আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভার্স্কয ভাঙার অপচেষ্টা কোনো ধর্মীয় মূল্যবোধের পরিচায়ক নয়, বরং র্ধমহীন পাশবিকতার উদাহরণ



[আমার শিক্ষার্থীদের এই বক্তব্য আমাদের র‌্যালি শেষে সবার উদ্দশ্যে পাঠ করা হয় ২০শে অক্টোবর] লোকালয়, লৌকিকতা ও যাপিত জীবনের ত্রিমুখী সমন্বয় সম্ভবত তৈরি করে সংস্কৃতি। যে কারণেই পৃথিবীতে মানুষের সাংস্কৃতিক পরচিয় ও পরির্চযা এক নয় । সংস্কৃতি দর্পণের মতোই ফলিত ও প্রতিফলিত করে ভিন্ন ভিন্ন জীবনধারাকে। তাই ভিন্ন ভিন্ন জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি ভিন্ন ভিন্ন। যেমন বাঙালীর সংস্কৃতি কখোনোই মেলেনা গেলিক, ইউরোপীয়, আফ্রিকান বা আরবীয় সংস্কৃতির সঙ্গে।

এখানেই সংস্কৃতি বিভিন্ন হয় । হয়ে ওঠে নিজ ও অপর সংস্কতি। আর নিজ সংস্কৃতি অনন্য ও মহৎ এবং অপর সংস্কৃতি নীচ ও অ-মহান তা কখোনোই গ্রহণযোগ্য বক্তব্য নয়। আর এই অগ্রহণযোগ্য বক্তব্যকেই গ্রহণীয় করার এক অপচেষ্টা চলছে সমগ্র পৃথিবীব্যাপী, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রূপে। সেরকমই এক অপচেষ্টা দেখা গেল ১৬ই অক্টোবরের দেশজ সংস্কৃতির ৫টা ভার্স্কয ভাঙার ঘটনায়।

অপর সংস্কৃতির প্রতি যথার্পূবক সম্মান বজায় রেখেই বলা যায় যে, এক সংস্কৃতি যখন অযৌক্তিক, অন্যায় ও রাজনৈতিক কারণে অন্য সংস্কৃতি গ্রাস করতে চায় তখন সেই অপর সংস্কৃতি হয়ে ওঠে অপ-সংস্কৃতি। সেই অপসংস্কৃতিরই এক অমানবীয় নির্দশন ১৬ই অক্টোবরের এই জঘন্য ঘটনা। একথা অনস্বীর্কার্য যে, বাউল সভ্যতা ও দর্শন বাঙালি সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। সেই অবিচ্ছেদ্য অংশের ওপর আঘাত মানে গোটা বাঙালি সংস্কৃতি ও চেতনার ওপর এক নিদারুন ও নির্মম আঘাত। যেহেতু সংস্কৃতিটি বাঙালির, তাই তা রক্ষার দায়িত্বও বাঙালির।

সংস্কৃতির লেশমাত্র বহন করা প্রত্যেক মানুষের ঘাড়েই বর্তায় সেই অতিজরুরি দায়িত্ব। আমরা মর্মাহত হই, সেই অতিজরুরি দায়িত্বের অবহেলা দেখে। আবার অপরদিকে, আনন্দিত হই সচেতন মানুষের দায়িত্ববোধ দেখে। র্ধম বা আধ্যাত্মিকতা মানুষের সহজাত বিশিষ্টতা। সেই বিশিষ্টতা আছে বলেই মানুষকে আমরা মহৎ-সম্ভব প্রাণী বলে মনে করি।

বস্তুত, র্ধম মানব মনের এক মহোত্তম প্রকাশ। এবং সে প্রকাশ কোনোভাবেই কলুষিত নয়, অথবা হওয়া উচিত নয়। আর কেউ মানুক চায় না মানুক, অসাম্প্রদায়িক ভাতৃত্ববোধ মানুষের এক মহোত্তম গুন। ১৬ই অক্টোবরের ঘটনাটি ঠিক তার বিপরীতে দাঁড়িয়ে। নিঃসন্দেহেই বলা যায় যে, ঘটনাটা র্ধম বা আধ্যাত্নিক চেতনার পরিচয় বহন করে না।

ঘটনাটা এক বিকৃত র্ধম ও সংস্কৃতি চর্চার পরিচয় বহন করে। অতি ভয়ানক সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে আমরা মাঝে মাঝে যে ভুল পশ্চাদপদতাকে মুক্তির উপায় মনে করি ১৬ই অক্টোবরের ঘটনা সেই ধরনের ভুল পশ্চাদপদতার উদাহরণ। আর এই ভুল আরো শক্তিশালী করে সাম্রাজ্যবাদকে। র্ধম চেতনা মানেই মুক্তিমুখীন চেতনা। প্রত্যেক ধর্মে এই মুক্তিমুখীনতা মূখ্য।

আর সংস্কৃতিও মানুষের মুক্তির্চচা। র্ধম আর সংস্কৃতি বিরোধাত্মক নয় বরং সম্পূরক, বস্তুত, সর্মাথক। সেই কারণেই র্ধমীয় মূল্যবোধ মানুষকে শাক্তি দেয় মুক্তিমুখীনতা ও মুক্তচর্চায়। ১৬ই অক্টোবরের ভার্স্কয ভাঙার অপচেষ্টা কোনো র্ধমীয় মূল্যবোধের পরিচায়ক নয়, বরং র্ধমহীন পাশবিকতার উদাহরণ। ঘটনা



এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।