তুলে নেয়ার জন্য সরকারের উচিত ছিলো বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সকল দোকানদারদের জানিয়ে দেয়া যেন তারা এ দুধ বাজারে বিক্রি না করে। পাইকারি দরে সরকারের উচিত ছিলো এ দুধ গুলো কিনে নিয়ে খুচরা দোকানদারদের টাকা দিয়ে দেয়া।

আর আমদানীকৃত কোম্পানীগুলো যদি এ দুধ বাজারে আনার আগে বিএসটিআই-এর ছাড়পত্র না নিয়ে থাকে , তবে তাদের এ দুধের দাম দিতে বাধ্য করা। আমি নিশ্চিত দোকানদাররাও এ আহ্বানে পুরাপুরি সাড়া দিতো। কিন্তু তা না হওয়ার ফলে বাজারে এসব দুধ বিক্রি চলবেই। পুলিশ দেখলে হয়তবা কিছুক্ষনের জন্য ওগিলো সরিয়ে রাখবে আবার চলে গেলে সেই আগের মতই বিক্রি চলতেই থাকবে। একটা দেশের ভবিষ্যৎ সে দেশের সন্তানরা।

কোন ভুলের কারনে তাদের কোন ক্ষতি হোক এটা কেউই চাইবে না। যদি কোন ভুল হয়েও থাকে, যত টাকাই লাগুক, তা খরচ করে হলেও সে ভুল সংশধন করে তাদের রক্ষা করা উচিত।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.